দশমীর সকাল।
পুজো মন্ডপে পাড়ার মহিলারা মেতে উঠেছে সিঁদুর খেলায়। দূর থেকে দাঁড়িয়ে তুলি দেখছে সবার মাতামাতি। তারও বড় ইচ্ছা বিয়ের পর তার সিঁথি লাল রঙে রাঙিয়ে তোলার। ভাবতে ভাবতেই তার মন রোমাঞ্চিত হয়ে উঠছিল।
এমন সময় কোথা থেকে প্রদীপ এসে হাজির। তুলি অবশ্য ছোট থেকেই দীপদা বলেই ডাকে। প্রদীপের হাতে সিঁদুর দেখে প্রায় হেসেই ফেলল তুলি।
– “কি গো দীপদা তুমিও সিঁদুর খেলবে বুঝি?”
কিছু না বলেই তুলির হাতটা ধরে প্রদীপ তাকে মন্দিরের পিছনে নিয়ে গেল। সিঁদুর দিয়ে রাঙিয়ে দিল তার সিঁথি। অবাক হয়ে তুলি চেয়ে রইল প্রদীপের দিকে।
– “তুমি আমায় সিঁদুর পরালে কেন দীপদা? বাড়িতে গিয়ে কি জবাব দেবো?” প্রায় কাঁদো কাঁদো ভাবে জিজ্ঞেস করে তুলি।
তুলিকে একটু কাছে টেনে এনে প্রদীপ বলে, “সেই ছোট্টবেলা থেকেই তো তুই আমারই; মনে আছে যখন তুই বর-বউ খেলতিস আমি তোর বর হতাম।”
– “তা বলে এরকম ভাবে কেউ সিঁদুর পরাই”,শিশুর মত বলে ওঠে তুলি।
– “তোকে আজ সিঁদুর পরে ভারি সুন্দর দেখাচ্ছে।” আবার বলে ওঠে,”তুলি,বিয়ে করবি আমায়? তোকে সুখী রাখব,কথা দিচ্ছি।”
– “ধ্যাৎ,কি যে বল না তুমি!”, এবার তুলি মুচকি হাসে। কোনোমতে হাতটা ছাড়িয়ে বলে,”বাবার সাথে এসে কথা বলো।”
যাওয়ার সময় তুলি জিজ্ঞেস করে,”আজ পাড়ায় জলসা হবে, যাচ্ছ তো?”
– “তুই গেলে নিশ্চই যাব”,প্রদীপ বলে।
লজ্জায় তুলি লাল হয়ে যায়। আর দেরি না করে ছুটে পালায়। তার আজ ভারি আনন্দ। লুকিয়ে লুকিয়ে ঘরে আয়নায় নিজেকে দেখে আজ তার পরিপূর্ণ মনে হয়।