হঠাৎ করে দেখা তার সাথে, দেখে প্রথমে একটু অবাকই হলাম। একটু থেমে জিজ্ঞেস করলাম “কিরে আজ হঠাৎ পথ ভুলে নাকি রে?” শান্ত সুরে একটা উত্তর ভেসে এল “তোকে দেখতে এলাম।” মনের মধ্যের সব প্রশ্নের ঢেউ কে স্তব্ধ করে এবার একটু চেঁচিয়ে জিজ্ঞেস করলাম “কিরে ভুলে গেছিস নাকি!” পরক্ষণে তার সেই একটা মুচকি হাসি যেন আমার সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিল। বহু দিন পর তার দেখা পেয়ে বললাম “যাবি নাকি রে, আমাদের সেই প্রিয় জায়গায়?” শোনামাত্র গাল ভরা হাসি নিয়ে বলল “তোর মনে আছে আজও তাহলে।” “সেকি ভোলা যাই রে তার জন্যই তুই ছিলিস এত দিন আমার কাছে। খুব কাছের রে দিন গুলো।”- চলতি পথে কথাটা বলেই পকেট থেকে সিগারেট টা বের করে ধরালাম। ঘড়িতে তখন সাড়ে সাতটা মত। নির্জন রাস্তাতে হেঁটে চলেছি।হাত ঘড়ির টিক টিক আওয়াজ তাও কানে আসছে। মুখ থেকে সিগারেটটা নিচে নামিয়ে তাকালাম ওর দিকে, মন ভরে দেখার জন্য; সিগারেটের সেই ধোঁয়াতে অস্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে মুখটা। তবুও পাশে আছে এই ভেবেই ভালো লাগল। চারিদিকের সেই নিস্তব্ধতা যেন আরই বেড়ে চলেছে। দুটো পায়ের আওয়াজ কেবল কানে আসছে। আজকাল রাস্তার কুকুর গুলোও খুব একটা পাত্তা দেয় না। পকেট থেকে আর একটা সিগারেট বের করে জ্বালালাম। এবার পাশ থেকে ক্ষীণ স্বরে শুনতে পেলাম “ভালই! ঠিকই আছে।” একটু মুচকি হেসে কথাটা এরিয়ে চললাম। ক্ষণিক বাদে পেছন পকেটে হাত দিয়ে বটুয়াটির বাম খাঁজে রাখা ছবি টা বের করে বললাম “এই দেখ মনে আছে তোর!” একটা গম্ভীর কণ্ঠে বুঝতে পারলাম সে বলে উঠল  “তোর কাছেই যখন ছিল তবে এত দূর হাঁটালি কেন?” “একটু তোর সাথ চাই ছিলাম রে তাই”- হাসি মুখে উত্তর টা দিলাম। ডান হাতে ধরে রাখা সেই ছবি তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে থাকতে দূর থেকে ভেসে আসা কণ্ঠে শূনতে পেলাম “এটাই আমাদের দূরে সরারও কারণ ছিল রে।” আচমকা মুখ তুলে আর তাকে খুজে পেলাম না। ক্ষণিক এর জন্য এসে আবার চলে গেল সে ‘আনন্দ’।

আমিও আবার মাথা টা নামিয়ে পিঠের সেই বোঝাটা নিয়ে ঘরে ঢুকে গেলাম। শুধু মনে থেকে গেল তার সেই মুচকি হাসিটা। অনেক অকথ্য বচন আজ যেন সে আমায় শুনিয়ে গেল। ‘আনন্দ’ আবার বুঝিয়ে গেল যে সে আমার কাছে আজও অধরা।।

Print Friendly, PDF & Email
Previous articleSCISSORS
Next articleশুক্ল পক্ষ
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments