আমি হয়তো গান ভুলে গেছি
বর্ষার গান ছিল সেটা।
গত বসন্তে এক কোকিল অর্ধেকটা ডেকেই থেমে গেছিল
আমি সেই সুরটুকুও ভুলে গেছি।
আমি জোনাই ভুলেছি ল্যাম্পপোস্টের নীচে,
ভুলেছি ঝি-ঝি’র ডাক;
দুৱাৰ ডগায় ভোরের শিশির।
পুব আকাশে হলুদ একটা চাঁদ উঠতো;
আমি তাকেও হারিয়েছি ইটের ভীড়ে।
ছোট বেলায় আমাদের বাড়ির পূবদিকে সুপুরি নারকেল গাছে
কতগুলো চুড়ুই পাখির বাসা দেখেছিলাম।
বিশ্বাস করো,
অমন শান্তির নীর আমি আর কোত্থাও দেখিনি।
আমি সরলতা হারিয়েছি,
যেটা মায়ের বলা চাঁদবুড়ির গল্পে ছিল,
কিম্বা গায়ের ওই ছোট্ট নদীর কোমলতায়।
আমি অনেক ঘাট বাধানো নদী দেখিছি
দেখেছি কতজনকে পুন্যের আশায় ডুব দিতে,
আমার কিন্তু ইচ্ছেও হয় নি; উল্টে ভয় লেগেছে–যদি পড়ে যাই ।
অথচ আমার সেই ছোট্ট নদী
— ভরা বর্ষায় কতো ঢেউ তার লুফে নিয়েছি বুকে ।
আমি সে নদীর স্বচ্ছ জল হারিয়েছি;
হারিয়েছি এক অনাবিল ছন্দ,
যে ছন্দে সবুজ ধানের শিষ দোলে।
আমি হয়ত গান ভুলেছি;
হেমন্তের দখিনা হাওয়ার আগমনী গান ছিল সেটা।