বাতাসে বারুদের গন্ধ, শহর টা পুড়ছে আজ।

হাতে মৃত্যুর পরোয়ানা নিয়ে, চুপিচুপি এগোয় সিরাজ।

 

ছেলেটার পিঠে হাত রাখতেই, ফিরে তাকায় সে,

চমকে ওঠে সিরাজ, “একি অমিত তুই?”

 

অমিতের হাতেও দেখে সে উদ্যত ধংসের ফলা।

দু জোড়া চোখে যে সর্বনাশা আগুন জ্বলে উঠেছিল কিছুক্ষন আগে,

স্তিমিত হয়ে আসে অনেকটা।

 

বিদ্রুপের হাসি হাসে অমিত, “কী রে পিছন থেকে ছুরি মারবি ভেবেছিলিস? ওটাই তো পারিস তোরা”।

চেঁচিয়ে ওঠে সিরাজ, ” শুরু করেছিলিস তোরাই “।

 

বসে পড়ে অমিত, মুখে হাত চাপা দিয়ে ফুপিয়ে কেঁদে ওঠে,

” জানিস ভাই বোনটা আমার ফিরছিল কলেজ থেকে,

শিয়াল কুকুরের মতো টেনে নিয়ে যায় ওরা, পরপর নয় জন।

এক টুকরো কাপড় রাখে নি শরীরে”।

 

কাঁধে হাত রাখে সিরাজ, বলে

“আমার ছয় বছরের মাসুম বাচ্চা টা কী দোষ করেছিল বল,

খবর যখন পেলাম গিয়ে দেখি ঝোপের ধারে কাটা শ্বাস নালি দিয়ে চুঁইয়ে পড়ছে রক্ত”।

 

মনে পড়ে তোর সিরাজ ঈদ এ প্রতি বছর

তোর বাড়িতে নেমন্ত্ন্ন থাকত আমার,

চাচীর হাতের বিরিয়ানি সপ্তাহে একবার না খেলে চলত না আমার।

 

মনে আছে ভাই সবই, সেই সেবার যখন আমার বসন্ত হল,

বুড়ো বটতলার শীতলা মন্দিরে কাকিমা গিয়ে হত্যে দিল।

আমার প্রতি টা জন্মদিনে কাকিমা আমার নামে

পুজো দিয়ে মান্নাত করত ভুলি কী করে?

 

কেন হল ভাই এরকম? কেন ধংসের খেলায় মাতলাম আমরা?

উত্তর খোঁজার জন্য দুই বন্ধুই তাকায় দিগন্তের দিকে,

যেখানে দিন এসে মেশে রাতে,

একই সাথে মসজিদ থেকে ভেসে আসে

আজানের সুর আর

গৃহবধূ তুলসিতলায় বাজায় শঙ্খ।

~ আমরা না তোরা ~

Print Friendly, PDF & Email
Previous articleOur Days
Next articleজ্যোৎস্না বিলাস
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

5 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments