মিথ্যা বলে-“সত্য তুমি বড়ই সরল,
বুঝিতে পার না মোর হিয়ার গরল !
সাদা মনে মোর বাক্যে করগো বিশ্বাস,
তাহার সুযোগে করি তব সর্বনাশ।”
হাসিয়া সত্য কহে-“শুন প্রবঞ্চক,
বিশ্বাসে মিলায় বস্তু–তর্কে নাহি শখ।
মোর ধর্মে রব আমি সদা অবিচল,
যতই কর না মিথ্যা মোর সনে ছল।”
মিথ্যা তবু লজ্জাহীন–কুম্ভীরাশ্রু চোখে,
বলে-“সত্য, ক্লিষ্ট আমি তোমার অসুখে,
মোর এত মিথ্যাচার তথাপি এ স্তুতি,
সত্য তুমি বাস্তবে নির্বোধ অতি।”
সত্য বলে-“উক্তি তব সর্বাংশে সত্য,
পদে পদে অনুভব করি তাহা নিত্য।
তব সাথে সখ্যতাই ছিল মোর ভ্রম,
তুমি এক দুরাচারী ধৃষ্ট নরাধম।
তবে ধর্ম অধর্ম রণে অধর্মেরই নাশ,
এই সত্যে আছে মোর চির বিশ্বাস।”
মিথ্যা কহে-“কলিযুগে চিত্র বিপরীত,
এখন ধর্মের হার, অধার্মিকে জিত।”
সত্য হাসে-“আজ যাহা ভাবিতেছ জয়,
কল্য তাহাতে তব নিশ্চিত লয়।
ইতিহাসে ভুরি ভুরি আছেই প্রমাণ,
মিথ্যার অবসানে সত্য উত্থান।”
যুগে যুগে সত্য মিথ্যা চলে এই দ্বন্দ্ব,
আপনারে জয়ী ভাবে যাহা কিছু মন্দ।
ন্যায় তথা সত্যপথে যে রহে বিশ্বাসী,
পরিশেষে জানিবে সে হাসে শেষ হাসি।