চোখের মণির ওপর গাঢ় রঙের তুলির ছোঁয়াটা দিয়েই মৃগাঙ্ক বুঝতে পারলো ছবিটা এইবার মনের মতো হয়েছে। ওর ছবিতে সব সময় চোখ একটা গুরুত্ব পুর্ণ ভুমিকা পালন করে। তাই বলে সেটা পিকাসোর প্রভাব নয় বরঞ্চ বলা যায় বেশ খানিকটা সাবেকী। ওর বন্ধুরা বলে “শুধু চোখের এক্সপ্রেশন ফুটিয়ে তুলে তুই একদিন বড় শিল্পী হবি। “ছোট বেলা থেকে মৃগাঙ্ক ৱ্যাফায়েল, লিওনার্দোর বিখ্যাত ছবিগুলো স্টাডি করেছে দিনের পর দিন। ‍এই মহান শিল্পীদের শিল্পকর্ম মৃগাঙ্কর কাজে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। আজকের ছবি এক ইউরোপীয় মহিলার আবক্ষ চিত্র। মহিলা মাথাটা সামান্য নীচু করে বাঁদিকে চেয়ে আছেন।

রাত এখন আড়াইটে। ছবি আঁকতে বসলে মৃগাঙ্ক নাওয়া, খাওয়া, ঘুম ভুলে যায়। শুতে যেতে দেরী হলেও সকালে উঠতে দেরী হয়না। মনের গভীরে যে ছবিটা আঁকা হয়ে গেছে তাকে ক্যানভাসে ফুটিয়ে না তোলা পর্যন্ত বিশ্রাম নেই। ছবিটার চোদ্দ আনা কাজ শেষ করে এবার সে শুতে যাবে আজকের মতো। ছবির মুখোমুখি বসে নিজের ছবিকে শেষ বারের মতো স্টাডি করছে মৃগাঙ্ক। রাতের নিস্তব্ধতা মাঝে  মাঝে ভেঙে চলেছে একদল কুকুরের ডাক।মহিলার চোখের পাতাটা একটু কি পড়লো? মৃগাঙ্ক বুঝতে পারলো বেশ কয়েক রাত না ঘুমিয়ে ও ভুল দেখছে। নাঃ, এবার সে উঠবে। আলো নেভাতে সুইচের দিকে হাত বাড়ালো।  “চাও”… … এক বিদেশিনীর কন্ঠ। মৃগাঙ্ক পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো। ছবিটা একই রকম আছে কি?  মুখে যে বিষন্নতা সে ফুটিয়ে তুলেছিল সেটা একটু মৃদু হাসিতে পরিণত হয়েছে মনে হচ্ছে না?

না… এটা অসম্ভব, মৃগাঙ্ক ভুল দেখছে। এবার তাড়াতাড়ি দরজার  দিকে এগোল সে। আবার সেই কন্ঠস্বর…“চাও”। কোমে স্তাই।“ মৃগাঙ্ক এত শীতেও ঘামছে।  ছবির মহিলা বাঁদিকে চেয়েছিলেন, এখন মৃগাঙ্কর দিকে চেয়ে আছেন। চোখের মণি দুটো চকচক করছে। “কোমে স্তাই“ ঠোঁট নড়ে উঠলো ছবির নায়িকার। এই ভাষার সঙ্গে মৃগাঙ্কর সামান্য পরিচয় আছে। স্পষ্ট ইটালিয়ান বলছেন  ছবির মহিলা। চিৎকার করতে গিয়ে বুঝতে পারলো  গলা  দিয়ে স্ব্‍র  বেরচ্ছেনা মৃগাঙ্কর।সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে ওঠার সময়ও ঘরের মধ্যে থেকে মেয়েলি হাসির শব্দ শুনতে পেয়েছিল সে। স্টুডিওর দরজাটা লক করতে পারেনি তাড়াহুড়োতে।   সেই রাত্রে আর কোন ঘটনা না ঘটলেও দুচোখের পাতা এক করতে পারেনি সে।

সকালে বেশ দেরীতে স্টুডিওর দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ভেতরের অবস্থাটা একটু বোঝার চেষ্টা করলো মৃগাঙ্ক। অন্য রকম কিছু বোঝা গেল না। দরজা ঠেলতেই সরাসরি উল্টো দিকে ইজেলের ওপর ছবিটা দেখা যাচ্ছে। যেমনটা সে এঁকে ছিল ঠিক তাই আছে… মাথাটা সামান্য নীচু করে বাঁদিকে চেয়ে আছেন মহিলা। কি করবে ভাবছে মৃগাঙ্ক। ছবিটা এখনও শেষ হয়নি…সামান্য কাজ বাকী আছে। চোখটাকে জীবন্ত করে তুলেছে সে। কোঁচকানো চুলের কাজটাই বা কম কি। এতোটা না হলেই বোধহয় ভালো হতো। কয়েক ঘন্টা কেটে  গেছে, কিন্তু একটা তুলির ছোঁয়াও এই অসমাপ্ত ছবির মুখে লাগেনি।  প্রত্যেক বার চেষ্টা করে দেখেছে সে, হাত তার কাঁপছে। উত্তেজনা কমাতে লাগোয়া টয়লেটে শাওয়ারের নীচে গিয়ে দাঁড়ালো মৃগাঙ্ক।

স্নান করে একটু ভালো লাগছে তার। ছবির মেয়েটি যে ভাষায় যা বলেছে তার অর্থও সে জেনে নিয়েছে। “চাও বা CIOA” অর্থাৎ হ্যালো। আর “কোমে স্তাই বা COME STAI ” অর্থাৎ “হাউ আর ইউ”। গতকাল রাত্রের ঘটনাটা একটা দুঃস্বপ্নের মতো। মাঝে মাঝে ঠিক বিশ্বাস হতে চাইছে না। কোন ভুল হচ্ছে না তো ! দিনের পর দিন না ঘুমিয়ে অথবা কম ঘুমিয়ে তার মাথা কি ঠিক মতো কাজ করছে না? এটা কি Hallucination? কিন্তু মৃগাঙ্কর উপায় ছিলনা। ও অনেক টাকা  আগাম নিয়েছে দীনেশ আগরওয়ালের কাছ থেকে, আগামী দুদিনের মধ্যে ছবি ডেলিভারী করতে হবে। সাধারণতঃ ওর কথার খেলাপ হয় না। দীনেশবাবু বিকেলের দিকে এলেন ছবি কেমন  এগিয়েছে দেখতে। ছবি দেখে তাঁর এতো ভালো লেগেছে যে মৃগাঙ্ক রাজী হলে আজই এই অবস্থাতেই তিনি নিয়ে যেতেন। কোথায় ছবিটা অসম্পূর্ণ সেটা তাঁর চোখে ধরাই পড়ছে না।

মৃগাঙ্ক অনেক চেষ্টায় কাজে মন দিল এবং সামান্য কথার খেলাপ করে তিন দিনের মাথায় ছবিটা ডেলিভারী করলো।

এর মধ্যে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেনি। শুধুমাত্র একটি ঘটনা ছাড়া। পাশের বাড়ির বিমলবাবু মাঝে মাঝে মৃগাঙ্কর স্টুডিওয় আসেন। কোন খবর না দিয়েই আসেন এবং এক কাপ চা না খেয়ে ওঠেন না। কাজের যখন খুব চাপ থাকে তখন এই লৌকিকতা গুলো মৃগাঙ্কর ভালো লাগেনা। কিন্তু বয়স্ক মানুষ, কিছু বলা যায়না। ইজেলে রাখা অর্ধ‍সমাপ্ত ছবি দেখে মাঝেমাঝে না না মন্তব্য করেন। মাঝে মাঝে তাঁর মন্তব্য গুলো বেশ বিরক্তিকর। এইতো মাস দুয়েক আগে, একটা পোর্ট্রেটের শুরুতে ক্যানভাসের ওপর কয়েকটা রঙের টান পড়েছে মাত্র।

ঠিক সেদিনই বিমলবাবু প্রাতঃভ্রমণ সেরে হাজির। বিমলবাবুর একটা কুকুর আছে। সকালে বেড়াতে বেরিয়ে কুকুরকে সঙ্গে নিয়েই বাড়িতে ঢুকলেন। “কি মশাই এরোপ্লেন আঁকছেন নাকি? বা বা খাসা হচ্ছে তো। কিন্তু ওটা মাটির দিকে এমন গোঁত্তা খাচ্চে কেন? Crash করছে নাকি? আপনাদের এই আর্টিস্টদের ভাবনা চিন্তা গুলো কেমন যেন বেয়াড়া ধরনের। আরে মশাই এরোপ্লেন আঁকবেন আঁকুন, অমন লাট-পাট খাওয়া দৃশ্য কল্পনার কি মানে। ” উত্তরটা এড়িয়ে গিয়ে চায়ের প্রস্তাব দিতেই কথাটা আর বাড়ালেন না।

ছবি ডেলিভারীর আগে সেদিনও বিমলবাবু কুকুর সমেত হাজির হয়েছিলেন। ইজেলের ওপর সদ্দসমাপ্ত ছবিটা দেখে কুকুরটা ভিষণ ঘেউ ঘেউ করতে লাগলো। বিমলবাবু না আটকালে ছবিটার কি হাল হতো কে জানে।

এর এক দিন পরে সকালবেলা আটটা নাগাত মৃগাঙ্কর মোবাইল বেজে উঠলো। দীনেশ আগরওয়ালের উত্তেজিত কন্ঠস্বর, “তাজ্জব কি বাত মৃগাঙ্ক্‍বাবু। আপনার ছবির মধ্যে জরুর ভূত ঢুকে আছে।“ তারপরে দীনেশবাবু যা বললেন তা মৃগাঙ্ককে খুব অবাক করলো না। দীনেশ আগরওয়ালের বাড়িতেও একটা পোষা কুকুর আছে। এমনিতে সে খুব শান্ত এবং নিরীহ প্রকৃতির। কিন্তু ছবি নিয়ে বাড়িতে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে তার স্বভাব গেছে বদলে। সারাক্ষণ চিৎকার করে যাচ্ছে, তাকে বেঁধে রাখা যাচ্ছে না। এরপরের ঘটনা  আরো রোমাঞ্চকর। ছবিটা দীনেশ বাবু টাঙিয়ে ছিলেন তাঁর শোবার ঘরে। তিনি ছবিটা পেয়ে এতটাই খুশী ছিলেন যে পাশে ওঁর স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়ার পরেও একমনে দেখছিলেন…কি আশ্চর্য জীবন্ত একটা ভাব মেয়েটির মুখে।

হঠাৎ মনে হলো ছবিতে মেয়েটির চোখের পাতা দুটো নড়ে উঠলো। তার পরেই সে মাথাটা সামান্য ঘুরিয়ে দীনেশ বাবুর দিকে তাকালো। “চাও”। Buonasera (বোনাসেরা)। দীনেশবাবু এই ভাষার এক বর্ণ্ও বুঝতে না পারায় ছবির মহিলা নাকি মুচকি মুচকি হাসছিলেন। কুকুরটা রাতে বাড়িতে ছাড়া থাকে। সে শোবার ঘরের দরজায় চিৎকার করতে করতে আঁচড়াচ্ছিল। ছবি আরো কিছু কথা বলেছিল, দীনেশবাবু যা বুঝতে পারেননি। রাত্রেই স্ত্রীকে ডেকে তুলে কোন রকমে ঘর থেকে পালিয়ে যান। সকালে তিনি মৃগাঙ্ককে অনুরোধ করলেন এখনই একবার তাঁর বাড়িতে যেতে।

মৃগাঙ্ক দীনেশ বাবুর বাড়িতে পৌঁছে দেখলো অনেক লোক। এর মানে তিনি ব্যপারটা বেশ রাষ্ট্র করে ফেলেছেন এরই মধ্যে। মৃগাঙ্ককে দেখতে পেয়ে দীনেশবাবু হন্ত দন্ত হয়ে ছুটে এলেন। কোন লোকের সঙ্গে একটি কথা বলার কোন সুযোগ না দিয়ে মৃগাঙ্ককে একটা ঘরে ঢুকিয়ে নিলেন। ঘরের দেওয়ালে মৃগাঙ্কর আঁকা ছবিটা ঝুলছে। বোঝা গেল এইটাই দীনেশবাবুর শোবার ঘর। দেওয়ালে টাঙানো ছবিতে কোন পরিবর্তন মৃগাঙ্কর চোখে পড়ল না। দীনেশবাবু গতকালের অভিজ্ঞতা সবিস্তারে বিবরণ দেবার পর বললেন, “আপনি বহুত কষ্ট করে ছবিটা আমার জন্যে এঁকেছেন। কিন্তু আমার ব্যাড লাক, এই ছবির মধ্যে ব্যাড স্পিরিট ঢুকে বসে আছে। হামার ফেমিলী ভি অসান্ত্‍ হয়ে যাচ্ছে। আমি রোপিয়া ফিরৎ চাইনা। কিন্তু এ ছবি আপনি ফিরৎ লিয়ে আমাকে রিলিফ দিন। এ ছবি আমার ঘরে এতক্ষণ থাকবে তো আমার সব বরবাদ হয়ে যাবে।

ছবিটাকে একটা ফ্রেম সমেত কাগজে মুড়ে ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে বাড়িতে  নিয়ে চলে আসতে বাধ্য হয়েছিল মৃগাঙ্ক। একটা অশুভ ঝড় বয়ে চলেছে, কখন থামবে এই ঝড় মৃগাঙ্ক জানেনা। ছবিটা কাগজের মোড়ক থেকে বের করতে হাত ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে মৃগাঙ্কর। ছবিটাকে নিয়ে দৌড়ে ছাতে উঠে গেল। কাগজের মোড়ক থেকে ধীরে ধীরে বের করে আনলো ছবিটা। জল রঙে আঁকা ছবির বিদেশিনী, মাথাটা সামান্য নীচু করে যেমন চেয়েছিলেন সেইরকমই চেয়ে আছেন বাঁদিকে। ছাতের বাগানে জল দেবার জন্যে যে কলটা আছে তার সামনে এসে দাঁড়ালো মৃগাঙ্ক।

মৃগাঙ্ক কি যেন ভাবছে। কিন্তু ভাবার বেশী সময় নেই। সন্ধে নামছে। ছবির বিদেশিনীর জেগে ওঠার সময় এগিয়ে আসছে। কলটা খুললো মৃগাঙ্ক। ঝর ঝর করে জল পড়ে তার পা ভিজে যাচ্ছে। ছবিটাকে মেলে ধরলো জলের ধারায়। সব রঙ ক্রমশ ধুয়ে যাচ্ছে…একটা হালকা ছাপ শুধু গিয়েও যেতে চাইছেনা। একটা কান্না বুকের কাছে এসে যেন আটকে আছে মৃগাঙ্কর। চিলে কোঠার ঘরের দরজা খুলে ছুঁড়ে ভেতরে ফেলে দিলো ছবির ফ্রেম সমেত বোর্ডটা। অন্ধকার হয়ে এলো ছাতে। ছাতের দরজা বন্ধ করে সিঁড়ি বেয়ে মৃগাঙ্ক নীচে নেমে এলো তাড়াতাড়ি।

আজ প্রায় দুমাস হলো মৃগাঙ্ক একবারের জন্যে তুলি ধরেনি। ওঠিক করেছে ছবি আঁকার সাবেকী স্টাইলটা থেকে বেরিয়ে আসবে। আধুনিক ঢঙে ছবি আঁকবে। আধুনিক ঢঙে রিয়েলিস্টিক কিছু থাকে না। এত ডিটেলের প্রয়োজন হয় না। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পালা সাঙ্গ করে মৃগাঙ্ক পরের তিন মাসে আধুনিক স্টাইলে ছবি আঁকলো সাতটা। এগুলো বিক্রি হলো অনেক দামে। যদিও এখন ছবি এঁকে তার পকেট ভরতি হচ্ছে অনেক বেশী কিন্তু মন ভরছে না।

বিমলবাবু একদিন এলেন। মৃগাঙ্কর সাম্প্রতিক কালের ছবি দেখে তার ভবিষ্যৎ সম্মন্ধে যথেষ্ট হতাশা ব্যক্ত করলেন। বললেন, “এগুলো কি ছাই-পাঁশ আঁকেন বলুন দিকিনি? ঐ যে সব গাছপালা, বাড়ি, গোরু-ছাগোল ওসব তো আমার নাতীও আঁকে। তফাতটা হলো, নাতীর ছবির মাথা মুণ্ডু কিছু বোঝা যায় আর আপনারটা বোঝা যায় না। এই ছবি আঁকার জন্যে কোন প্রতিভার দরকার হয় না মশাই। এই যদি আপনি চালিয়ে যান তাহলে আপনাকে লাল, নীল, সাদা চক-খড়ি নিয়ে ফুটপাতে ছবি আঁকতে হবে। এই আমি বলে দিলুম। আপনার কি হলো বলুন তো? খাসা হাত ছিল মশাই আপনার। সব ছেড়ে কি সব কাগের ঠ্যাং-বগের ঠ্যাং আঁকতে শুরু করলেন।

শনি চেপেচে নাকি ঘাড়ে? “মৃগাঙ্কর কানের কাছে গলা নামিয়ে প্রায় ফিসফিস করে বললেন, “আমার সন্ধানে ভালো একজন গুনিন আছে। একদম জাঁদরেল গুনিন মশাই। তার ওপর আবার হোমিওপ্যাথী ডাক্তার। চলুন দিকি একবার হাতটা দেখিয়ে নেবেন। একটা যন্ত্র বাতলে দেবে সব শনি-টনি পালাবার পথ পাবেনা।“ মৃগাঙ্ক দেখলো কথা বাড়ালেই বিপদ। ওঁর কোন কাজ নেই, অনেক কালের রিটায়ার্ড মানুষ, সুযোগ পেলে বকেই যাবেন। তার থেকে যা বলছেন বলুন, চুপ করে সায় দিয়ে যাওয়াই ভালো।

এই ক’মাসে কাজের চাপে আর আধুনিক স্টাইলটা কব্জা করতে গিয়ে ছাতের চিলে কোঠার ঘরটার কথা মৃগাঙ্ক ভুলতে বসেছিল। আজ বড্ড মনে পড়ছে তার সেই ছবিটার কথা। ছবিটা নেই, চিলে কোঠার ঘরে হেলায় পড়ে আছে সেই ফ্রেম বাঁধানো বোর্ডটা। একবার যাবে নাকি মৃগাঙ্ক চিলে কোঠার ঘরে? সিঁড়ি দিয়ে আস্তে আস্তে ছাতে উঠে এলো সে। এক পা এক পা করে এগিয়ে গেল চিলে কোঠার ঘরের দিকে। দরজাটা খুট করে খুলে ফেললো। পুরণ কব্জার শব্দে বুকটা ধরাস করে উঠলো। আলো-আঁধারির মধ্যে ময়লা মেখে মাটিতে পড়ে আছে ফ্রেমটা। গা-টা কেমন যেন ছম ছম করছে। একটা ঝিঁ ঝিঁ পোকা একটানা ডেকে চলেছে। ফ্রেমটা হাতে তুলে নিলো মৃগাঙ্ক। কিন্তু একি! ধূলোর পর্দা হাত দিয়ে সরাতেই বেরিয়ে আসছে একটা ছবি। চোখের জায়গায় কোটরে ঢোকা দুটো গর্ত সমেত যেন হাসছে একটা কঙ্কালের মুখ…মাথাটা সামান্য নীচু করে বাঁ দিকে চেয়ে আছে।

 

শেষ

~ মৃগাঙ্কর ছবি ~

 

 

Print Friendly, PDF & Email
Previous articleপ্রবাহিনী
Next articleThe thing over which we have absolute control
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments