পেন্সিল’বলে ভাই–ক্ষমা কর মোরে,
তোমারে কষ্ট দেই ভুল কর্ম তরে।
হাসি মুখে দু:খ তুমি কর হে স্বীকার,
প্রিয়তম মিত্র মোর ধন্য ইরেজার।
মম হেতু বন্ধু তুমি ধীরে ধীরে ক্ষয়,
তথাপি সকল ক্লেশ কর সখা জয়।
‘ইরেজার’ বলে বন্ধু–সেটি মোর কর্ম,
দেখায়ে তোমার ভুল আচরি যে ধর্ম।
যাহাতে সঠিক পথে লভ তুমি গতি,
শোধন করিয়া ত্রুটি করিবে উন্নতি।
তাহার তরেই মোর ক্ষুদ্র এ জীবন,
ধন্য কহি দিলে মিত্র লজ্জা আভরণ।
তোমারই জন্য মোর এই দেহখানি,
একদিন হইবে শেষ নিশ্চিত জানি।
দুজনার মাঝে এই গূঢ় রসায়ন,
মিলে যেন আমাদের অনিত্য জীবন।
‘পেন্সিল’ সম যত সন্তান ভবে,
মাতাপিতা সনে শত সুশিক্ষা লভে।
তাঁহাদের ভূমিকা যেন ঠিক ইরেজার,
দেখান সন্তানে পথ যাহা সত্য সার।
তাহাদের দোষত্রুটি সবে করিয়া মুক্ত,
সংসারে পিতামাতা চিরতরে রিক্ত।
অবশেষে একদিন এই বন্ধন ছাড়ি’,
অন্য লোকেতে দেন একে একে পাড়ি।
কিন্তু দু:খ হায় নিরবধি মন মাঝে বহে,
আজিকে সন্তান বুঝি অন্য কথা কহে।
মাতাপিতা সন্তানেরে ভবে করিবে পালন,
তাহাতে যে নাহি কোন শ্রেষ্ঠ আচরণ।
সন্তান পোষণ কর্ম জীবনেরই ধর্ম,
তাহাদের দিবে সদা অন্ন,বস্ত্র,হর্ম্য।
কৃতজ্ঞতাটি হায় করে না স্বীকার,
শত গুণে শ্রেয় ঐ পেন্সিল রাবার।
সন্তানের কর্তব্য আজি বিস্মৃত সবে,
পিতা মাতা দুজনারে ক্রীতদাস ভাবে।
ব্যতিক্রম আছে ঠিকই তবে অল্পই বটে,
তথাপি তাহাদের হেতু চন্দ্র সূর্য ওঠে।