সকালটা ছিল রোজের মতো বড্ড একঘেয়ে। তবু আজ সকালটা অন্যদিনের থেকে আলাদা। কেন? তা একেবারে মনে নেই রিনির।
রিনি একজন কর্মরত। এটিক্টেস আর প্রিন্সিপাল দিয়ে বড়ো হয়ে ওঠা একটা মিষ্টি মেয়ে। সেদিন অফিস পৌছাতে দেরী হতে, সিকিউরিটি দাদা ওকে জিজ্ঞাস করল-
– কি এত দেরী যে ?
-আর বলো না বাসটা যেন আজ খরগোশ-কেও হার মানিয়েছিল।( নিজের নামটা সই করতে করতে)।
– তা যা বলেছো….(বলতে না বলতেই)
– আ্যই সুরেশ দা আজ কত তারিখ গো?
-আজ, ওই হ্যাঁ ৫ই সেপ্টেম্বর।
এক ঝলকে রিনির মনে পড়ে গেল কেন সকাল থেকে দিনটায় খুব চেনা গন্ধ ছিল কেন। আজ শিক্ষক দিবস। আজকের দিনটা ভোলা যায় কি?সেই ছোট্টবেলা থেকে আজ অব্দি বাড়ি ছেড়ে বাইরে জগৎটা কতটা কঠিন হতে পারতে তারা না থাকলে। এইসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ তার অন্যরকম কিছু করতে ইচ্ছে করল। হঠাৎ মনে হল, সেই -সব মানুষগুলোর কাছে পৌঁছনো হয়তো অসম্ভব তবে তাদেরকে মনে করে কিছু তো করাই যায়। সঙ্গে সঙ্গে বসকে (রিনির আর একজন প্রধান শিক্ষক) গিয়ে বলল,
-আজ হাফ ডে। তারপর পত্রপাঠ পালাচ্ছি আমি।
-কেন রে!
-না দেখুন, আজ শিক্ষক দিবস, কিছু একটা এক্সক্লুসিভ করা চাই।
-তা কি করবি ?? শুনি??
– ভাবছি কিছু জিনিস ওই যেমন ধরুন (খাতা, পেন, বই ইত্যাদি কিনে ছোট্ট বাচ্ছাদের দেবো) আর পারলে ওদেরকে পাঠ ছাড়াও একটুঅন্যরকম শিক্ষা দিয়ে আসবো।
– ওরে বাবা! ব্যপারখানা বেশ। যা তাহলে হাফ ডে গ্রান্টেড।
খুশিতে -আনন্দে আটখানা হয়ে চট-পট সব কাজ সেরে রিনি বেরিয়ছ পড়ল। সব কেনাকাটা সেরে কোন নির্দিষ্ট কেউ না রাস্তা ধারের সেই সব শিশু ওই পেন-খাতা-বই বাদেও মানুষ হতে শেখালো। শেখালো মায়ের বলা কথা, তার শিক্ষা পাওয়া সবটা। সবশেষে রাতে বাড়ি ফিরে যখন ছবিগুলো সোশাল মিডিয়ায় দিল আর তার প্রতিটি শিক্ষক-শিক্ষিকা তার কাজে খুশি হয়ে তাকে আর্শীবাদ দিল। বলল, “এইভাবেই ভালো মানুষ হ”। বুঝি সেটাই হয়ে থাকবে তার জীবনের সবথেকে স্মরণীয় শিক্ষক দিবস।
এইভাবেই বোধহয় রিনির মতো শিষ্য আর ওই সব গুরু দের মতো গুরু এখনো আছে বলে, সমাজটা দাঁড়িয়ে আছে ,ধসে যাওয়া থেকে বার বার রক্ষা পাচ্ছে। এইভাবেও বোধহয় ছোটবেলা থেকে গড়ে তুলেছে যারা তাদের বছর একটা দিন, তাদের মনে করে পালন করা যায়। আসলে শিক্ষা পাই আমরা রোজই তাই মন থেকে বললে বলাই যায় ” Everyday is teacher(s) day, it upto you how will you celebrate it”.
শিক্ষক দিবসে আমার সব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আমার প্রণাম। তোমরা ছিলে তাই আমি আজ আমি হতে পেরেছি।😊