আজ সারাদিন মেঘলা। মাঝ দুপুরে আকাশ থেকে ঝরে পড়া তীব্র দহনের বদলে মেঘের সামিয়ানায় ঘেরা আকাশ। চারপাশে পড়ে রয়েছে
এক দীর্ঘ বিকেলবেলা।
এই বিকেলে হুটোপুটি নেই, “জল কুমারি, জল কুমারি, পা ধুয়ে দে,_” এই রকম আবদার নেই, চু কিত কিত নেই বা দল বেঁধে চানাচুর কিনতে যাওয়া নেই।
এই রকম অসময়ের তৈরি হওয়া বিকেলে তাপমাত্রা বেশ কমে গিয়ে কেমন যেন ঝিমঝিমে ছায়াছন্ন ভাব। এই মেঘলা দুপুর কখনও বা বৃষ্টি আছে কখনও বা নেই তবু সূর্যর অনুপস্থিতির কারনে বড় যেন চুপচাপ চুপচাপ। এই নিটোল চুপচাপের মধ্যে হয়ত ভেসে উঠল পানকৌড়ির মত একটা কাক বা শালিকের ডাক। আবার চুপচাপ।
আমি এই ছায়া ছন্ন দুপুরের মধ্যে দেখতে পাই বিকেলবেলা। বড় মিষ্টি, খুব সুন্দর ছিল এই শব্দ টা একসময়। বি-কে-ল!
– আজ বিকেলে রাঙ্গা পিসির বাড়ি যাবো।
-বিকেলে খেলতে যাবো শিমূল ডাঙার মাঠে।
-বিকেল গুলো শিয়ালকাঁটা ফুল দিয়ে ক্যামন সাজানো দেখো! আর দেখেছো কি এমন বিকেল ঘেঁটু ফুলে ফুলে সাদা হয়ে যাওয়া বনের পাগল করা রূপ!
-বিকেলের আকাশ ঘুড়ি দিয়ে সাজানো।
-বিকেল মানে বুড়ি বসন্ত। বিকেল মানে কবাডি কবাডি। বিকেল হল খেলার বেলা। বিকেল মানে নেই কোন শাসন বারণ।
-একটু পরে। বিকেল হল হলুদ বরণ। কনে দেখা আলো, আবছা লজ্জা আর কুমকুমের টিপ। বিকেল তখন কৃষ্ণচূড়ার রঙ, বিকেল তখন মুঠোভরা আবির।
-বিকেল আমার শৈশব কোহিনূর, বিকেল আমার পরাগ ভাসার বেলা!