গ্রীক নরপতি সিকান্দার দিগ্বিজয়ের হর্ষে,
বিশাল সৈন্যবাহিনী সাজায়ে আসেন ভারতবর্ষে,
ভয়ানক সব অস্ত্রশস্ত্রে সেনাদল সজ্জিত,
খণ্ড খণ্ড ভারতভূমির ভূপগণে শঙ্কিত।
যুদ্ধ ঘোষণা না করি তাঁহারা বশ্যতা লন মানি,
ভারতবাসীর ভীরুতা–হাসে হরষিত গ্রীক সেনানী।
উচ্চহাসিতে শুধান নৃপতি – হেথায় কি নাহি বীর!
সমুখ সমরে আসিবেন যিনি রাখি উন্নত শির!
সিকান্দারের সদম্ভোক্তি–ভারতমাতার লজ্জা,
সহিতে না পারি বীর পুরুরাজ করিলেন রণসজ্জা।
গ্রীক নরপতি,পুরু অধিপতি–শুরু হয় মহারণ,
কলরবে রণক্ষেত্র মুখর–অস্ত্রের ঝনঝন।
হস্তীপৃষ্ঠে যুদ্ধ করেন শূর পুরু অধিপতি,
প্রকৃতি বিরূপ–বর্ষা তাঁহার সংগ্রামে টানে ইতি।
বীরতার সাথে সমুখ সমর–তথাপি যে পরাভূত,
শৃঙ্খল পরি’ সিকান্দারের সভার মাঝারে আহূত।
বন্দী রাজনে দর্পিত স্বরে শুধান সিকান্দার,
মোর সনে আজি প্রত্যাশা তব কি প্রকার ব্যবহার !
উন্নত শির, দৃপ্ত কণ্ঠ – উত্তরে পুরুরাজ,
রাজার নিকট রাজার মতই আচরণ চাহি আজ।
স্পর্ধিত এই উত্তরদানে গ্রীক নৃপ পুলকিত,
মুক্ত করেন বন্দীরে তিনি–আভাষণ নৃপোচিত।
স্থাপন করেন পুরুরাজ সাথে আজীবন সখ্যতা,
অবসান হয় উভয়ের মাঝে দ্বেষভাব,বৈরীতা।
পরের কাহিনী হৃদয়ে জাগায় মর্মবেদনা অতি,
পুরুরাজ সাথে যুদ্ধে তাঁহার হয় বহু ক্ষয়ক্ষতি,
সৈন্যদলের টুটে মনোবল–রণসাধে আসে শ্রান্তি,
ভারতবিজয়ে অসফল হায়–সংগ্রামে দেন ক্ষান্তি,
ফিরিয়া চলেন ভগ্ণহৃদয়ে মাতৃভূমির পথে,
বীর গ্রীকপতি সিকান্দার সৈন্যবাহিনী সাথে।
পথমাঝে হায় শমন তাঁহারে লয় কাড়ি চিরতরে,
দিগ্বিজয়ী ভূষণ তাঁহার–ইতিহাস আজও স্মরে।