জানিস, কাল রাতে তোকে আবার স্বপ্ন – এ দেখলাম- বাইরে থেকে না তুই একটুও বদলে যাসনি । সেই গোধূলি লগ্ণের আলোতে তোকে যেমন শেষবার সামনা-সামনি দেখেছিলাম, অবিকল সেই একরকম আছিস তুই ।
স্বপ্ন -এর মানুষদের বোধহয় সত্তি-ই কোনোদিনও বয়স বাড়েনা ।
বহুদিন পর সেই অনুভূতিগুলো আবার ফিরে এলো । ঘুমের মধ্যেই বুকের ভেতরটা তোলপাড় করে উঠলো- ঠিক যেমন সেদিন করতো তোকে দেখে; একটা প্রবল ঢেউ এসে বারবার হৃদ্স্পন্দে আঘাত করতে লাগলো- মনে হলো এই বুঝি নিঃশ্বাসটা বন্ধ হযে যাবে; শিথীল হয়ে এলো হাত-পা-শরীর; গলার কাছে এসে না-বলা কথাগুলো দলা পাকিয়ে রইলো; আর চোখদুটো নিঃস্পলোকে তাকিয়ে রইলো তোর দিকে সেই এক আশা নিয়ে- হয়তো তুই অবশেষে তাদের ভাষাটা পড়ে উঠবি । বড়ো চেনা এই অনুভূতি – শিউরে উঠলাম ঘুমের মধ্যেই ।
আর তুই? এক মুহুর্তে তুই বুঝিয়ে দিলি, চেনা মুখের আড়ালে তুই আজ অনেক অচেনা আমার কাছে । চোখ তুলে তাকালিনা- শুধু মুখ নীচু করে দাঁড়িয়ে রইলি চুপচাপ । বোধহয় পারিসনি তাকাতে- তোর শরীরের ভাষা বলে দিচ্ছিলো তোর যন্ত্রনার কথা ।
জানিস ,আমি না ওই চোখদুটো আর একবার পড়তে চেয়েছিলাম । জানতে চেয়েছিলাম কী লুকোচ্ছে ওরা- ভালোবাসা, অভিমান, রাগ, লজ্জা নাকি শুধুই যন্ত্রণা?
পারলাম না- ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো । দেখি পাঁচটা বাজে ।
স্বপ্ন আর দুঃস্বপ্নের মানুষটা কোথায় জেনো মিলেমিশে এক হয়ে গেলো ।
অনেক কাঁদলাম জানিস- কিন্তু আজ-ও কেউ সেটা শুনতে এলোনা । শুধু ভোরের প্রথম নরম আলোটা রয়ে গেলো তার স্বাক্ষী ।
পুনঃশ্চ : একটা কথা ভুলে গেলাম বলতে ।
ভয় নেই, কোনো প্রশ্ন করছি না । জীবনে বোধহয় কিছু উত্তর না-পাওয়াই ভালো ।
অভিযোগ-ও নেই । কিছু স্মৃতির ভারে আজ দুজনেই ক্লান্ত – তাই কার ভার কতটুকু বেশি, সেই চুলচেরা হিসেব কোষে লাভ নেই ।
অভিমান ? নাহ… সেই দাবী-ও নেই আজ ।
তাও বলছি- জানিস আজ ঘুম আসছে না পাছে আবার তুই স্বপ্নে ধরা দিস সেই ভয়েতে ।
তাই এরকম না-বলে আর স্বপ্নে আসিস না প্লীজ় । স্বপ্ন ভাঙ্গার যে বড়ো যন্ত্রণা । তুই-ও বোধহয় আজ জানিস সেটা- তাই না ?
কোনোদিন তো কিছু চাইনি তোর কাছে, আজ না হয় একটা অনুরোধ-ই করলাম । রাখবি তো ? বল না ।