পিকুর ভূত দেখা

পিকু , বয়স ১৮, প্রেমিকা জোটেনি ভাগ্যে
ও ভাবে ওর হয়তো ভাগ্য টাই খারাপ, তাই ওকে কোনো মেয়ে পছন্দ করে না । না পছন্দ করে না ঠিক নয়, ওই যা হয় শুধুই বন্ধু । তাই আজকাল ও ফেসবুক এ unknown মেয়েদের friend request পাঠায় যদি কেউ accept করে , তথাকথিত girlfriend হয়, আসলে বন্ধুরাই খিল্লি করে বলে এখনো একটা মেয়ে পটাতে পারলি না পিকু।
আজ বুধবার, tution নেই ,বাইরে খুব বৃষ্টি হচ্ছে , জানলার ধারে একাকী বসে তার আগের বছরের ওই দিনটার কথা মনে পড়লো , সেদিন ও এমন ই বৃষ্টি নেমেছিল ।
আগের বছর ,সেদিন ও ছিল বুধবার, পিকুর এখনো মনে আছে তখন খুব বৃষ্টি হচ্চিল , ওই দিনটা পিকু কোনোদিনই ভুলতে পারবে না ।তখন পড়ন্ত বিকেল, চারিদিক ফাঁকাই । বৃষ্টির জন্য পিকু বাজার থেকে বাড়ি ফেরার সময় বন্ধ দোকানটার শেড এ আশ্রয় নিয়েছিল । বাইরে ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়ছে”” রাস্তার অপার টাও ঠিক করে দেখা যাচ্চে না । তখন বৃষ্টির মধ্যে ছুটতে ছুটতে একটা সুন্দরী মেয়ে পিকুর পাশে এসে দাঁড়ালো । মেয়েটির বয়স ২৪ কি ২৫ , মেয়েটি পুরো ভিজে গেছে । পরনে ছিল নীল টপ আর জিন্স,বৃষ্টিতে জামা কাপড় সবই ভিজে গেছে। পিকু শুধু তাকিয়ে দেখল, কিছুই বললো না। মেয়েটির মুখে অদ্ভুত এক আতঙ্ক । পিকু ভাবলো জিজ্ঞেস করবে “কি হয়েছে” , তারপর ভাবলো না । বাইরে খুব জোরে বৃষ্টি পড়ছে। পিকু সাহস করে জিগ্গেস করলো, দিদি কি হয়েছে তোমার ? মেয়েটি হাপাতে হাপাতে বলল, ওরা আমাকে মারতে চায় । পিকু আতঙ্কিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো, করা? মেয়েটি বলল ,আমার শশুর বাড়ির লোকেরা আর সুভাষ । পিকু বলল কেন? মেয়েটি বলল ওরা খুব বাজে লোক, আমার বাবা বিয়ের দান হিসেবে বেশি কিছু দিতে পারেনি তাই, ওরা খুব বাজে । মেয়েটি খুব হাপাচ্ছিলো আর পিকু তো এসব শুনে খুব ভয় পেয়ে গেল , ও চুপ করে শুধুই শুনতে লাগলো । মেয়েটি বলতে থাকলো আমি পড়তে চাই , বোরো হতে চাই । কিন্তু ওরা চায় না । আমি তো ওদের বাড়ির কাজের লোক , হটাৎ নিজের মনেই বলল তুই বাঁচাতে পড়বি না আমায়, পিকু কিছু বলতে পারল না । মেয়েটি বলল তুই তো বাচ্চা। আমি শুধু বাঁচতে চাই। পিকু হা করে শুনে যাচ্ছে, কি বলবে বুজতে পারছে না। মেয়েটি বলল এবার আসি ,বৃষ্টি কিছুটা থেমেছে,পিকু কিছু বলার আগেই মেয়েটি তারাতারি পা বাড়ালো ,কিচ্ছুক্ষনের মধ্যে সে অদৃশ্য হয়ে গেল। পিকুর কানে তার শেষ কথা গুলো বাজতে থাকলো।এবার পিকু ঘড়ি দেখলো 6:30 তা বাজে, তাড়াতাড়ি বাড়ির দিকে পা বাড়লে সে। রাতে ঘুমের মধ্যেও মেয়েটির কথা গুলো তার মনের মধ্যেই বেজেছিলো । সে ভাবলো মা কে বলবো , তারপর ভাবলো না থাক।

পরদিন সকালে খবরের কাগজের দ্বিতীয় পাতাটি উল্টাতেই চমকে উঠলো পিকু , তাড়াতাড়ি সোফা থেকে নেমে,উঠে দাঁড়ালো । মা দেখে বলল কি হয়েছে, কিছুক্ষন চুপ করে থেকে পিকু বলল কই কি কিছু না তো । তাড়াতাড়ি পিকু নিজের ঘরে চলে গেল ।

দুপুরে খেতে বসে পিকুর মা , পিকুর বাবাকে বলল আজকাল যা হচ্ছে, ওই যে মেয়েটি ‘ কাল খুন হয়ে পাশের পাড়াতে , পড়াশোনায় কত ভালো , অথচ এই ভাবে প্রাণ দিতে হল , কি সুন্দর মুখটা পুরো ঝলসে গেছে আগুনে । ওই বর্ টা কি যেন নাম সুভাষ , ওই মেরেছে । পুলিশ তো arrest করেছে শুনছি। পিকুর বাবা শুনে বলল এসব ছোটলোক ঘরের ব্যাপার আর কি, পন না দিতে পারায় ,খুন । আজকাল কলকাতার নিত্য নতুন গল্প হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইনসেটে মেয়েটির ছবি দেওয়া আছে , পরনে নীল টপ আর জিন্স , দেখতে হুবহু গতকাল রাস্তায় দেখা হওয়া ওই মেয়েটির মতো ।

Print Friendly, PDF & Email
Previous articleসুখের বাসা
Next articleনরকযন্ত্রণা।
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments