হে মোর ২৫শে বৈশাখ,
তব আবির্ভাবে আজি মোর হৃদি বুঝি তুষানলে খাক।
কেন তুমি জন্ম দিলে না আরো একবার তব পুণ্য প্রভাতে,
আমাদের সবাকার মাঝে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথে !
আজি যবে এই করাল ব্যাধির গ্রাসে ধরণীর হাহাকার,
যেথা হেরি সেথা কেবলি মৃত্যুর মিছিল–কি অসীম সংহার,
ব্যথিত এ চিত্ত মোর অশ্রুধারায় অহর্নিশ সিক্ত বাণভাসি,
তখন হে পূত অহ–কি হেতু রুদ্ধবাক–তোমারে জিজ্ঞাসি।
হতাশায় নিশ্চুপ আমি–মুখে নাই ভাষা,
হারায়ে গিয়েছে বুঝি জীবনের আশা,
নিষ্কম্প পত্ররাজি–রিক্ত বসুন্ধরা,
বিস্ফারিত দৃষ্টি হেরি দু:খ কষ্ট জরা,
তথাপি কি রহিবে তুমি নি:স্তব্ধ পঁচিশ !
জন্ম তাঁর অনিবার্য–মোর কাব্যের ঈশ।
অনাগত রবীন্দ্রনাথ–জন্ম দাও তাঁরে,
নব রূপে দেখা দিন মানুষের ভীড়ে,
সবাকার মাঝে এক সমৃদ্ধ সভায়,
বিভাসিত হোন কবি আপন প্রভায়।
অহরহ অগ্নিদগ্ধ পৃথিবীর বায়ু,
রুদ্ধশ্বাস প্রহরে বুঝি গোণে তার আয়ু,
আশাহীন, দিশাহীন জীবনের ছবি,
আপনারে প্রয়োজন হে বিশ্বকবি।
মৃত্যুতে বেদনাগ্রস্ত ধরণীর মাঝে,
আপনার দৃপ্তকণ্ঠ হৃদয়ে বিরাজে,
মৃতপ্রায়, রোগগ্রস্ত, মৌনমূক ধরা,
ধ্বংসের প্রান্তর ভেদি’ জন্ম দাও ত্বরা।
অনাগত শিশুটিরে জন্ম দাও–ওগো মোর পঁচিশে বৈশাখ,
দাও ভাষা এবে আজি আমাদের কণ্ঠে–মোরা নির্বাক,
বাজাও মঙ্গলশঙ্খ এক ঊজ্জ্বল প্রভাতে অনিন্দ্য রবিকরে,
দামামা বাজায়ে দাও হে পঁচিশ অনন্ত জীবনের সুরে।
প্রলয়ের অন্ধকার ভেদ করি হোক আজি নব সূর্যোদয়,
আকাশ বাতাস কর মুখরিত, কর জ্যোতির্ময়,
জগৎসভার মাঝে জ্বালাও রবীন্দ্রদীয়া আরও একবার,
হে পূত পঁচিশে বৈশাখ–জন্ম যেন হয় বঙ্গে পুনর্বার তাঁর।
—————————————————-
স্বপন চক্রবর্তী।
পুণ্য পঁচিশে বৈশাখ প্রতি।
Subscribe
Login
0 Comments
Oldest