নির্জন নীল পাহাড়ের পানে
ভাবি যাই এইক্ষণে,
কিন্তু কোরোনা বলে কানে কানে—
“আমাকেও গিরি টানে”।
অতএব হায় ঘরেতে বন্দী,
সাধ সাথে করি সন্ধি,
দুষ্ট কোভিড করেছে ফন্দী
হবে সে প্রতিদ্বন্দ্বী।
এদিকে গিন্নী মুখ তাঁর ভার,
দিলেন বলেই সার–
“বন্দী রব না গৃহকোণে আর
করে দিনু হুঁশিয়ার।”
“দিনে দিনে মোর বাড়ছেই মেদ,
সেই সাথে বাড়ে খেদ,
না ঘুরলে হবে চির বিচ্ছেদ
জানো ত’ আমার জেদ।”
আমি ত’ এখন শাঁখের করাতী,
কোনদিকে নাই গতি–
একদিকে আছে কোরোনার ভীতি,
অপরপ্রান্তে সতী।
ভেবে ভেবে মোর রক্তের চাপ
বাড়াচ্ছে উত্তাপ–
একটু হাঁটলে বুকে ধরে হাঁফ,
হায় এ কি অভিশাপ !
কেউ বলে মোরে ধরেছে কোরোনা,
বাইরে বেরোনো মানা–
কেউ কহে-“রোগ বেঁধেছে রে দানা
হৃদয় মেলেছে ডানা।”
“ওপরের ডাক এসে গেছে বুঝি”,
কেউ বলে সোজাসুজি–
প্রতিবেশী দাদা সাতিশয় পাজী,
গেঁজিয়াটি খোঁজাখুঁজি।
ভাবি আমি হায় এই ছিল নাকি
আমার কপালে লেখা !
কত কিছু হায় রয়ে গেল বাকী,
হোলোনা কিছুই দেখা।
আমার সঙ্গে ভাগ্যটি জুড়ে
পত্নীরও একই দশা,
হাহুতাশ করে কপালের ফেরে,
পেল না সে খুঁজে দিশা।
সুতরাং সব আশাতেই খরা,
শুয়ে শুয়ে লিখি ছড়া–
বছরের শেষে বিষণ্ণা দারা,
সুর আর নয় চড়া।
নির্জন ঘরে বোসে মুখোমুখি,
মোরা দুই বুড়োবুড়ি,
মানস চক্ষে ভ্রমণেতে সুখী
ফুরোল পারের কড়ি।