টাকাটা আনন্দ দিয়ে দেয় মাখন ও নিশি কে । মাখন ও নিশি টাকাটা পেয়ে জাম্বো কে ছাড়তে অস্বীকার করে । তারা জাম্বো কে নিয়ে চলে যায় গাড়ি করে । তারা গিয়ে পৌঁছায় এক জায়গায় । দেখে বেশ একটা ট্রাক ডিপো লাগলো । মাখন ও নিশি জাম্বো কে তুলে দেয় এক ট্রাক এ এবং বন্ধ করে দেয় । জাম্বো কে বলা হয় সে মুম্বাই যাচ্ছে ওই ট্রাক এ । তবে ট্রাক তা সত্যি মুম্বাই যাছছিল । কিন্তু জাম্বো কে বলিউড এর দরজায় ছাড়া জন্যে নয় , ওকে এক দুনিয়া ছেড়ে দিতে । মাখন আর নিশি র তার পর আর খোঁজ পাওয়া যায় না। আনন্দ এবার পুলিশ এর কাছে যায় । পুলিশ সাহায্য করার জন্যে প্রস্তুত । কিন্তু বহু চেষ্টা করেও জাম্বো কে তারা পেলো না।
এর মধ্যে জাম্বো ওই ট্রাক এর অন্ধকারে , ক্ষুধার্ত , তৃষ্ণার্ত অবস্থায় বসে থাকে , কেবল একটা স্বপ্ন নিয়ে সে এল হিরো হবে। তার সাথে যে কত বোরো বিশসাস ঘাতকতা হয়েছে তা সে জানত না।কয়েক দিন পর সে পৌঁছায় মুম্বাই । মুম্বাই শহর তাকে খুব ভালো ভাবে স্বাগত জানালো না।যে চেহারা ও দেখলো তা তে ও যে ঠিক জায়গায় এসেছে সেটা ও ভুলে গেল । কিন্তু জাম্বো হার মানলো না । সে তও কষ্ট করে গেল । খিদে তা কে আটকাতে পারলো না । সে ওই মুহূর্ত থেকে জানত তার সাথে ঠিক হয়নি । তার সাথে বিশসাস ঘাতকতা হয়েছে । সে লেগে পরে । ওই ট্রাক ডিপো তে কাজ পে এক দিন এর জন্য । সারাদিন ট্রাক থেকে মাল নামানোর কাজ করে । দিনের শেষে হাতে পে কেবল তিরিশ টাকা । সেই টাকা দিয়ে মুম্বাই শহরে কিছু নেই । একটা পাউরুটি কিনে খেতে হলো ওই দিন । অচেনা শহর , থাকার জায়গা নেই , একটা বাস স্টপ এ তা কে শুতে হয় রাতে । ওর মাথায় তখন কেবল বলিউড এ পৌঁছনোর ইচ্ছে । ও তবে ভিক্ষে করে যেতে চায়নি । ও নিজের দম এ যাবে ঠিক করেছিল । ওই ট্রাক ডিপো সে ছেড়ে দে সেই দিন । হাতে ছিল দশ টাকা , রাস্তা ঘাট অচেনা ,কিন্তু লক্ষ্য একটাই । সে চলে গেল রাস্তা দিয়ে । কত লোক রাস্তায় কিন্তু কাউকে ভরসা করে সাহাজ্য চাইতে পারলো না । ভরসা ভেঙে দেয়ার পর তা সম্ভব নয় । হেটে হেটে এক রেল স্টেশন এ পৌঁছায় । সেখানে সে কুলির কাজ করে । দিন রাত খেতেও কেবল যায় হয় পঞ্চাশ টাকা । তাতেই ও খুশি । বেরিয়ে গিয়ে কিছু কিনে নিজের খিদা3 মেটাতে পারলো ।
এই ভাবেই এক জায়গা থেকে আরেক জায়গা সে চলে গেল । কারোর উপর বিশসাস করলো না । এমন নিজের বাবাকে ভরসা করে সে বসে থাকলো না । আস্তে আস্তে দিন কাটলো । এখন সে 14বছরের । শরীরের অবস্থা পুরো পাল্টে গেছে । জাম্বো কে দেখে কেউ চিনতে পারবে না । সে এখন এক বস্তি তে থাকে । সকালে কাগজ দেয় আর রাত এ রুটির দোকানে রুটি বেলে। মা বাবা যে তার কোনোদিন ছিল সে ভুলে গেছে । তার নাম এখন আর জাম্বো নয় । সে এখন ছোটু। ওই বস্তি তে ওকে এক ভদ্র লোক বাড়ি ঠিক করে দেয়।
জাম্বো র মন থেকে এখন হিরো হওয়ার স্বপ্ন মুছে গেছে । ওর জন্যে এখন বেঁচে থাকাটা সব চেয়ে পয়োজনীও । তবে ওই স্বপ্ন ওর পিছন ছাড়েনি। হঠাৎ একদিন ওর বন্ধু এসে ওকে জানায় যে একটা নাকি বিশাল বড় পরিচালক ওদের ঐখানে চাইল্ড আক্তার খুঁজছে।জাম্বো প্রথমে রাজি হয় না কিন্তু পরে ও যায় । পরিচালক ওর মধ্যে খুঁজে পায় সেই গুন যা ওনার দরকার । জাম্বো হয়ে যায় প্রবেশ ফিল্ম এর দুনিয়া তে । ওই ছিল তার জীবনের প্রধান মুহূর্ত । ওই যে ও ধুকল মুভি র দুনিয়া তে । ওকে কেউ আটকাতে পারলো না ।
আজ জাম্বো এক মস্ত আক্তার । তার আবার তার মা বাবার সঙ্গে মিলন হয়ে গেছে । তারা আজ সুখে শান্তি তে জীবন কাটাচ্ছে । হয়তো নিশি আর মাখন ও কোনোভাবে যুক্ত আছে এই সফলতার পিছনে । হয়তো আজ তারা এই রকম না করলে জাম্বো হয়তো এই খানে পৌঁছত না

Print Friendly, PDF & Email
Previous articleআজকের ভারতবর্ষ
Next articleপ্রত্যাশা
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments