মধ্যরাত। অন্ধকার গলির মধ্যদিয়ে নিকোটিনের দেবীর সাথে হেটে বেড়িয়ে এলো আগুন্তক। সে নিশাচর প্রাণীদের দলের পুরোনো সদস্য। রাস্তায় রাস্তায় মানবতা খোজার প্রবণতায় নগরী তার নখদর্পণে। ৩ টা বেজে ৪০ মিনিট পতিতালয়ের ছোট ছোট ঘরের আলোগুলো এখন টিমটিম জ্বলছে।

আগুন্তক বাইরে থেকে শুনতে পাচ্ছে আত্মচিৎকার। তবে এ আত্মচিৎকার পতিতার নয়। সে বহু আগেই নির্বাক হয়ে গেছে। এ চিৎকার মানবতার। এ চিৎকার মনুষ্যেতের। পতিতালয়ের ‘হীন’ গলি দিয়ে বেড়িয়ে এল এক ‘নগ্নশিশু’। তার নিষ্পাপ মুখের উপর সমাজের কালচে দাগের আভা স্পট। লোহিত-বর্ণ চোখ দিয়ে জল পড়ছে না শিশুর। সে চোখ ঘৃণাপূর্ণ। সে ঘৃণা উঁচুশ্রেণী মানুষের বেধে দেওয়া নিয়মের উপর।

আগুন্তক আবারও হাটতে শুরু করে। এক গলির মোড়ে কাফিন নিয়ে বের হচ্ছে একদল মানুষ। এক কাফিনে ‘দুই লাশ’।সমাজ বিরুদ্ধবাদী হতে অক্ষম এক মেয়ের লাশ। এগিয়ে যায় যুবক। সামনে যেতেই দেখে একদল কপোত-কপোতি বসে আছে।একজন ‘লাল’ অন্যজন ‘নীল’। হাতগুলো কি শক্ত করে একে অপরকে জরিয়ে আছে । এত শক্ততো মানুষের ‘পাঁজরও’ নয়।ওরাও জানে কাল হয়ত লাল নীলের ভালবাসার রক্ত ঝরবে সমাজের মাটিতে। ধর্ম-নিরপেক্ষ হয়ে সমাজ ওদের কখনোই হয়ত মেনে নেবে না।

এগিয়ে চলে আগুন্তক। পাছে ফেরার অধিকার সমাজ তাকে দেইনি।

 

~ আগুন্তক ~

Print Friendly, PDF & Email
Previous articleভোর
Next articleসম্পর্ক
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments