ভাবনা আমার, আমাদের, সবার, কবে করোনার অবসান হবে, কবে স্বাভাবিক জীবন ও জীবনযাপন ডানা মেলবে। খাঁচায় বন্দী পাখির ডানা স্তব্ধ হয়ে আসে, নিঃসংগতা তাকে জড়িয়ে ধরে, প্রতিদিনের জীবন বন্দী দশা ছিড়ে ফেলতে চেয়েও অপারগ। ভাবনা বেরঙিন জীবনের বার্তা দেয়। ভাবনায় স্থবিরতা স্থান পায়,গতি চোরাবালিতে হাসফাঁস করে চলেছে। সলিলসমাধি নয়, বেচে বর্তে থাকার লড়াইয়ে ভাবনাকে সতেজ রাখাই জীবন।

ভাবনা চড়কির মত ঘুরপাক, আকাশে উড়ান দেবে ইচ্ছে ডানা মেলে, অপেক্ষায় দিন গুনছে। ভাবনার পরিধি বর্ধিত হতে থাকে, শেষ হয় না, লকডাউনের গুতো কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। ভাবনায় ছাতা বা মরচে পড়তে না দেওয়া, ভাবনা জাগ্রত রাখার পরম ধর্ম পালন করে চলেছে লকডাউন। লকডাউন ছুতো খুঁজছে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে। অছিলা খোঁজ করে ফাঁক ফোকর গলে গল্পের গরু গাছে তুলবে, নতুবা আষাঢ়ে গল্প ফাদবে। ভাবনায় ফোড়ন পড়েছে। ভাবনা কখনো 180 ডিগ্রি ঘুরে যাচ্ছে নতুবা ডিগবাজি খাচ্ছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এখন তখন বক্তব্য।

ভাবনা এখন একটি বিন্দুতে দাড়িয়ে, ভ্যাকসিন আগমনে বা ল্যান্ডিং কোন দিন,তিথি, ন্খএে ঘটবে। অন্তত ভ্যাকসিন ভাবনা থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যাবে। ভাবনায় নারদ নারদ, চিন্তার ভাঁজ ফেলা মিডিয়ার কেরামতি কমবে, ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে। চ্যানেলের ম পেতে শ্রোতাদের আটকে রাখার ফন্দি ফিকির থেকে বাঁচা যাবে। বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠার পন্ডিমন্য ভাব চ্যানেলগুলো দেখানোর সুযোগ পাবে না।

2

অফিস যাচ্ছি, অফিসের কাজ করছি, বাধো বাধো করে। বাধ্য বাধকতার বেড়াজালে আটকে আছি। আসি যাই মাইনে পাই’র দিন শেষ, ধারণা অফিস ঘরানায় ঢুকি ঢুকি করে অনধিকার চর্চায় ঢুকতে পারেনি। কারণ করোনা থাবা বসিয়েছে।

স্বাভাবিক অফিস দিনগুলো চোখের সামনে থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। সেই দিন গুলো হাতড়ে পেতে হবে না, বেশি দিন পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না, খালি ফিরে পাওয়া কষ্টকর ও কষ্টসাধ্য। মাস্ক যে ব্যবহার করতে হত না, ফাইল, দরজার হাতলে হাত রাখলে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়ার চিন্তা করতে হত না।

অফিসের সহকর্মীদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখার ভাবনা ছিল না। অফিসারের ঘরে ঢুকতে গেলে নিয়মের যাঁতাকল ছিল, এখন নিজের নিরাপত্তার ভাবনা। কতজন আধিকারিকের ঘরে আছেন উকি দিয়ে দেখার প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছাএছাএীদের আনাগোনা কম একটা দুশ্চিন্তা কমেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস নতুন করে আবিষ্কার করার সময় এসেছে। নীরবতা, নির্জনতা শ্মশানকে হার মানাবে।

আধিকারিকদের মিটিং চলছে ভিডিও কনফারেন্সে। করোনা বিধি মেনে অফিসে প্রবেশ পথে স্যানিটাইজার রাখা হয়েছে, কোনদিন যার অস্তিত্ব প্রয়োজন ও প্রয়োগ করতে হয়নি। চিন্তা করতে হয়নি কাজের জায়গায় এত জটিলতা নিয়ে পদে পদে চলতে হবে। দড়ি দিয়ে সীমানা চিহ্নিত করে ভিজিটরদের সাথে দূরত্ব বিধি বজায় রাখার পথ উদ্ভাবন করতে হয়েছে, ঠেলায় পারে।

কাজ করতে যাচ্ছি, সাবধানতার কথা মাথায় রেখে সহকর্মীরা সংক্রমণ থেকে দুরে থাকতে একদিন অন্তর অফিসে আসছেন। কেউ অফিসে আসছেন না ওজর,আপওি ও বড়িতে বয়স্ক সদস্যের নিরাপত্তা সামনে এনে।

কাজের স্বাভাবিক সময়ের অফিস সম্ভবপর হচ্ছে না। নিজের সুবিধাজনক গন্ডিতে আবদ্ধ থেকে অফিস রোজনামচা চলছে। জোরাজুরি বা অফিসের নিয়ম ও সময় শিথিলতা এসেছে। নিত্যযাত্রীদের অফিসে ছাড় দিয়ে রাখা হয়েছে, স্থানীয় কর্মীদের কোন নিয়ম গন্ডিতে বেধে রাখার চেষ্টা হয়নি।

 

~ শঙ্কিত ~

Print Friendly, PDF & Email
Previous articleবুক স্টল
Next articleবন্দী মন
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments