মাস ছয়েক হলো আমি একখানা গাড়ী কিনেছি। ছোটবেলা থেকেই চোখে আমি অস্বাভাবিক রকম কম দেখি। ফলে সন্ধেবেলা গাড়ী চালানো আমার পক্ষে আত্মহত্যার ঝুঁকি নেয়ার সামিল। এটা বলাই বাহুল্য যে আমার একজন ড্রাইভার ছাড়া চলবে না, তাই ড্রাইভার রতন প্রথম দিন থেকেই বহাল হয়েছে। রতন ছেলেটি বেশ ভাল, আমাকে মোটামুটি মান্নিগিন্নি করে। সকালে অফিসে বেরনোর সময় ব্যাগটা হাত থেকে নিয়ে নেয় এবং গাড়ীর দরজা খুলে দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, আমার ঢোকার অপেক্ষায়। গন্তব্য স্থলে পৌঁছনোর পর যথা পূর্বং দরজা খুলে দিয়ে দাঁড়ায়, আমার নামার অপেক্ষায়। মনে মনে বেশ লাগে ব্যপারটা। ভাবি এতোটা আয়েশ কপালে সইলে হয়।
রতনের সবই ভাল কিন্তু আমি লক্ষ্য করেছি বেশ কয়েকবার আমাকে বেশ অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলেছে বা বলা যায় প্রায়ই ফেলছে। রতন পশ্চিমবঙ্গের কোন জেলার লোক আমার জানা নেই বা জানার কোন ইচ্ছেও ছিল না। অহেতুক কৌতুহল ব্যপারটা আমার মধ্যে একটু কমই। গাড়ীতে যাতায়াতের পথে রতনের সঙ্গে যথেষ্ট বাক্যালাপ হতো, সর্বক্ষেত্রেই প্রসঙ্গ উত্থাপনটা রতনই করতো। ওর ভাষার উচ্চারণ ও বলার ভঙ্গী আমাকে যে বেশ মজা দিতো এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। প্রথম কদিন সব নির্বিঘ্নেই কাটছিল…রতন গাড়ীটা খাসা চালায়।
গাড়ী চালাতে চালাতে হঠাৎ একদিন বললো, “স্যার যদি মনে কিসু না ন্যান তবে দুটি কতা শুদুই। আমি আবার কেউয়ের মদ্দি আজগুবি কিসু দেকলি পরে ফোড়ন না কেইটি পারি না।”
আমি বললাম, “সেটা কি রকম?”
রতন শুরু করলো, “এই যে আপনি কোট প্যান্টুলুনটা পরিচো, এটা বানানোর মদ্দি বিস্তর গলোদ রইয়েচে। হাতা দুটো ছোট, অন্ততঃ ইঞ্চি দুয়েক করি। কোটের কাঁদ ইঞ্চি খানিক করি ঝুলে রইয়েচে দুপাশি। প্যান্টুলুন নুঙ্গির মতো ঝল ঝল করতেসে। খাড়ায়ে থাকলি পরে সায়া না নুঙ্গি ধন্দ নাগে। কোন দরজীর ব্যাটা এমন বদ-খদ প্যান্টুলুন বানালে বলো দিকিনি?”
এর মাঝে নানা ভাবে প্রসঙ্গ বদলাবার চেষ্টা করলাম কিন্তু লাভ হলো না। হঠাৎ বলে বসলো, “দ্যাকোগে যাও হয়তো নুঙ্গিই বানায়, তোমার কোট-প্যান্টুলুনেই হয়তো তেনার হাতি খড়ি।”
অফিসে গিয়ে কোটটা ছেড়ে রাখলাম কিন্তু ট্রাউজারটা ছাড়ি কি করে। ঠিক করলাম একান্ত প্রয়োজন না হলে আজ নিজের ঘর থেকে বেরবো না। আমার অফিসে অন্ততঃ পাঁচ জন মহিলা কাজ করেন। নিশ্চয়ই তাঁরা এহেন স্যুট পরিহিত আমিটিকে নিয়ে কতো মজাই না করেন। আমার স্ত্রী আমার স্যুটের এই বেখাপ্পা মাপ সম্মন্ধে অনেকবার মন্তব্য করেছে কিন্তু আমি খুব একটা কান দিইনি। এখন দেখছি কান দিলেই ভাল হতো।
এর পরে দু-একটা অকিঞ্চিতকর ঘটনা ছাড়া মোটামুটি রতন চুপচাপই ছিল। কিন্তু আমাকে নিয়ে তার ভাবনার যে সীমা থাকে না তা আমি হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। এই তো সেদিন শুরু করলো, “সার আমার মাতার পানে কোনদিন খ্যাল কইরে দ্যাকিসেন? খ্যাল করলে দ্যাকবেন মেলা চুলের ঢেউ খ্যালতেসে। এমনটি কিন্তু ছ্যালো না।”আমি আমার সমুহ বিপদের আশঙ্কায় শঙ্কিত হলাম।
