ধর্মের নামে যে মানব বকধার্মিক,
তাহারই কারণে ধ্বান্ত চতুর্দিক।
মুক্ত নয়ন তথাপি মোহেতে অন্ধ,
তাহার বিনাশ অচিরে নাহিকো সন্দ।
কিন্তু যাহারা নির্বুদ্ধিতা বশে,
ভ্রমে দিবানিশি সেই অন্ধেরই পাশে,
তাহারাও পরে মৃত্যু মালিকা গলে,
হাহাকার করে তীব্র চিতার অনলে।
গঙ্গাস্নানে হয় কি ধর্ম পালন !
মনের কালিমা হয়কি তাহাতে স্খালন !
ধর্মের নামে যে সদা বিপথগামী,
তাহার পাপেতে ক্লিষ্ট পুণ্যভূমি।
নাস্তিকও জেনো রহে চির মহাসুখে,
ধর্মের পথে যদি সে সতত থাকে,
ঈশ্বর কৃপা সে লভে নিরন্তর,
আচরণে যদি না থাকে আড়ম্বর।
জ্ঞানের আলোকে হয় নাস্তিক বোদ্ধা,
মানুষের প্রতি যদি থাকে তার শ্রদ্ধা,
শাস্ত্র না মানুক তবু নেই কোন দু:খ,
পরহিত ব্রতে সে–ই লাভ করে মোক্ষ।
বিধর্মী বলে যে কাড়ে অন্য প্রাণ,
আপন ধর্মে সে–ই করে অপমান,
দেব মন্দিরে শোণিতসিক্ত কৃপাণ !
ভগবানে নয়, ভজে কোনো শয়তান।
বিকারগ্রস্ত বর্বর সেই মানব,
ধার্মিকবেশী হিংসাশ্রয়ী দানব,
বিচারের নামে করে শুধু লাঞ্ছনা,
এই ধরণীর ঘৃণ্য আবর্জনা।
পশুর অধম অনন্ত এক লজ্জা,
ধর্মের নামে রচে সদা রণশয্যা,
তার হেতু আজ এহেন ধ্বংসলীলা,
মহাকাল হাতে বুঝি প্রলয়ের খেলা।
কোথা তুমি সেই অমৃতময় শক্তি !
ঘোষণা কর হে মানবের মহামুক্তি !
কণ্ঠে ধারণ করো এ গরলধারা,
বিতাড়ন করো আসুরিক ব্যাধি জরা !
হে মহাকাল–দূর করো কালরাতি,
ঘুচে যাক এই ঘনঘোর নিশাভাতি,
শুভ্রশঙ্খ বাজাও পুণ্য প্রভাতে,
আনন্দঘন নবীন ভানুর সাথে।
দূর করো যত বিকার বিড়ম্বন,
প্রেম অমৃত করো এবে সিঞ্চন,
জাগ্রত করো বিশ্ববাসীর চেতনা,
তব আবাহনে নাশ হোক ক্লেদ,যাতনা।