(১)
ড্রিম হাউস ডেভেলোপারসের রিয়ালিটি এস্টেটের ব্যবসা যে ভালোই চলে তা তাদের ঝাঁ চকচকে অফিসে ঢুকলেই বোঝা যায় | বড়োবাজারের বংশানুক্রমিক কাপড়ের হোলসেলের ব্যবসা থেকে বেরিয়ে এসে , অবশ্যি প্রাপ্ত টাকাটুকু নেবার পরেই, সেই মূলধন নিয়ে বছর পঁচিশ আগে এই প্রোমোটিংয়ের কারবার চালু করেন রামশরণ তিওয়ারি | আজ অনেকটা পথ হেঁটে ড্রিম হাউস ডেভেলপার রিয়ালিটি এস্টেটে একটা সমীহজাগানো নাম | সেদিনের রামশরণ তিওয়ারি আজ হয়েছেন আর.টি – যাঁর অবাধ পদচারণ কলকাতার অভিজাত ক্লাব থেকে আই.পি.এলের ভি.আই.পি লাউঞ্জ অবধি | রাজনীতির লোকের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক সুমধুর | কলকাতার একটু বাইরে তাঁর ফার্মহাউসে, সপ্তাহান্তে শাসকদলেরও কিছু হেভিওয়েট নেতা রিফ্রেশড হতে যান | চরম নিন্দুকও বলতে পারবে না যে আর.টির নৈতিকতা বিষয়ক কোনো ছুৎমার্গ আছে !
(২)
ড্রিম হাউসে মাধুরীর প্রায় বছর পনেরো কাজ করা হয়ে গেলো | এখন সে ফিনান্স ডিপার্টমেন্টের হেড এবং ড্রিম হাউসের বোর্ড অফ ডিরেক্টর্সে আছে | তাকে এর জন্য অবশ্য কিছু দাম দিতে হয়েছে ! পনেরো বছর আগে যখন সে চাকরি খুঁজতে বেরিয়েছিল – তখন তাদের টানাটানির সংসার | হটাৎ পথ দুর্ঘটনাতে মাধুরীর স্বামী তপন পঙ্গু | তাই বাড়িতে কয়েকটামাত্র টিউশন ছিল তাদের সম্বল | তার আগেও তপনের চাকরি এমনকিছু আহামরি ছিল না – একটা বেসরকারি অফিসে সেলসের কাজ | মাধুরী হাঁপিয়ে উঠছিলো | তাই হটাৎ করেই কাগজের বিজ্ঞাপন দেখে ড্রিম হাউসে সে আবেদন করে | তাঁর ফাইনাল ইন্টারভিউ নেন আর.টি , তখন অবশ্য ওনাকে লোকে রামবাবু বলতো | মেয়েদের সিক্সথ সেন্স মাধুরীকে সিগন্যাল পাঠাতে থাকে যে রামবাবু কথোপকথনের সময় ওনাকে চোখ দিয়ে গিলছেন | বেপরোয়া মাধুরী তাঁর ওড়নাটা আরেকটু ওপরে তুলে দেয় | ফলশ্রুতি চাকরি আর ধাপে ধাপে উত্থান- আর আবির্ভাব মাধু ম্যাডামের ! তার জন্য অবশ্য বেশ কয়েকবার আউটসাইড ট্রিপ (যদিও তপন জানতো অফিসিয়াল) , অফিসে রাত করে থাকা :তাকে করতে হয়েছে | অবশ্য তার জন্য মাধুরীর বিরাট আফসোস নেই | তার ছেলে মেয়েরা আজ নামী স্কুলে পড়ে |ভাড়াবাড়ি ছেড়ে বাইপাসের ওপর ড্রিম হাউসেরই একটা থ্রি বিএইচকে তে তার বর্তমান ঠিকানা | সবাই খুশি – তপনের ব্যাপারটা অবশ্য সে বুঝতে পারে না | এখন তপন একদম চুপচাপ হয়ে গেছে | টি.ভি তে খবর দেখে – সে ছেলেমেয়েদের সাথেও বেশি কথা বলে না | অবশ্য কথা তারাও খুব একটা বলে না , তবে মাঝে মাঝে টাকার দরকার হয় বলে মাধুরীর সাথে ছেলেমেয়েদের যা একটু কথা হয় | প্রথম প্রথম রামবাবুর সাথে শারীরিক সম্পর্কে মাধুরীর মনে একটা অপরাধবোধ কাজ করতো – আজকাল আর করে না | সে ভাবে তারও তো শারীরিক চাহিদা আছে ! তপনের সাথে সে এক ছাদের তলাতে থাকে মাত্র | তাদের মধ্যে না শারীরিক না মানসিক – কোনো সম্পর্কই আর অবশিষ্ট নেই | সে আজকাল লক্ষ্য করেছে তার বসের শারীরিক ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমছে, , তাতেই বোধহয় বিকৃত মানসিক ক্ষুধা আরো বেড়েছে লোকটার !
(৩)
আজ ড্রিম হাউসে আর.টির পার্সোনাল এসিস্টেন্টের জন্য ইন্টারভিউ হচ্ছে | আর.টি একবার ইন্টারকমে মাধুরীকে ডাকেন |
“মাধু ফাইনাল রাউন্ডটা আমি নেবো ”
মাধুরী একটু তেরছা চোখে তাকিয়ে বলেন -“এর মধ্যেই কাউকে পছন্দ হয়ে গেলো ?”
আর.টি একটু এগিয়ে এসে মাধুরীর পশ্চাদ্দেশটা টিপতে টিপতে বলেন -“আমার সেক্রেটারি , আমি একটু চেখে নেবোনা ?”
মাধু :”হ্যা আমি তো এখন বুড়ি !”
আর.টি :”আঃ ডার্লিং গুস্সা করছো কেন ? মুখ বদলালে মন ভি খুস থাকে | আর তুমিও ফিনান্স বা সেলসের দুএকটা বাচ্চালোগের সাথে ফস্টিনস্টি করো – আমি কিছু মাইন্ড করবো না !”
মাধুরী -“দেখো সব ইয়ং – সামলাতে পারো কিনা?”
আর.টি :”-“একবারে না পারলে অল্প অল্প করে চেখে দেখবো ” , বলে কুৎসিত ভাবে হেসে ওঠেন |
(8)
অবশেষে রুপা বলে একজনকে সিলেক্ট করেন আর.টি | পড়াশুনাতে সাদামাটা হলেও মেয়েটি র চেহারাতে একটা যৌন আবেদন আছে | আর.টি ঠিক করেন রুপাকে ধীরে ধীরে গ্রাস করবেন | প্রথম প্রথম ওর সাথে আর.টি খুব ভালো ব্যবহার করতে থাকেন – ওকে ইমপ্রেস করার জন্য | কিন্তু তার কাটলো একটি অফিসের পার্টিতে | প্রথমে আর.টি রুপার পশ্চাৎদেশে আলতো চাপড় দিয়ে শুরু করেন | এরপর দুএকবার সামনে নাচতে যাবার অছিলাতে রুপার স্তন স্পর্শ করেন আর.টি | রুপা ভাবে সে তাড়াতাড়ি বেড়িয়ে পড়বে এখান থেকে | শেষে মদ্যপ অবস্থাতে জোর করে রুপাকে অন্ধকার কোণে জড়িয়ে চুমু খেতে যান | রুপা আর.টিকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে পার্টি থেকে একদৌড়ে বেড়িয়ে যায় !
পরের দিন রুপা অফিসে পৌঁছলে আর.টি ওকে নিজের চেম্বারে ডেকে পাঠান |
আর.টি :”তুমাকে ব্যাড পারফরম্যান্সের জন্য ড্রিম হাউসের থেকে টার্মিনেট করা হলো |”
রুপা :” আমি এক্ষুনি রেসিগনেশন লেটার দিতাম | ভালোই হলো কাজটা কমে গেলো ! আপনার মতো নোংরা লোকের সাথে আমার কাজ করা সম্ভব নয় |”
আর.টি চিবিয়ে চিবিয়ে বললেন রুপাকে :”তুমাকে যাতে অন্য কোথাও কাজে না নেয় , তার জন্য আমি সিনসিয়ার চেষ্টা করবে !”
(৫)
শুভা তিওয়ারি তাঁর নিজের একঘেয়ে জীবন নিয়ে ক্লান্ত | রামবাবুর জন্য ওনার অর্থের অভাব নেই | কিন্তু তিনি আজকাল জীবনের কোনো মানে খুঁজে পান না আর | এক মেয়ের লখনৌ তে শাদি হয়েছে | বড়ো ছেলে পড়াশুনাতে ভালো – এখন আমেরিকাতে আছে | ছোট ছেলে তরুণ , কখন বাড়ি ঢোকে আর বের হয় – তা বোধহয় সে নিজেও সবসময় খেয়াল রাখতে পারে না | পুনম বলে একজন পেজথ্রি সেলেব্রেটির সাথে শুভার ঘনিষ্ঠতা হয় | পুনম শুভাকে জীবনের এক অন্য পথের সন্ধান দেন | কিছু অল্পবয়সী ছেলেরা পয়সার অভাবে অভিজাত অথচ নিঃসঙ্গ কিছু মহিলার দৈহিক চাহিদা মেটায় | মহানগরীতে ফ্রেন্ডশিপ সার্ভিসের আড়ালে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান দেহব্যবসা চালাচ্ছে | মানুষের জীবন যত বেশি জটিল হচ্ছে , আজন্মলালিত নৈতিকতার বাঁধন যেন ততই আলগা হচ্ছে |
রবিন জিম ইন্সট্রাক্টর – সুন্দর দেহসৌষ্ঠব, যেন প্রাচীন কালের গ্রিক মূর্তির মতো | ইদানিং একটি কর্পোরেট অফিসের জিমে কাজ পাওয়াতে তার আর্থিক সচ্ছলতাও ধীরে ধীরে আসছে |এমনিতে হাসিখুশি ছেলেটার আজকাল স্বভাবে কিরকম একটা পরিবর্তন ঘটেছে | জিমে রবিনের অনেক ধরণের কাস্টমার আছে | সে বিশেষ এক মহিলার খোঁজ করতে থাকে তার কানেকশন কাজে লাগিয়ে ; সে জানতে চায় সেই মহিলার কোনো দুর্বলতা -নৈতিক বা অন্য যা কিছু ! কেউ কেউ অবাক হয় – একজন বিশেষ মাঝবয়সী অভিজাত মহিলা সম্পর্কে রবিনের কিসের এতো কৌতূহল ? প্রশ্ন করলে সে এড়িয়ে যায় | কখনো বা হেসে বলে “ম্যাচিউর্ড মহিলা তাকে টানে !”
(৬)
বুধবার দুপুরে সল্টলেকের বিডি ব্লকের এই সুদৃশ্য বাড়িটা বড়ো চুপচাপ | কলিং বেল বেজে ওঠে | আজ শুভার হেল্পিং হ্যান্ড আসেনি – তাই শুভা সার্ভিসের জন্য বাড়িতেই লোক ডেকেছেন | তিনি নিজেই দরজা খুলে রবিনকে ডেকে নেন | রবিন রুমে ঢুকতে ঢুকতে বলে -“আপনি কি ম্যাম ফুল সার্ভিস নেবেন ?” শুভা :”আগে বডি ম্যাসাজ করো ”
রবিন ধীরে ধীরে তোয়ালেটা সরিয়ে শুভাকে নিরাবরণ করে দেয় |
==========================================================================
আর.টির মোবাইলে একটা কল আসে |
“হ্যালো !”ওধার থেকে একটি সুরেলা কণ্ঠ ভেসে আসে -“স্যার , রুপা |”
আর.টি :”কৌন রুপা ? ওহ সমঝ গায়া… কিস লিয়ে ফোন কিয়া ?”
রুপা :”স্যার , খুব অসুবিধাতে পড়েছি | একটু কথা বলতে চাই ”
আর.টি : “পাতা থা মুঝে – তুম একদিন কল করোগী! ঠিক আছে – আজ সন্ধেবেলাতে আমার আলিপুরের গেস্টহাউসে এস | তোমার সাথে হিসাব অভি বাকি হ্যায় !”
“স্যার কোই বার মে মিল নেহি সাকতে?”
“আগর জব আবার করতে চাও , তো এস | নেহি তো টাইম ওয়েস্ট মত্ করো !” ঝাঁঝিয়ে উঠলেন আর.টি ! ” অর শুনো ও পার্টিওয়ালা রাত অভি ভি মুঝে ইয়াদ আছে | সো বুঝতেই পারছো তুমাকে আমার সাথে কি কি করতে হবে ”
রুপা একটুক্ষণ চুপ থেকে বলে -“রাজি – ঠিকানাটা বলুন |”
ঠিকানা বলে ফোনটা নামিয়ে রাখতে রাখতে আর.টির মুখে একটা নোংরা হাসি ফুটে ওঠে !
(৭)
আলিপুরের অভিজাত বহুতলের সিকিউরিটিকে রুপা জিজ্ঞেস করে ভিতরে স্যার আছে কিনা ? সিকিউরিটি ইন্টারকমে কথা বলে , ততক্ষন রুপার ব্যাগ একজন মহিলা সিকিউরিটিকে চেক করতে থাকে | ব্যাগ এবং মেটাল ডিটেক্টরে বডি সার্চ হলে রুপা টুয়েল্ফথ ফ্লোরে লিফটে করে উঠে আসে | 12E তে স্বয়ং আর.টি ওকে দরজা খুলে দেয় | হেসে বলে আসুন ম্যাডাম | বলে রুপাকে জড়িয়ে ধরে সোফাতে বসে | রুপাকে বলে কি নেবে ভদকা না অন্য কিছু ? রুপা বলে -“স্যার মোবাইলে একটা ফিল্মের ক্লিপিংস দেখি আগে ?” আর.টি :”জরুর – মগর থোড়া হট হন চাহিয়ে ! অর রুক – মোবাইল মেরে হোম থিয়েটার মে কাস্ট করো | বড়া স্ক্রীনমে জাদা মজা আয়েগা !”
রুপা সম্মতি জানায় | আর.টি রুপার সাথে ঘন হয়ে বসে | রুপাকে নিজের দিকে টানটা থাকে…
ফিল্ম চালু হতেই আর.টি যেন পাথর হয়ে যায় |কি দেখছে সে ? তার নিজের স্ত্রী বিপরীত বিহার সঙ্গমে রত | তার স্ত্রীর কাম্তপ্ত শীৎকার যেন আর.টির কানে গরম সীসে ঢেলে দেয় ! রুপা তার বাঁপা আর.টির কোলে রেখে ধীরে ধীরে চাপ দেয় আর হিসহিসিয়ে বলতে থাকে -“কেমন লাগছে স্যার ?”
আর.টি:”তুঝে মে ইহা সে নিকালনে নেহি দুঙ্গা, সালি !”
রুপা :”স্যার – আপনার স্ত্রী যাঁর সাথে সেক্স করেছে তার কাছেও এর কপি আছে | আমি আজ আর ২ ঘন্টার মধ্যে না ফিরলে আমার এক বিশেষ বন্ধু এটা নেটে ভাইরাল করে দেবে |”
আর.টি রাগে কাঁপতে কাঁপতে বলেন :”তোকে পোলিসে দেব – ছোড়েগা নেহি |”
রুপা :”দিন – এমনিতেই মরে বেঁচে আছি | আর কি ক্ষতি হবে ? কিন্তু ইন্টারনেটে এই ভিডিও ছড়িয়ে গেলে আপনার সোসাইটিতে রেস্পেক্ট থাকবে তো ? নিজের বৌকে শরীরের চাহিদা মেটাতে গিগলোর কাছে যেতে হয়, কারণ আপনি একটা হিজড়া !” এই বলে সে তার ডান পা দিয়ে আর.টির গালে একটা ঠোকা দিলো !
আর.টি গলা নামিয়ে বলেন :” তুঝে কিতনা চাহিয়ে, ভিডিও ডিলিট করনে কে লিয়ে ?”
রুপা :” নট মাচ ! জব আর কম্পেন্সেশনের জন্য ৫ লাখ ব্যাস | তবে ভিডিও ডিলিট করবো না | ওটা তোর মৃত্যুবাণ!” বলে দাঁড়িয়ে উঠে সে আর.টির মুখে এক দলা থুতু ফেললো …