রতন বলতে থাকে, “একদিন বোউ বইল্ল, ‘মাতায় চারডি সার দ্যাও দিকিনি। আমি বললাম, মাতায় সার দিতি যাবো কোন দুখ্খি শুনি। আমার মাতাটারে তুমি কি পেইয়েসো, তোমার হাল দ্যাওয়া ক্ষ্যাতের জমি, সার দ্যাবে আর মণ মণ মূলো গজাবি? বউ বলল, এ সার সে সার লয় গো। বউটা গাঁয়ের মেইয়ে হইলে কি হয়, মাতায় বুদ্দি আসে। বলল কি, আমাদের পাড়ার জগন্নাথ কবরেজের মহা সঞ্জিবনী ত্যাল মাতায় বেশ কইরে রগড়ি রগড়ি মাকাও দিকিনি। ওই তো ন্যাড়াদার ছেলির অমন চকচকি টাক পড়া মাতা কেমন সুজলা সুফলা শষ্য শ্যামলা হইয়ে উটলো গো। সবই তো ওই জগন্নাতের ত্যালের ভেল্কী।”
কি আর বলবো স্যার দুটি হপ্তা সেই ত্যাল সকাল বিকাল বেশ কইরে রগড়ি রগড়ি মাকালাম। তার পরের দু-হপ্তায় চারা গজালো। আর এক মাসে ফসলের ঢেউ খ্যাললো, ঠিক একন যেমনটি দ্যাকতেসো। মনে মনে ভাবলাম, বেটা গুল মারার আর জায়গা পেলি না। ওই রকম তেলের পেছনে আমি হাজার হাজার টাকা খরচা করেছি। চুল তো দূরে থাক একটা লোমও গজায়নি। সেই তেল আনতে ছুটে ছিলাম চেন্নাই, মাথায় এক রাশ চুলের স্বপ্ন দেখতাম…সেলুনে গিয়ে চুল সেট করবো…।
টাকের ব্যপারটা আমার জীবনে খুব Humiliating। কলেজে পড়তে সুমিতা টাকের ব্যপারটা নিয়ে প্রায়ই বলতো। সিনেমা দেখিয়ে, ফুচকা খাইয়ে, এমনকি দাদাকে ভজিয়ে একটা মোবাইল ফোনও কিনে দিয়েছিলাম সুমিকে। কিন্তু আমার টাকের ব্যপ্তিই ছিল আমার আর সুমির মধ্যে সবচেয়ে বড় বাধা। আর সৌগতটার সুমির দিকেই ছিল চোখ। ও শালার ছিল না কোন ঝামেলা। মাথায় ছিল কায়দা করা চুল আর সুমিকে দেখলেই তার হাঁটা চলাই যেতো বদলে। শেষের দিকে সৌগতকে আমি এড়িয়ে চলতাম বিশেষ করে সুমি সঙ্গে থাকলে। আমার মনে একটা দৃঢ় ধারনা ছিল আমার টাক নিয়ে সুমির বন্ধু মহলেও আড়ালে হাসি-ঠাট্টা চলতো।
এর পরের ঘটনা ছিল মর্মান্তিক। সৌগত সুমিকে বিয়ে করেছিল আর আমাকে ওদের বিয়েতে নিমন্ত্রণের কার্ড পাঠিয়েছিল। আজ আবার টাকের প্রসঙ্গ আমাকে দূর্বল করে তুলছে…নিজের মাথা ভরা টাক, সুমির ল্যাং, সৌগতর চুলের কায়দা, রতনের এক একটা শানানো বাক্যবাণ…,
সে তখনও বলে চলেছে, “গরিবীর কতা ক্ষমা ঘেন্না করি একবার জগন্নাতের ত্যাল মাকুন। নাক, কান, চোক, চুল, গোঁপ সব কিচুর একটা সামঞ্জস্য বলে একটা কতা আচে। আপনার যতো চুল সব জড়ো হইলো এইসে গোঁপের ডগায়, কানের যত্র তত্র, নাকের ভিতর থিকে উঁকি মারতিসে…হেইটা ক্যামন ধারা কতা বলো দিকিনি। আর মাতা হইয়ে গেলো ব্যালের খোল।”
রতনের স্পর্ধা দেখে আমি স্তম্ভিত। এবার ধমক দিয়ে চুপ না করিয়ে আর পারলাম না। ভাবছিলাম রতনটাকে বিদেয় করলে কেমন হয়। অফিসে না না ঝামেলায় টাক সংক্রান্ত এই বেকায়দা অবস্থাটা কাটিয়ে উঠলাম। বাড়ি ফেরার পথে সেদিন আর কোন দূর্ভোগের সম্মুখীন হতে হয়নি।
হঠাৎ বলা নেই কওয়া নেই রতন দিন তিনেক ডুব মারলো। অসুবিধেয় খুব পড়লাম কিন্তু মনে মনে একটা স্বস্তি বোধ করছিলাম। কখন কোন বাক্যবাণ কোন দিক থেকে ছুটে আসে বলা যায় না। ব্যাটা যদি বিদেয় হয় অন্ততঃ বাক্যবাণের আক্রমণ থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। কিন্তু দিন তিনেক পরে মুর্তিমান রতন সকাল নটার সময় এসে বেল দিলেন। সাধারণতঃ আমি সকাল সোয়া নটা নাগাত বেরিয়ে পড়ি। অফিস পৌঁছতে আমার আধ ঘন্টাটেক লাগে। স্বাভাবিক ভাবেই একটু বিরক্ত হয়েই জিজ্ঞেস করলাম, “এতদিন এলেনা কেন, কি হয়েছিল? আর একটু হলে তো আমি ট্যাক্সি নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলাম।” বকুনি খেয়ে মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে রইলো। ভালো করে লক্ষ্য করে দেখলাম রতনের মুখে মৃদু হাসি। এতে আমার রাগটা আর একটু চড়লো।
“কি ব্যপার এতে হাসির কি হলো?” কোন উত্তর না দিয়ে মাথা চুলকোতে লাগলো। রাগটা আর একটু চড়েছিল কিন্তু বেশী কথা না বাড়িয়ে গাড়ি বার করতে বললাম। গাড়িতে উঠে বসতেই শুরু হয়ে গেল বকবক, “বোজলেন স্যার সিদিন আপিসের পরে বাড়ি গ্যালাম, দ্যাশের বাড়ি আর কি। বৌটা আমার পোয়াতি হইয়েসেন আবার।”
আমি জিজ্ঞেস করলাম, “আবার মানে, তোমার কটি ছেলেমেয়ে?”
রতন বললো, “চারটি মেইয়ে স্যার। এবার খোকা না হলি পরে আমায় গলায় দড়ি দিতি হবে।” বলে ফেললাম, “তুমি গলায় দড়ি দেবে কিনা জানিনা কিন্তু তোমাকে গুলি করে মারা উচিৎ। চারটি মেয়েকে ভাল করে মানুষ করতে পারো না, আরো একটি সন্তান তোমার হয় কেন?”
রতনের অকাট্য যুক্তি, “খোকা না হোলি পরে বংশ রক্ষেটা হবে কোত্থেকে বলো দিকিনি? জিজ্ঞেস করলাম, “তুমি এতোটা নিশ্চিত কি ভাবে হলে যে এবারে তোমার ছেলেই হবে, আবার মেয়ে হবে না।”
“ও কতাটি মুকে ওচ্চারন কোরনি। তবে এবারে আমি এমন দাওয়াই বাতলে দিইচি যে খোকা না এইসে যাবে কোতা। সবাই বললো, কালিন্দীর মন্দিরে মা খুব জাগ্রত। সেখিনে একবার মানত কইরে এসো। আর মন্দিরের পাশেই ক্ষ্যাপা ধোবারে একবার কপালটা যাচাই কইরে ন্যাও দিকিনি। ক্ষ্যাপা ধোবার মন্তর পরা জল বৌটারে এক ঢোক খাওয়াও। তারপর দ্যাকো একবার মন্তরের খেল। এবার তোমার খোকা না হইয়ে যায় কোতা। তা স্যার মন্দিরে গ্যালাম, সকাল থিকে হত্যি দি পড়ে রইলাম…ফুল চরালাম। ঠাকুরের দেহকান্তি দেকলি পরেই বুজা যায় গো কতোটা জাগ্রত। আমি বেশ বুইতে পারলুম মা আমার কতা শুনতেচে। ক্ষ্যাপা ধোবারে দর্শন করলাম। তিনি বললেন বেষ্যুদবারে বৌটারে উপোষ কোরতি হবে। যজ্ঞ করি মন্তর পরা জল সিনানের পর খাওয়াই দিতি হবে। এইসব অনেক কান্ড-কারখানা করি তবে ডিউটিতে এ্যালাম।”
রতনের স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তির আগে হঠাৎ একদিন অফিসে আমার ঘরে এসে হাজির হলো। অফিস থেকে হাজার দশেক টাকা তাকে ব্যবস্থা করে দিতে হবে। আবার বললো, “আমি টাকাটা ধার চাইতিসি, শোধ দি দিবো।” অগত্যা ব্যবস্থা করে দিতে হলো। এর পরেই রতন ছুটি নিলো সাত দিনের।
অনেকদিন কেটে গেলো, রতন আর ফিরে এলো না। দশ হাজার টাকা আমাকেই ফেরৎ দিতে হলো অফিসকে। এই জাতের লোকেরা এই রকমই হয়ে থাকে… অবিশ্বাসী আর অকৃতজ্ঞ। রতনের স্মৃতি ক্রমশঃ আমার মন থেকে ক্ষীণ হতে থাকলো। এমনি করে বছর পাঁচেক কেটে গেলো। এর মাঝে আমার গাড়ি এবং ড্রাইভার বদলেছে দুবার।
এক শনিবারে ছুটির দিনে সকালে বাড়িতে খবরের কাগজের পাতা উল্টোচ্ছিলাম। কে যেন বেল দিলো। দরজা খুলতেই যাঁকে দেখলাম সেই ব্যক্তি আমার অচেনা। স্থুল হাসি মুখে বেশ গোটা কতোক দাঁত অনুপস্থিত। ময়লা সার্টটি গায়ে বেমানান রকমের ছোট। মাথার দুপাশে অল্প কটি চুল, বাকীটা প্রশস্ত টাক। জিজ্ঞেস করলাম, “কাকে চাই?”
