কিনলাম চাল ডাল আটা ভুরি ভুরি,
দুধ আছে কয় ড্রাম স্বস্তিতে ভারী।
ইন্জিন সানড্রপ তেলের সাগর,
চিনি কি লবণে ভরে রান্নার ঘর।
গুঁড়োদুধ চা কফি কম যায় কিসে,
আলমারী গিয়েছে বিস্কুটে ঠেসে।
আর চানাচুর ঝুরিভাজা প্যাকেটে ভরা,
রান্নাঘরেতে ঘি আছে ঘড়া ঘড়া।
কিলো কিলো মসলা কিনেছি রেখে,
পিঁয়াজ,রশুন,আদা ঝাঁঝে জল চোখে ।
সব্জি চাউ কি সুজি কিছু নেই কম,
একশত কিলো আলু ভাজা আর দম।
শ’ছয়েক ডিম আর শ’খানেক মাছে,
পাঁচখানা ফ্রীজ সব আজ ভরে গেছে।
তিনজন লোক মোরা খাবো এক সনে,
বেঁধেছি মুরগী পাঁঠা বাড়ির উঠোনে।
আর ওষুধের দোকান ত’ বানিয়েছি ঘরে,
তরল সাবান সেথা আছে থরেথরে।
প্যান থেকে ভিটামিন প্যারাসিটামল,
কাশির সিরাপ আছে বোতল বোতল।
করোনায় মরবো না–নয় অনাহারে,
দুধে ভাত থাকে যেন মোর পরিবারে।
বেশী দাম দিয়ে সব করেছি মজুত,
আমার ঘরটা যেন থাকে মজবুত।
অন্যের কি হল কিবা যায় আসে,
চুলোয় যাক না সব হেঁচে আর কেশে।
আমি আছি ঘরে বসে রাজার হালে,
চিন্তার ভাঁজ নেই কোনোই কপালে।
সেদিন স্বপনে দেখা দিলেন শ্রীহরি,
বললেন–পাপিষ্ঠ সমাজের অরি,
একা একা কখনো কি বাঁচা যায় নাকি !
সবাইকে দিলে তবে হবি তুই সুখী ।
জেগে উঠে ভাবি আমি কেমন করে,
অন্যের খাদ্য সব নিয়েছি কেড়ে !
ধিক্কার দেই মোরে–করো সবে ক্ষমা,
রাখবো না ঘরে মোর কোন কিছু জমা।
খাবার রেখেছি ঘরে যা মজুত করে,
পাঠাবো তা প্রয়োজনে গরীবের ঘরে।
সবার হাসিতে আমি হব চিরজীবি,
আঁকবোই জীবনের অমলিন ছবি ।
পুণ্য কর্মে আজ হিয়া অতি শান্ত,
কালিমা গিয়েছে ঘুচে যত কিছু ভ্রান্ত।
এই ছিল শুরুতেই কোরোনার ছবি,
যে ছবি বদলে গিয়ে উঠবেই রবি।
পুণ্য কর্মে জেনো অপার আনন্দ,
জীবন যেথায় লভে নবতম ছন্দ।
জীবে সেবা অর্থই সেবা ঈশ্বরে,
কোরোনা থাকবে সদা শতহাত দূরে।
——————————————
স্বপন চক্রবর্তী।