উঠেছে এক বিশ্রী কলরব চোর চোর ধ্বনি,
দেখছে সমাজ পালাচ্ছে ঐ নিশীথের নর্তকী।
ভাবছে সবাই খুকীটাকে করেছে সে চুরি,
খুকীর মা দাঁড়িয়ে দেখে হয়ে ভাগ্যের দাসী।
খুকীর মায়ের হয়েছে বিয়ে বছর দশেক হল,
খুকী যে তার তৃতীয় আঁধার আগের দুটো বড়।
খুকীর বাপ চেয়েছিল এবার পুত্র সন্তান হোক,
ঈশ্বর সেথায় দিল তারে হেথা পুত্র কন্যার যোগ।
খুকীর দিয়ে চেয়ে দেখে উঠল বাপ খেপে,
সমস্ত প্রহার করল সহ্য মা তার চোখ বুজে।
সমাজও তাদের রইল না পাশে থাকল না কেউ আর।
আদেশ হল দিতে হবে বিসর্জন ঐ পুরুষ নারীর সমাহার।
রাত্রি যখন গভীর হল সবাই নিদ্রামগ্ন,
খুকীর মা দাঁড়াল এসে কুলকুল গঙ্গাবক্ষ।
খুকীকে সে করল ত্যাগ ভরিয়ে চোখের জল,
নির্জন প্রকৃতির বুকে তখন বেজে ওঠে ক্রন্দন রব।
দাঁড়িয়ে দূরে খুকীর মা শিউরে ওঠে ভয়,
হিংস্র শ্বাপদের দল তখন রাস্তায় রাস্তায়।
হঠাৎ তখন রাত্রি ভেঙে হা রে রে রে শব্দে,
শ্বাপদ তাড়িয়ে দিল সে দৌড় খুকীকে বক্ষে আগলে।
খুকীর মা দাঁড়িয়ে দেখে সেও যে আর এক মা,
খুকীর মত সেও যে এক ইশ্বরের উপমা।
ছুটল সমাজ পিছনে তার দিতে তারে অপবাদ,
তবুও সে থাকবে অটল জানিয়ে সহস্র প্রতিবাদ।
চিত্র সৌজন্য – রতি রায় বণিক