নাটকের রিহার্সাল তখনও শুরু হয় নি । এক এক করে এসে গেছে সবাই । শুধু আসেনি কাকলি । এই নাটকের নায়িকা । কাকলি বড় লোকের মেয়ে । বাবা খুব নামজাদা ব্যারিস্টার । কলকাতার শরৎ বসু রোডের ওপর নিজেদের তিনতলা বাড়ি । সামনে বিরাট লন । নুড়ি পাথর বিছানো রাস্তা দু ভাগ হয়ে মিশেছে সোজা গাড়ি বারান্দায় । মাঝ খানটায় কৃত্তিম ফোয়ারা । গ্যারাজে দুটো গাড়ি । ঠাকুর , চাকর ,মালি মিলিয়ে কাজের লোক সাতজন । কাকলি পড়ে লেডি ব্র্যাবোন কলেজে । ফার্স্ট ইয়ার । ইংরেজি অনার্স । ভালো গান জানে । নাচতেও পারে খুব সুন্দর । স্কুল -কলেজে পারফর্ম করে একদম স্টেজ ফ্রি । সেলফ এস্টিম প্রচন্ড হাই । নিজেকে নিয়ে ভাবে না । সে জানে তার কোনো অসুবিধা হবে না । প্রায় প্রতিদিনই ঝগড়া পরিচালক কাম মুখ্য অভিনেতা রুদ্রাংশুর সাথে । রুদ্রাংশু ওকে বোঝাবার চেষ্টা করে যে নাটক একটা দলগত অভিনয় । শুধু নিজে ভালো করলেই চলবে না । সহকারী অভিনেতাকেও সমান সুযোগ দিতে হবে । প্রয়োজনে বাড়িয়ে দিতে হবে সাহায্যের হাত | মোস্ট ইম্পরট্যান্ট রিহার্সালে প্রধান চরিত্র অনুপস্থিত থাকলে বাকিদের অসুবিধা হয় । মনে রাখতে হবে এখানে কেউই প্রফেশনাল অভিনেতা নয় । কলেজে পড়ে । সখ করে অভিনয় ।
ফর্সা মেয়ে তায় সুন্দরী । সমস্ত রাগ জমা হত একটু ভোঁতা নাকের ডগায় । টমেটোর মত লাল হয়ে যেত গাল দুটো । কটমট করে তাকাতো রুদ্রাংশুর দিকে । তারপর দাঁত দিয়ে নিচের ঠোটটা কামড়ে বলতো , ওকে , লেটস স্টার্ট । শুরু হয়ে যেত রিহার্সাল । নাটক ম্যাক্সিম গোর্কির মা ।
সেবার মহামতি লেনিনের ১০৫তম জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষে একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল কলকাতার গোর্কি সদন । শুধু মাত্র তাদের ছাত্র ছাত্রীদের মানে যারা রুশ ভাষা শিক্ষার্থী তাদের জন্য । কেউ গান , কেউ নাচ , কেউ বা আবৃত্তি । মাঝে রুশ কনসুলেটের পক্ষ থেকে বক্তৃতা । তারপর নাটক । ছাত্রদের দুটো ভাগে ভাগ করা হয়েছিল । সিনিয়র আর জুনিয়র । সিনিয়ররা করবে রুশ ভাষায় আর জুনিয়ররা করবে বাংলায় । সমস্ত অনুষ্ঠানটা হবে গোর্কিসদনের মূল মঞ্চে । উপস্থিত থাকবেন বিশিষ্টজনেরা । এদের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ যোগ্য দিল্লির রুশ কনস্যুলেট জেনারেল মিস্টার ল্যাংকিন । সুতরাং পারফর্মেন্স যেন উন্নত মানের হয় । ক্লাসে ম্যাডাম বার বার বলে দিয়েছেন ।
বাংলা নাটকের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হল রুদ্রাংশুকে । দলের সবাইকে নিয়ে আলোচনায় বসলো । ঠিক হলো গোর্কির মাদার নাটকটা অভিনীত হবে । কিন্তু সময় নির্ধারিত মাত্র ৪৫ মিনিট । অত অল্প সময়ের জন্য একটা স্ক্রিপ্ট লিখতে হবে । লিখে ফেলল রুদ্রাংশু । এবার কাস্টিং । পাভেলের চরিত্রে রুদ্রাংশু নিজে । মাদার ঠিক হল কাকলি । নাতাশা সুদেষ্ণা । বাকি চরিত্র ভাগাভাগি হয়ে গেল । শুরু হলো রিহার্সাল । দুদিন পর থেকেই রিহার্সালে এবসেন্ট কাকলি । তারপর থেকেই শুরু হল ঝগড়া । আগে যাও বা মাঝে মধ্যে আসছিল এরপর থেকে ক্লাসে আসাও কমিয়ে দিল । বিপাকে পড়লো রুদ্রাংশু । কাকলিকে বাদ দেওয়া যাচ্ছে না । অভিনয়টা ভালো করে । ক্যারেক্টারের সাথে মানিয়েছে ভালো । তার ওপর ম্যাডাম মিসেস ইনিভার প্রিয় ছাত্রী বলে কথা । কী যে করে রুদ্রাংশু বুঝে উঠতে পারছে না । খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কোনোমতে চলতে লাগলো । সবাইকে নিয়ে একদিন বসলো আলোচনায় । সবারই মত বাদ দিয়ে দেওয়া হোক কাকলিকে । কিন্তু রুদ্রাংশু তাতে অমত । সে কাকলিকেই চায় । সে জানে তার আড়ালে সবাই কাকলির প্রতি তার দুর্বলতা নিয়ে হাসি ঠাট্টা করে । আচ্ছা ,ওরা কী বোকা ? নিশ্চয়ই নয় । যথেষ্ট বুদ্ধিমান ও বুদ্ধিমতী । তাহলে এই জাতীয় ভাবনা কে প্রশ্রয় দেয় কেন ? রুদ্রাংশু জানে সে নিজে একজন নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে । দু- চোখে স্বপ্ন দিগন্ত ভরা । কাকলি অসম্ভব উচ্চবিত্ত পরিবারের সযত্নে লালিত পালিত হওয়া আদরের দুলালী । কোনোদিন মেলে ? এসব গল্পে ,সিনেমায় হয় । বাস্তবে নয় । দরকারই বা কী বড়লোকের বিটির সাথে প্রেম করার । বাংলা দেশে কী কাকলি ছাড়া আর কোনো মেয়ে নেই যার সাথে নিভৃতে নিরালায় একটু প্রেম করা যায় । সবুজ ঘাসের বুকে শুয়ে কিংবা নদীর জলে পা ডুবিয়ে ।
তবে একটা সত্যি কথা বোধ হয় নিজেকে বলা যায় । কাকলি ক্লাসে এলে ভালো লাগে । এই ভালো লাগাটা একদম অন্য ধরনের । ঠিক বোঝানো যাবে না । মন কেমন কেমন করে । কী যে মন চায় জানে না রুদ্রাংশু । এর নাম কী প্রেম ? ভালোবাসা ? মনে হয় না । এ এক ধরনের মোহ । শরীরের প্রতি আকর্ষণ । ভালোবাসলে ঝগড়া করবে কেন ? দুটো তো বিপরীত মুখী । তা ছাড়া , সবটাই তো এক পেশে ভাবনা । কাকলি হয়তো এসব কিছুই ভাবছে না । তার হয়তো বয়ফ্রেন্ড আছে । কিংবা পুরো ব্যাপারটাই ছেড়ে দিয়েছে বাবা মার ওপরে । যাইহোক এসব ভাবনা ছেড়ে নাটকটা নিয়ে ভাবাই এখন রুদ্রাংশুর একমাত্র কাজ ।
পরেরদিন কাকলি এল । নাটকে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের জন্য একটা টেপ রেকর্ডার প্রয়োজন । কোথায় পাবে ? ক্লাসে এই কথাটা বলতেই কাকলি জানালো তার কাছে আছে । সামনের দিন সে নিয়ে আসবে । কিন্তু আনে নি । ইচ্ছে করেই আনে নি । সে কথাটা আলাদা ভাবে জানিয়ে গেল রুদ্রাংশুকে । কারণটাও বলল । আগের দিন সবার সামনে তাকে বকে ছিল বলে । আলাদা করে বলতে পারতো । বাড়িতে কেউ কোনোদিন তাকে বকে নি । আর রুদ্রাংশু সবার মাঝে তাকে ঐভাবে বলল । তার খুব খারাপ লেগেছিল । আর বলল, সে ইচ্ছে করেই এবসেন্ট হচ্ছে । যাতে নাটকটা ঝুলে যায় । কাকলির কথা শুনে রুদ্রাংশু তো অবাক । বলে কি এই মেয়ে ? এটা কি রুদ্রাংশুর ব্যক্তিগত ব্যাপার ? নাটক ঝুলে গেলে পুরো ক্লাসের বদনাম হবে । মেয়েটা কি সেটাও বুঝতে চাইছে না । যদি কাকলি সত্যি এরকম করে তাহলে খুব বিচ্ছিরি হবে । টেপ রেকর্ডার জোগাড় হয়ে গেল । শুভদীপ বলে ছেলেটি এনে দিল বাড়ি থেকে । রোজ রোজ আনা অসম্ভব বলে ম্যাডামের কাছে রেখে দেওয়া হল । ম্যাডামের গাড়িতেই থাকতো ।
একদিন রুদ্রাংশু শেক্সপিয়র সরনী ধরে হেঁটে আসছে । দেখে গোর্কি সদনের বিপরীত দিকে মাদ্রাজি রেঁস্তোরার সামনে কাকলি আর একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে । ওপার থেকে চিৎকার করে হাত নেড়ে ডাকছে রুদ্রাংশুকে । কী ব্যাপার ? জানতে চাইল রুদ্রাংশু । কেন ব্যাপার না থাকলে কী আসতে নেই ? ঠিক আছে যেতে পার । সরি । ভুল হয়ে গেছে । হেসে ফেলল রুদ্রাংশু । বলল, আযম সরি । বল । কেন ডাকলি ? ধোসা খাবি ? মিট মাই ফ্রেন্ড সোনিয়া । আমার সাথে লেডি ব্র্যাবোনে পড়ে । তোর কথা বলেছি । ও এসেছে তোর নাটক টেপ করতে । আর একটা উদ্দেশ্য অবশ্য আছে । তোকে দেখতে । মানে ? আমি কী চিড়িয়া খানার বাঘ না ভাল্লুক যে আমাকে দেখতে লোক আসছে । এবার সোনিয়া মুখ খুলল , সত্যি কথাটাই বলে দিই । কাকলি চোখ মোটা করে তাকিয়ে ওকে নিষেধ করলো । এরপরে ধোসা খেতে খেতে কাকলি বলল , রুদ্রাংশু যেন আর কোনোদিন ওকে এভাবে না বকে । অন্য যে কেউ হলে সে বুঝিয়ে দিত । কিন্তু রুদ্রাংশু আলাদা । ও বাড়িতে গিয়ে কেঁদেছিল । রাগের চোটে এই টেপ টা ছুড়ে ফেলেছিল মেঝেতে । আজকে ওটা সারাতে নিয়ে এসেছিল । এখন ঠিক আছে । রুদ্রাংশু এটা নিতে পারে । রুদ্রাংশু জানালো আর প্রয়োজন নেই । শুভদীপ ওরটা দিয়েছে ।
সোনিয়া পুরো নাটকটাই টেপ করলো । ভালোই হয়েছে । প্রযোজনার খরচ স্বরূপ সবাইকে টাকা দিতে হবে । প্রত্যেকেই ১০০ টাকা করে দিলেই হবে । প্রয়োজনীয় খরচ করার পর যে টাকা বাঁচবে সেটা দিয়ে নাটকের পরে খাওয়া হবে । অভিরূপকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল টাকা তোলার এবং খরচ করার । সবাই টাকা দিল একমাত্র কাকলি ব্যতিক্রম । ও দেয় নি । খুব রেগে গেছিল অভিরূপ । কাকলি বলে ছিল তোমাকে না । টাকাটা দেব রুদ্রাংশুকে । দেখ রুদ্রাংশু , রেগেমেগে বলেছিল অভিরূপ , তোদের ব্যাপার তোরা বুঝে না । আমাকে জড়াবি না । এসব ন্যাকামি আমার সহ্য হয় না । রুদ্রাংশুকে দেব । কেন , সে কে , তোমার নাগর ? তারপরেই একটু অশ্লীল ইঙ্গিত করলো অভিরূপ । তোমার জিনিস যা কে খুশি তাকে দাও । তাতে আমার কী ? ও জিনিস বাজারে অনেক পাওয়া যায় । সুদেষ্ণা ধমক দিয়ে উঠলো অভিরূপকে । ঠিক ভাবে কথা বল অভিরূপ । সীমা ছাড়াস না । চুপচাপ ক্লাসে চলে গেল রুদ্রাংশু । নিজের সীটে বসে বই বের করে পড়তে লাগলো । ক্লাসের শেষে কাকলি ডাকলো রুদ্রাংশুকে । বলল, টাকাটা নেবে না ? এই প্রথম কাকলি রুদ্রাংশুকে তুমি বলল । কি হলো চুপ করে আছ যে ? এক এক করে সবাই চলে গেল । শুধু বিশ্বজিৎ বলল , আমি গেটের কাছে অপেক্ষা করছি । রুদ্রাংশু বলল , তুই অভিরূপকে কী বলেছিস ? বলছি । তার আগে বল তুমি । সমস্ত শরীর কেঁপে উঠলো রুদ্রাংশুর । কি রকম নার্ভাস লাগছে ।
প্রেমের প্রথম পাঠ ‘তুমি ‘ দিয়ে শুরু । জানা অজানা প্রচুর মানুষকে তুমি বলা যায় । কোনো অসুবিধা হয় না । কিন্তু কাকলিকে তুমি বলতে কেন যে এত বাধ বাধ ঠেকছে বুঝতে পারছে না সে । এটা সবারই জানা যে তুমির খাড়িটা একবার ডিঙাতে পারলেই সামনে মহানদী তার টানেই তির তির করে এগিয়ে চলবে প্রেমের পাল তোলা নৌকো । মনে সমস্ত সাহস সঞ্চয় করে ‘ তুমি ‘ সম্বোধনটা করেই বসলো রুদ্রাংশু । হ্যা , এবার বলো ,অভিরূপকে তুমি কী বলেছ ? কিছু বলিনি । শুধু বলেছি যে টাকাটা আমি রুদ্রাংশু কে দেব । কিন্তু কেন ? আমরা সবাই মিলে তো ঠিক করেছি টাকা জমা রাখা হবে অভিরূপের কাছে । আমাকে কেন ? দেখ রুদ্রাংশু , এত কেনর উত্তর দিতে পারবো না আমি । আমার ইচ্ছা আমি দিই নি । বেশ করেছি । আর একটা কথা তোমাকে স্পষ্ট করে বলে দিচ্ছি । ন্যাকামি আমি করি বটে । তবে তোমার সাথে না । আমি তোমাকে ভালোবাসি । আমার যত কথা সব তোমার সাথে । ওরা কি ভাবলো তাতে আমার বয়েই গেল । এই নাও । টাকাটা ধরো । এরপর একদম শোয়ের দিন আসবো । ও আর একটা কথা । সেদিন নাটকটা ঝোলাবার কথা বলে ছিলাম । ওটা তোমার ওপর রাগ করে ছিলাম বলে । এখন আর রাগ নেই । নাটকটা যাতে খুব ভালো হয় , তোমাকে যাতে সবাই প্রশংসা করে আমি সেটাই করবো । তোমার জন্য আমার গর্ব । গুড নাইট ।
নাটকটা খুব সুন্দর ভাবে উৎরে গেল । সবাই ভালো অভিনয় করছে । পাভেলের মায়ের ভূমিকায় কাকলি এক কথায় অসাধারন । রুদ্রাংশুর তেজদৃপ্ত অভিনয় এবং সুনিপুন পরিচালনা নাটকটাকে নিয়ে গেছে এক অন্য মাত্রায় । কনস্যুলেট জেনারেল স্বয়ং এসে জড়িয়ে ধরলেন রুদ্রাংশুকে । বললেন , দিল্লিবাসীকে এই নাটক দেখাব আমি । তোমাদের নিয়ে যাব দিল্লিতে । আমি অত্যন্ত আনন্দিত । তোমাদের সবাইকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা । একে একে সবাই এসে অভিবাদন এবং করমর্দন করে গেল রুদ্রাংশু সাথে । ম্যাডাম নিজেও খুব প্রশংসা করলেন । গ্রিনরুমে মেক আপ তোলার সময় প্রবেশ করলো কাকলি । সবার সামনে জড়িয়ে ধরে নিজের নরম রঙিন ঠোঁট টা ডুবিয়ে দিল রুদ্রাংশুর ঠোঁটে । প্রলম্বিত চুম্বনের শেষে বলল , কী , আমি কথা রেখেছি তো ? তুমি খুশি তো ? আমি দারুন খুশি ।
কিন্তু খুশি হয় নি একজন । সে সুদেষ্ণা । মনে মনে যে এতদিন ভালোবেসে এসেছে রুদ্রাংশুকে । একদম নীরবে ,নিঃশব্দে । কেউ জানতে পারে নি ঘুনাক্ষরেও । আজ আর সে পারেনি নিজেকে ধরে রাখতে । তার কাছ থেকে রুদ্রাংশুকে কেড়ে নিল কাকলি । এ তার পরাজয় । মনের সমস্ত বেদনা প্রকাশ পেল চোখের জলে । কোনো কথা না বলে অতি শান্ত স্বভাবের মেয়ে সুদেষ্ণা মাথা নিচু করে চলে গেল । দৃষ্টি এড়ায়নি রুদ্রাংশুর । কাকলির কাছ থেকে ছাড়া পেয়ে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ির পথে পা বাড়ালো । আজকে একা । বিশ্বজিৎকে অজুহাত দেখিয়ে পাশ কাটালো । বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে ধরলো সুদেষ্ণাকে । হাওড়ার বাস তখনো আসে নি । কাছে গিয়ে দাঁড়ালো । সুদেষ্ণার চোখে চোখ রেখে বলল , আমি তোমায় ভালোবাসি । তুমি আমার প্রেম । আমি কাকলির পাশ টাইম । বড় লোকের মেয়ের গাড়ি বদলানোর মত খেয়াল । কালকে ভালো না লাগলে আর একটা নতুন নেবে । এটা প্রেম নয় । এক ধরনের আসক্তি । তাই কোনো আগ্রহ বোধ করিনি ওর ডাকে সাড়া দিতে । তোমার দু-ফোঁটা চোখের জল আমায় বুঝিয়ে দিল আমার প্রতি তোমার প্রেম ঝুট মুক্ত নয় ,সকালের শিশির ভেজা গোলাপের পাপড়ি । স্নিগধ ,সুন্দর , সুবাসিত । একথা এতদিন বলি নি তার কারন তোমার দৃঢ় ব্যক্তিত্ব । সাহস পাই নি । আজকে অনুভব করলাম আমার প্রতি তোমার প্রেম । দু-ফোঁটা চোখের জল আমাকে বুঝিয়ে দিল তুমি আমাকে কতটা ভালোবাসো । এই দুর্লভ মুহূর্ত আমি নষ্ট করতে চাই নি । তাই ছুটে এসেছি । সুদেষ্ণা নিজের অজান্তেই রুদ্রাংশুর হাতে একটু চাপ দিয়ে ছুটলো হাওড়াগামী মিনিবাসটা ধরতে । ফুটবোর্ডে পা রেখে ঘাড় ঘুরিয়ে ছড়িয়ে দিল মিষ্টি হাসি তারপর অদৃশ্য হয়ে গেল ভিড়ের ভেতর ।