মনের গভীরে রত্ত যন্তনায় ছটফট করছে সুভমিতা, না কোনোদিনও সে চায়নি নিজের জীবন মসৃন পথে চলুক কিন্ত বহুবার সে নিজের বিবেক যন্তনায় ছটফট করেছে তবু সে কিছুতেই মনে করতে পারছেনা শেষ কবে তার আজকের মতো গভীর মনের অন্তরালে এততা ব্যথা অনুভব করেছে।
লেডিস হোস্টেল এ এমনি তেই সব মেয়েরা একটু বেশি রাত করে ঘুমাতে যেতে, কেউ বা বই পড়ে, কেউ বা পরের দিনের অফিসের প্রজেক্ট রিপোট নিয়ে ব্যস্ত অথবা কোনও বন্ধুর সাথে ফোনে ব্যস্ত, তবু আস্তে আস্তে সবাই-কেই ঘুমিয়ে পড়তে হয় সারাদিনের কান্তির তো ওই একটাই ঠীকানা ঘুম।সুভমিতার কিন্ত কিছুতেই ঘুম আসছিলনা, এমনিতেই কলকাতায় অমাবস্যার রাত আর তিন তলার জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়েও শুধুমাএ দেখা যায় ঘন কালো অন্ধকারের মাঝরাতে ত্রিফলা রাস্তার বুক চিরে হালকা লাইফ পোস্ট এর আলো তাও খুব হালকা।সুভমিতা সেইদিকে তাকিয়ে আজকের সকাল থেকে সন্ধ্যের মধ্যে এ অবধি যা ঘটলো সেই পুরো ব্যাপার তা যেন একবার গুছিয়ে নিতে থাকল।
কিছু আলাদা বিশেষ দিনের মতো শুরু কিন্ত হয়নি দিনটা, সেই সকাল ৮-টার মধ্যে যাদবপুর-সালতলাকে-এর বাসে ছুটে গিয়ে উঠে পরতে হয়, এই কদিনের প্রতিদিনের যাতায়াতে কিছু কিছু বাসের কনডক্টর-রাও মুখ চেনা হয়েই যায়, তাই ভিড় বাসে টুক করে উঠে পরাও আজকাল অনেক সহজ হয়ে গেছে, তারাও একটু সুবিধা করে দেয়।
বাসে উঠেই খুব কষ্ট করে ড্রাইভার-এর বাদিকের জানালার সামনে সিট-টায় বসবে ঠিক করেছিল সুভমিতা কিন্ত যথারিতি সব সিট ফুল, একদল মহিলা ইতিমধ্যেয়ে জায়গা নিয়ে রেখেছে, অগত্যা দাঁড়ীয়ে যেতে হবে মনে হচ্ছে। অনেক –টা পথ যেতে হবে, মোটামুটি সকার ৯.৩০ –এর মধ্যে প্রতিদিনের মতো বাসটা সল্টলেক –এর কলেজ- মোড়ে গিয়ে থামবে আর সুভমিতা প্রতিটিদিনের মতো নিজের রাস্তা ধরে সোজা গদ্রেজ ওয়াতারের ৫ তলার করপররেত অফিসে সন্ধ্যে ৬-টা অব্দি ব্যস্ত পুরোপুরি। হ্যাঁ মাঝখানে ১.৩০ থেকে ২.০০ অব্দি গ্যাপ থাকে কিন্ত যতই হোক পাইভেট অফিস তো এক্কেবারে যা স্যালারি দেবে তার ১০০গুন উসুল করে নেবে, আর সে তো কাজ করে ব্যাক অফিস-এ, সে স্রমুদের প্রচণ্ড ডেউ-এর মধ্যে এ যেন ছোট নোউকার পাড়ি।
বাসটা রুবি পায় ছাড়িয়ে গেছে কিন্ত আজ বাসে ভিড় প্রচন্ড হয়তো আজকে সোমবার সপ্তাহ-এর প্রথমদিন বলে চাপ গ্রহন করার ভিড় Weekend শেষে।
সলিল চোধুরি নামকরা ব্যারিস্টার বলে সুখ্যাতি আছে, চেয়েছিল মেয়েও law নিয়েই পড়বে কিন্ত যে মেয়ে সেই ছোট্ট বেলায় মা-কে চিরতরের মতো হারিয়েছে তাকে বেশী বাবার আদর দিলে যা হবার তাই হয়েছে এখন মেয়ে যা বলে তাই বাবা শোনে| তাই যখন গ্যাজুয়েট হবার পর মেয়ে সুভমিতা বলল ফরাক্কা ছেড়ে সে কলকাতার লেডিস হোস্টেল এ থাকবে এবং বাসে যাতায়াত করবে, সল্টলেক –এ প্রাইভেট কম্পানি –এর Back-Office Job নিয়ে নিয়েছে, তখন কিন্ত মিঃ চোধুরি বুকের ভেতরটা ব্যথা একটু হলেও টনটন করছিল|
যতই হোক মা-হারা মেয়ে যত্টা সম্ভব চেয়েছে আধুনিক রিতী-নিতি মেনে চলাতে তাই সে নিজের পায়ে আজ সাবল্মবি হতে চেয়েছে, মিঃ চোধুরি তখন তাই বাধা দেননি, এমনকি এও বলেছেন যে কোনও ছেলে বন্ধুকে যদি পছন্দ হয় তবে যেন সবার আগে তাকে নিদিদ্ধায় জানায়, বাবার তাতে কোন আপত্তি থাকবেনা।
হঠৎ করে নিজের পিঠের মধ্যে একটা কনুইয়ের গুঁতো অনুভব করল সুভমিতা চলন্ত বাসের মধ্যে, এরকম তো কতবারই হয় কিন্ত আর বার-দুয়েক গুঁতো খাওয়ার পর সুভমিতা-কে কিন্ত পিছন ফিরে তাকাতেই হলও, আর সে দেখল একজন শ্রুভ্র ভদ্রলোক গলায় অফিস-টাই পড়ে ক্রমাগত তাকে পিঠে কনুই এর গুঁতো মেরে যাচ্ছে, সুভমিতা তাকাতেই ছেলেটি যেন চোখের ঈশারায় তাকে কিছু বোঝাতে চাইল কিন্ত সুভমিতা একদম পাত্তা দিলনা।
বাসটা সল্টলেক চিৎড়িঘাটা মোড়ে এসেছে বোধহয় হঠাৎ প্রবল চিঁৎকার শুনে সুভমিতার ষষ্ঠ ঈন্দিয় জেগে ওঠে পিছন ফিরে দেখে সেই ছেলেটার ডান হাত তার কাধে ঝোলানো ব্যাগের ভিতরে, সঙ্গে সঙ্গে সুভমিতার এক থাপ্পড় আর তারপর ইতিহাস, বাস ভর্তি লোকের কিল-ঠাপ্পর-এর বন্যা ছেলেটার প্রতি, ছেলেটা তবু ভিড়ের মধ্যে কিছু যেন বলতে গেল, কিন্ত না সুভমিতার পাশে থাকা এক মহিলার জোরালো থাপ্পড়ে ব্যাটা কুপোকাত। তবু সুভমিতা বাসের লোকজন কে বৃথা বোঝাতে চেশ্তা করছিল যে মারবেন না, কিন্ত কেউও শোনেনি, বাসটাও চিৎড়িঘাটা স্টপেজ-এ এসে দাড়িয়ে গেছে, অগত্যা সুভমিতা সোজা বাস থেকে নেমে অটো-তে উঠে পড়ল আর বলল –“ হ্যাঁ কলেজ মোড়ে চলুন”।
এটা-কি ঠিক পালানো হলও নাকি একদিন অফিস-এ দেরি হলে মাস-মাইনে কাটা যাবার ভয়, নাকি বাসের ছেলেটার কি হোলও সেটা ভেবে আজ রাতের এই ঘুম না আসার অবিশান্ত চিন্তাধারার ফল, না কিছুতেই যেন বুঝে উঠতে পারছিলনা সুভমিতা, অযথা কেন একজন ফালতু পকেট মারের কথা ভেবে রাত জেগে কাটাছছে , কিছুতেই যেন পকেট মার আর ছেলেটার সমীকরন মিলাতে পারছেনা।সেই রাতেই নিজেকে প্রতিজ্জা বদ্ধ করল সুভমিতা চোধুরি, কালকে যে করেই হোক তাকে জানতে হবে ছেলেটি আদেও বেচে আছে কিনা, নাকি ছেলেটার এই অমানুষ –এর মতো মৃতৃর জন্য সুভমিতাই দায়ী।
পরের দিন সকালে অগত্যা সুভমিতা আগের দিন যেখানে বাস থেমেছিল গণ্ডগোলের সময় সেই চিড়িৎঘাটার মোড়ে নেমে পড়ল। সে দেখল আগের দিনের বাসের তার সামনের সিটে বসে থাকা মহিলা যার এক থাপ্পড়ে ছেলেটা প্রায় কুপাকাত সেও নামল তার পিছু পিছু। সুভমিতাকে অবাক করে দিয়ে সেই প্রথমে বলল “নমস্কার!আমি প্রতিমা রায়, আমি পাশেই এয়ারপোর্ট ১ নৎ অঞ্ছলে কাজ করি”।
“হা! নমস্কার আরে আপনিও তো ছিলেন আগের দিন বাসে ঘটনা আর সময়”- সুভমিতা বলল।
“ছিলাম কিন্ত আপনাকে দেখলাম নেমে সোজা অটো করে চলে গেলেন, আপনার সঙ্গে আমিও বাস থেকে নামি’’।
হ্যাঁ আসলে অফিসে দেরি হবার ভয়ে আর কোনদিকে না চিন্তা করে সোজা অটোতে উঠে পড়ি কিন্ত পরে অফিসে-থেকে ফিরে বিবেক দৎশস্ন শুরু হয় তাই ঠিক করলাম আজকে পকেট মার ছেলেটার ব্যাপারে একটু খোজ নিলে বোধহয়ই মানবিকতার বিচারে ভালো হয়, তবে আপনার কি-মত?-“সুভমিতা বলল অত্যন্ত গম্ভীর ভাবে।”
প্রতিমা বলল-“আমার ও একমত, তবে চলুন পাশের অটো স্ট্যান্ডে জিজ্জেস করা যাক যদি সামনা সামনি কোথায় যেতে হয় তবে না হয় আমিও আপনার সাথে যাব, আসলে আমিও তো কালকে এক হাত চালেয়েছি, বুঝতেই তো পারছেন।”
যথারীতি প্রতিমা ও সুভমিতা অটো টান্ডের থেকে জানতে পারে ছেলেটি প্রচুর মার খাওয়ার পর তারাই ভিড় থেকে বাচিয়ে তাকে এয়ারপোর্ট – এর কাছে চান্যক হসপিটাল – এ ভর্তি করিয়ে দেয়, ওখানে 3rd floor-BD Block-Bed no-27 খোঁজ নিয়ে দেখা যেতে পারে। Visiting time 12-1pm.একবার নিজের হাতঘড়ি দেখে নিল সুভমিতা এখন গেলে অবশ্যই হয়ত দেখা করা যেতে পারে।
ছেলেটির প্রায় সারা গায়ে ব্যান্ডেজ, চোখ বন্দ করে রয়েছে, প্রতিমাও ছেলেটিকে দেখছে, সুভমিতাও।
সুভমিতার দুচোখ হঠাৎ কষ্টে ছলছল করে উঠল, একি ভাবে তার মা কেও সে অনেকদিন আগে শান্তভাবে হসপিটালের বেড –এ শুয়ে থাকতে দেখে ছিল, বেড –এর পাশের চেয়ার টেনে নিল সুভমিতা।ছেলেটির একটা হাত সে নিজের হাতে নিল এবং বলল “ I am really sorry for everything, আমি জানি তুমি কিছুতেই পকেট মার হতে পারনা, আর কেউ না জানুক আমি তো জানি এই মাসের শেষে আমার ব্যাগে আর কত টাকাই বা থাকে যে পকেট মার করবে তুমি, তবে কিসের জন্যে হোলও তোমার এই এতবরো ভুল সেটা জানার জন্যই আজ আমার তোমার কাছে আসা।”
ছেলেটি আস্তে আস্তে নিজের চোখ খুলল আর বলল “আপনার ব্যাগ ঠিক আছে তো”।
নিজের শরীরের কথা আগে ভাবুন, ব্যাগে আমার এমন কিছু সরকারি তহবিল নেই যে খালি ব্যাগ ব্যাগ করছেন।তাও যদি দেখতে চান এই নিন আমার ব্যাগ। কিহলো আমার ব্যাগ টা কোথাই গেলো? প্রতিমা-কেও তো দেখছিনা?
ছেলেটি বলল-“আপনার জন্য কম ঝক্কি গেলোনা আমার, কিন্ত একেবারে যে আমাকে দেখতে চলে আসবেন সত্যি এততা আশা করিনি”
আপনি কি পকেট মার, আপনার কি দলবল আছে? দেখুন না এখানেই আমার ব্যাগ-টা ছিল এখন দেখছি নেই, প্রতিমা-কেও দেখছিনা।
এইত এক্ষুনি বললেন আমাকে দেখে পকেট মার লাগে না আবার বলছেন পকেট মার দলবল ঠিক বুঝতে পারছিনা মাদাম!
ও তাহলে চোখ বন্দ করে সবই শুনেছেন দেখছি।
শুধু শুনিনি আমি চোখ বন্দ করে সব দেখতেও পাই মাদাম।
মানে আসুস্থ শরীর-এ ইয়াক্কি মারছেন নাকি একজন অচেনা মেয়ে আপনাকে দেখতে এসেছে বলে কবিত্ব বের হছেছ। যাই হোক ভাল হয়ে উঠুন আমি আসছি পারলে কালকে আবার আসব। আর আমার নাম মাদাম নয় আমি সুভমিতা আর আপনার?
আরে দাড়ান উঠে পড়ছেন যে, পিছন ফিরে দেখুন আপনার প্রতিমা-দেবীর যে আবার আগমন হয়েছে এবং তিনি আর একা নন।
পিছন ফিরে তো সুভমিতা অবাক।
৩ জন পুলিশ হাতে তার ব্যাগ এবং প্রতিমার হাতে সরকারি চুরি মানে হাতে হাতকড়ি আর প্রতিমা রেগে তাকিয়ে আছে পকেট মার ছেলেটির দিকে।
ছেলেটি বেড –এ উঠে বসে আর বলে জান একদুম জেলে চালান করে দিন আর ব্যাগ এর মধ্যে থেকে ধুস্পাপ্প নটরাজ মুত্তীৎ কে আবার সরকারি ধপ্পতরে জমা দিয়ে দিন।
“ওকে স্যার” বলে পুলিশ গুলো প্রতিমাকে নিয়ে হাটা দেয়।
“হ্যালো! আমি আকাশ চ্যাটারজী সিবিআই ক্রাইম বাঞ্ছ Nice to See You সুভমিতা। আরে হ্যাঁ করে কি দেখছ আমার কিছু হইনি কালকে এই মহিলা প্রতিমা-দেবী বলে যে তোমাকে পরিচয় দিয়েছে সে আসলে দাগী আসামী পুলিশ এর ভয়ে কালকে তোমার ব্যাগে চালানি করে দেয় নটরাজটি। আমি তোমাকে বাঁচানোর জন্য যেই না হাত বাড়িয়েছি ব্যাস প্রতিমার ফাদে পা দিয়ে ফেলি তবে পরে লোকজনের মধ্যে আমার আইডি কার্ড দেখাই আর প্রানে বেচে যাই| এইবার উলটে আমি প্লান করি আটো আলাদের মুখে ছড়িয়ে দেওয়া হয় যে আমি এই হসপিটালে ভর্তি| বেশ আর কি তুমি এলে জানতাম তোমার ব্যাগে যখন ওই ম্রুত্তিটি রয়েছে তোমার পিছু প্রতিমা নেবেই বেশ যেই ও এখানে এসে তোমার ব্যাগটা নিয়ে পালাতে গেলো আমাদের টীম ও এবার অ্যাক্টিভ ছিল ধরা পরে গেলো|
কিন্ত একটা ব্যাপার আমি না বলে পারছিনা শুধু তোমার এখানে আমাকে দেখতে আসার জন্যই এত তারাতারি সব কিছু মিটে গেল তাই তোমাকে একটা Treat তো দিতেই হবে কি তুমি রাজিতো। নাকি তুমি বুঝি পকেট মার কে দেখতে আস্ তে পারো কিন্ত কি চুপ করে কি দেখছ!”
আমার প্রথম পরিচয়-এর মানুষ-টি কে।