ঢং ঢং করে টিফিনের ঘন্টাটা পড়তেই আমরা সবাই যে যার টিফিন কৌটো খুলে বসে পড়লাম। আজ মা কি দিয়েছে ভাবতেই মনে পড়ল ঘুম থেকে ওঠার সময় রান্না ঘর থেকে চাউমিন এর গন্ধ আসছিলো। আমার favorite. ‘আজ কারো সাথে শেয়ার ফেয়ার করতে পারব না। ‘ বলেই অন্যে কে কি এনেছে পাত্তা না দিয়েই গপ গপ করে খেতে লাগলাম। আয়ান আর কবীর বলাবলি করছিলো আমার অন্যান্য বাঙালি পার্টস গুলোর সাথে Chinese পাকস্থলী টা কিরকম বেমানান ইত্যাদি ইত্যাদি। ওসব slazing এ কান না দিয়ে ওটাকে শেষ করার দিকে মনোযোগ দিলাম।
বাড়ীতে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড দাদাই বলে আমি নাকি একদম আমার বাবার মতো হয়েছি। অন্যের ব্যাপারে বেশী ভাবতে পারি না। ‘দাদু বড় হচ্ছ। মানুষের মত মানুষ হতে হবে তোমায়। অন্যের দুঃখ কষ্ট বুঝতে হবে তোমায়।’ কিছুতেই আমার মাথায় ঢোকে না অন্যের ব্যাপারে ভাবার কি দরকার আছে। সবাই নিজের নিজেরটা ভাবলেই তো হয়।
টিফিন খাওয়া শেষ করে যেই বাইরে খেলতে বেড়িয়েছি কালুটা পায়ের কাছে এসে লেজ নাড়াচ্ছে আর গন্ধ শুকছে। আজ তো আর কিছু নেই ওকে দেওয়ার মত। অন্য দিন স্যান্ডউইচ এর অর্ধেক বা রুটি সব্জীর প্রায় সবটাই খেয়ে ও আমায় মায়ের বকার হাত থেকে বাঁচায়। আজ তো আমি নিজেই নিজের সমস্যার সমাধান নিজেই করে নিয়েছি। আজ আর কালু কে দরকার হয়নি। ওকে সরিয়ে মাঠে খেলতে যাব হঠাৎ পেছন ফিরে দেখি কালুর চোখ দুটো কেমন যেন অন্য রকম লাগছে। কিছুতেই চিনতে পারছি না ওগুলোকে। আজ সবার আগে ব্যাট পেয়েছি। তাও মনটা কেমন যেন খারাপ খারাপ লাগছে। দশমীর দিন দুগ্গা ঠাকুর ভাসান গেলে যেমন মনে হয় সেরকম। টিফিন টাকি মা আজ ভালো করে বানায়নি ?????

Print Friendly, PDF & Email
Previous articleবুলেট
Next articleএক্সট্রা পেন
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments