যেও না রজনী ওগো নবমীর নিশি,
সাথে লয়ে মোর যত হৃদয়ের খুশী।
প্রভাতের জাগরণে উমার বিদায়,
কেমনে সহিব আমি বল তুমি হায় !
নীহারিকা সাথে যবে যাবে অন্তরালে,
নির্দয় বিভাবসু উদিবে খগোলে,
স্বর্ণদীপ যাবে সবে একে একে নিভে,
তাই কহি হে রজনী রহ তুমি এবে।
উমা বিনা আমি যেন মণিহারা ফণী,
আর্তস্বরে কহিলেন গিরীশের রাণী।
মেনকার আর্তরবে রজনী কহিলা,
শান্ত হও হে দেবী,অশ্রু করো রোধ,
বুঝি আমি রাণী তব বিরহের জ্বালা,
তাই বুঝি জননী হায় এমতই বোধ।
কিন্তু নিরূপায় আমি,যেতে মোরে হবে–
তারাদল সাথে আজি ঊষশীর কালে,
বিধির বিধান জেনো অমোঘ এ ভবে,
প্রভাত উদয় হয় রজনী পোহালে।
জানি রাণী তব হিয়া বিদীর্ণ করি’,
উমা যাবে স্বামীগৃহে দিবা অবসানে,
তমসায় আচ্ছন্ন হবে সারা রাজপুরী,
আঁখিজল টলমল দুহিতা বিহনে ।
হয়ত এ রজনীরে দিবে অভিশাপ,
মোর বর্ণ যেন হয় আরো কৃষ্ণকায়,
তথাপি কিমতে করি সত্য অপলাপ !
নিয়মের নিগড়ে বাঁধা আমি নিরূপায়।
মাত্র কয়েকটি দিন কন্যা সঙ্গ করি’,
চিত্ত তব অপূর্ণ হায় হে গিরীশ ঘরণী,
তব আর্তি করে মোর হৃদিপট ভারী,
জ্বালায়েছে সেথা এক সুতীব্র বহ্নি।
যন্ত্রণা লয়ে আজি লভিনু বিদায়,
রজনী মাগিছে ক্ষমা মেনকার সনে,
নবমীর নিশা শেষে তপন উদয়,
নিভাও এ দীপ মাতা তব গেহকোণে।