মহামায়া জননী তাঁরে লয়ে ছিনিমিনি
নিরখিয়া প্রাণে নাহি সহে,
মর্ত্যবাসীরা ভবে কুকর্মে মত্ত সবে
চিত্ত মাঝে হায় তাহা দহে।
দেবীরে যেমতে পূজি বৃথা সেথা ভক্তি খুঁজি
চৌদিকে মাত্রাহীন জমক,
অর্থের অহংবোধ হেরি মোর কণ্ঠরোধ,
অদ্ভুত ভাবনার চমক।
পূজা বিধি জলান্জলি কদাচার ঘোর কলি
তিথি ক্ষণে নাহি উত্তাপ,
পুরোহিত ব্রাহ্মণ অশুদ্ধ মন্ত্রোচ্চারণ
সর্বত্র ঘোরতর পাপ।
সাত্বিক আহার তথা পবিত্র মনস্বিতা
এ ধরায় বুঝি আজি বিরল,
মায়ের পূজার নামে দিবা কিংবা নিশিযামে
সুরাপানে নাহি শৃংখল।
যাহাতে ইচ্ছা করি তাহাতে মুরতি গড়ি
দেবীরে যথেচ্ছ করে বন্দন,
শুভ অশুভ বোধ হারায়েছে নির্বোধ
সততই পঙ্কিল স্পন্দন।
রজতের শামিয়ানা সেথা দেবী বন্দনা
সুবর্ণ বস্ত্রে মাতৃ অঙ্গ,
অর্থের প্রাচুর্য হেরি প্রশ্ন কি রাখিতে পারি
কি হেতুক অর্থহীন রঙ্গ !
করো সবে আর্তত্রাণ মূক কণ্ঠে দাও প্রাণ
জীবের সেবাতে দেবী তুষ্ট,
অহেতুক আড়ম্বর অহমিকা নামান্তর
তাহাতে যে মাতা হন ক্লিষ্ট।
নাহি ধর্ম নাহি ভক্তি মর্ত্যে অসুর শক্তি
সর্বত্র করে বুঝি রাজ,
অনাচার অবক্ষয় পরিণাম পৃথ্বী লয়
প্রকৃতির ভয়ঙ্কর সাজ।
মোদেরই পাপের অঙ্গ যত্রতত্র সেতুভঙ্গ
অনলে সম্পদ ছারখার,
ঘুর্ণাসুর হুহুঙ্কার জরা ব্যধি সবিস্তার
চৌদিকে কেবলি হাহাকার।
ওগো মাতা মৃণ্ময়ী হও তুমি চিণ্ময়ী
আসুরিক শক্তি করো বিনাশ,
অস্থির মানব চিত্ত লভে যেন দিব্যবিত্ত
শুভ বুদ্ধির হউক অধিবাস।
প্রণমি শিবাণী মাতে তাঁহার আশীষ মাথে
ভক্তিরস করি সিন্চন,
প্রার্থনা করি দেবী জাগরি’ নব্য রবি
দূর করো হৃদি অকিন্চন।