ক্ষীণ কন্ঠে উত্তর এলো, “আমারে চিনতি পারলেন না স্যার, আমি আপনার ডেরাইভার রতন…আপনার গাড়ি সালাতাম।” আমি হতবাক হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম কিছুক্ষণ, ভুলে গেলাম ক্ষণিকের জন্যে রতনকে বাড়ির ভেতোরে ডাকতে। একটু সামলে নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, “একি চেহারা হয়েছে তোমার। ভেতরে এসো।” বাড়ির ভেতরে এসে আগের মতো মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে রইলো রতন। “কেমন আছো রতন? তোমাকে দেখে আমার ভাল লাগছে না।” বললাম আমি।
“আমি ভাল আছি স্যার। দুই মেইয়ে আমার বড় বড় পাশ দি একন কলিজে ম্যাষ্টারি করতিচে। সরকারি চাকুরী স্যার, মেলা রোজকার। মেয়ে দুটি আমার ছেলির অভাব ভুলায়ে দিসে।” একটানা বলে গেলো রতন, চোখ দুটো তার উজ্জ্বল…মেয়েদের সাফল্যে দৃপ্ত এক পুরুষ।
এবার একটা কথা জানতে বড় ইচ্ছে করছিল। কিন্তু কেমন যেন বাধো বাধো ঠেকছিল। জানবার অদম্য ইচ্ছেকে দমন না করতে পেরে জিজ্ঞেস করে বসলাম, “ক্ষ্যাপা ধোপার মন্ত্রপূত জল পেয়ে তোমার ছেলে কতো বড় হলো? রতন তোমার বৌ কেমন আছে?” রতন চুপ করে রইলো কিছুক্ষণ। কেমন যেন মনে হলো প্রশ্নটা না করলেই ভাল হতো।
“খোকা আমার হয়নি স্যার, মরা মেইয়ের জন্ম দি বৌটা আমার মরি গেলো। আমারে অপরাধী করি রেকি গেচে। আমি বৌটারে মেরি ফ্যাললাম গো বাবু…অ্যাক্কিবারি খুন করি ফ্যাললাম।” রতন কান্নায় ভেঙে পড়লো। খানিকটা সামলে নিয়ে এবার বললো, “আমারে আপনি মাপ কইরে দ্যান বাবু। এ কটা বছর আমি বড় লজ্জায় কাটিইসি।”
“কেন তোমার কিসের লজ্জা। তোমার বৌ-এর মারা যাওয়া একটা অপুরণীয় ক্ষতি আর কষ্টের। এতে লজ্জার তো কিছু নেই রতন।” বললাম আমি।
হাতে ঝোলানো ছোট্ট একটা ব্যাগ থেকে রতন বের করে আনলো এক গোছা নোট। আমার হাতে নোট গুলো গুঁজে দিতে দিতে বললো, “এটা ফিরৎ দিতি বড্ড দেরী হইলো স্যার, আমার ফিরি আসার মুক সিলো না। একটু গুনে নিবেন…দশ হাজার আসে। …আমারে মাপ করি দ্যাবেন বাবু।”
পরে বুঝে ছিলাম রতন এসেছিল আমার কাছে তার দশ হাজার টাকার ঋণ শোধ করতে। তার শরীরী ভাষায় ছিল টাকা এতোটা দেরীতে ফেরৎ দেওয়ার লজ্জা।