অবশেষে এবার একুশ,
বিশ গিয়েছে থেমে–
তবে মুখোশ মুখে সেঁটেই গেছে
হাঁফ ধরছে দমে।
বিশের জোড়া শুরু সবে
কাটল দুটো মাস,
এমন সময় মাথার ‘পরে
সাড়ে সব্বোনাশ।
চীন দেশের অচিন রোগে
মোদের গলায় ফাঁসি,
জীবাণু এক জীবন থেকে
তাড়িয়ে দিল হাসি।
তখন থেকেই আমরা সবাই
রামগড়ুরের ছানা,
মুখোশ দিয়ে মুখটা ঢাকি
হাসতে মোদের মানা।
হা হা হাসি হি হি হাসি
হো হো হাসি কিম্বা,
ঐ মুখোশের আড়ালে সব
দিয়েছে আজ লম্বা।
সবাই এখন গোমড়ামুখো,
ঘরের মধ্যে বন্দী,
হাসির হাওয়ার সঙ্গে যেথায়
নেই কোনোই সন্ধি।
মোদের বাসা সাবান ঠাসা
হাসি মজা সব বন্ধ,
সব কিছুতেই কেমন যেন
অসুখ অসুখ গন্ধ।
বাইরে থেকেই আপ্যায়ন
হোক না যতই চেনা,
দূর থেকেই নমস্কার,
ঘরের ভেতর-‘না না’।
হাঁচলে পরে বুকটা কাঁপে
হাসলে তথৈবচ,
কানের কাছে বলছে কারা–
“ঘরদোর সব মোছো”।
বাড়ীর মাঝে আটকে থাকা
বাইরে গেলেই বিপদ,
হাতের মাঝে ঘষতে হবে
তরল ইথিল মদ।
দূরভাষেই আলাপ জারী,
কাছে এলেই ভয়,
জানি না হায় কবে এই
যুদ্ধ হবে জয়।
এবার একুশ শুনছি সাথে
আসছে নিয়ে টীকা,
লড়বে ঐ রোগের সনে
যে নিয়েছে ঠিকা।
ঠিকা নিয়েছে সবার প্রাণের
এমন দাপট তার,
এবার তাকে যেতেই হবে
এই কথাটাই সার।
অসহ্য এই ছন্দপতন,
তাগিদ কেবল বাঁচা,
অনিচ্ছাতেও বেছেছিলেম
চারদেয়ালের খাঁচা।
হাসব আবার অট্টহাসি
হাত মিলায়ে হাতে,
বিশএকুশে থাকব আবার
সব্বাই একসাথে।
বিশে বিশেই বিষের ক্ষয়,
একুশ মুখোশ ছাড়া,
কোরোনাকে তাড়িয়ে দিয়ে
দূর করবো জরা।
বলবো এবার সমস্বরে–
“আকাশটাকে ধর্”,
বাঁচবো যবে আনন্দেতে
হাসবে চরাচর।
এই আশাতেই বাঁধছি বুক
আগামীতেই দৃ্ষ্টি,
প্রতিষেধকের দৌলতে আজ
রক্ষা পাবে সৃষ্টি।
নতুন সনে মুখোশ ছেড়ে
হাসব প্রাণখুলে,
বিশের জোড়া ফলার কথা
চাইবো যেতেই ভুলে।
লক্ষ কোটি স্বজন মোদের
হারিয়ে গেলেন কোথা !
আর কখনো এমন দিন
আসে না যেন হেথা।
গত সনের ওই তারিখপন্জী
পুড়িয়ে দিলেম তাই,
আজ একুশের নতুন স্লোগান–
“আমরা হাসতে চাই”।