সুখ দুটি ছোট্ট বর্ণ কিন্তু বিশাল ব্যাপ্তি,
তাকে ধরা বড়ই কঠিন, হয় না কারো প্রাপ্তি।
এই জগতে যতই থাকুক ক্ষমতা আর অর্থ,
সুখের চাবি খুঁজতে গিয়ে হয়ত তিনি ব্যর্থ।
আর অসহায় যে দরিদ্র বেদম জীবনযুদ্ধে,
তার সুখও লুকিয়ে থাকে মরীচিকার মধ্যে।
সুখকে যদি পেতে যাও হাসো হৃদয় থেকে,
প্রাণভরে সব লও হে শ্বাস সৎ সঙ্গসুখে।
দেহের সাথে মনের ব্যায়াম জানবে জরুরী,
প্রকৃতির সঙ্গে যেন হয় না কভু আড়ি।
অনধিকেই তুষ্ট হবে আধিক্যেই সংকট,
অনিদ্রা আর অজীর্ণের জীবন জুড়ে জট।
এক দু:খীর জীর্ণ কুটীর ধনীর হর্ম্য পাশে,
রাতের বেলায় ধনীর চোখে ঘুম আসে না ত্রাসে।
অথচ সে দেখত দুখীর না জুটলেও ভাত,
রাতের বেলায় ঘুমের তার ঘটতো নাকো ব্যাঘাত।
ভাবেন ধনী আমার এত অর্থ প্রতিপত্তি,
তবুও কেন রাত্রে ঘুম হয়না একরত্তি !
আর দুখীর ঘরে নিদ্রাদেবী কেমন করে বন্দী !
ভেবেচিন্তে অবশেষে আঁটেন ধনী ফন্দী।
দুখীর হাতে দিলেন তিনি অনেক সোনার মোহর,
মোহর পেয়ে দুখীর তখন কি খুশীর বহর !
কিন্তু দুদিন বাদেই সব মোহর ধনীর হাতে দিয়ে,
বললে দুখী – কি করব এত অর্থ নিয়ে !
যেদিন থেকে পেলেম আমি মোহরগুলি হাতে,
সেদিন থেকেই ঘুমটি আমার হারিয়ে গেল রাতে।
আধপেটাই অনেক ভালো হোক না যতই কষ্ট,
সুখ অসুখের দ্বন্দ্ব মাঝে ঘুম হবে না নষ্ট।
জ্ঞানী গুণী মানুষ অনেক–হয়ত খুবই মানী,
কিন্তু তবু সুখের দেখা পেয়েছেন কি তিনি !
আবার যে অজ্ঞানী আর অবোধ তথা নি:স্ব,
তার কাছেও দেয় কি ধরা সুখের গোটা বিশ্ব !
তাই ত’ বলি সুখকে পাওয়া সত্য কঠিন অতি,
সুখের দেখা মেলে বুঝি নিভলে জীবনজ্যোতি।
————————————————————
স্বপন চক্রবর্তী।