(১)
বাস ধরতে লেট হয়ে গেলো ইন্দ্র র, উফফফ যা গরম এতো গরম এ মানুষ বেরোয় কি করে ? কিন্তু কিচ্চু করার নেই আজ গিয়েই একটা ইন্টারভিউ আছে, ওটা না নিতে পারলে আর নিস্তার নেই, কালকেই তন্ময় দা অনেক কথা শুনিয়েছে, আজকে আর ছাড়বে না…. যাই হোক আগে তো পৌঁছায় তারপর দেখা যাবে….
ইন্দ্রনীল cognizant এ চাকরি করে, এতদিন সিনিয়র এনালিস্ট ছিল, এ বছর প্রমোশন পেয়ে ও HR হয়েছে, তার আজ প্রথম পরীক্ষা, যে কেমন ও ইন্টারভিউ নিতে পারবে, যাই হোক, HR বলে কথা, এতো আর এমনি এমনি হওয়া যায় না…. কত কষ্ট করে ও এই চাকরি টা জুটিয়েছে, ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে ১ যার বসে ছিল কোথাও কোনো চাকরি জোগাড় করতে পারছিলো না আচমকা অফক্যাম্পাস টা হয়ে ও এটাতে পেয়ে গেলো, ভগবান এর অসীম কৃপা………..
বাস ধরে বিধাননগর থেকে সেক্টর ৫ পৌঁছাতে লাগলো ৩৫ মিনিট, পৌঁছেই I-card দিয়ে এন্ট্রি করে চলে এলো নিজের কেবিন এ, সৌম্য কোথায় গেলো রে, পশে বসে ছিল গৌরব মন দিয়ে কাজ করছিলো, আজ ওর প্রজেক্ট এর চাপ খুব বেশি, ওকে জিজ্ঞেস করলাম,
– সৌম্য কোথায় রে?
– ধুর সকাল থেকে পাশে বসে কিসব বলছিলো ও নাকি প্রেমে পড়েছে বর্ষার দেখ হয়তো ওকেই বলতে গেছে.
– হে হে হে পারে ছেলেটা, ও বর্ষা কে বললে বর্ষা ওকে আচ্ছা করে দেবে… এমনি তাই কাল খাওয়ানোর নাম করে KFC তে বসিয়ে কাজ এ চলে এসেছে… যাক ওর কাছে….
– তাই নাকি রে, তাহলে তো ভালোই হয়েছে , তুই আর কথা বলছিস কেন অঙ্কিতা তো তোর পিছনে পরে আছে পাগল এর মতো, ওকে একটু সময় দে.
কি যেন একটা ভাবলো ইন্দ্র , বললো,
– না রে ভাই, জীবন এ যার সময় দেওয়ার ছিল সে দিলো না, আর নতুন করে কোনো কিছু র প্রতি আমার খুব একটা আগ্রহ নেই.
চুপচাপ সিট্ এ গিয়ে বসলো ইন্দ্র, গা এলিয়ে দিয়ে ভাবতে লাগলো সেই পুরোনো দিন গুলো…………………
(২)
তখন বি.টেক ২ন্ড যার এর ছাত্র ইন্দ্র, সবে মাত্র ফার্স্ট যার এর রাগ্গিং এর ভয় কাটিয়ে ২ন্ড যার এ পা রেখেছে, বেশ একটা দাদা দাদা ভাব হয়েছে ওর মধ্যে, ফার্স্ট যার দেখলেই বলে,
“বাবা এদিকে এস তো, দেখি একটু ইন্ট্রো টা দাও তো…”
যাই হোক, পড়াশুনা ই খারাপ ছিল না ইন্দ্র, প্রতিবার কিছু না হলেও ৮.৫ অ্যাভারেজ ওর থাকতোই সেমেস্টার এ , ওই জন্য ক্লাস এর স্যার ও কিছু বলতে পারতো না ওকে, ক্লাস ও খুব ই মনোযোগী ছেলে , সব মিলিয়ে পারফেক্ট ছেলে যাকে বলা যাই, সেই ইন্দ্র একদিন গোলমাল পাকিয়ে বসলো……….
ক্লাস এর মনিটর ছিল সৌরভ, সৌরভ ইন্দ্র কে একদম ই
পছন্দ করতো না, সেদিন দুপুরে লাঞ্চ এর পরে যখন সবাই ডাটা স্ট্রাকচার এর ক্লাস এ ঢুকছে, হঠাৎ সৌরভ ইন্দ্র কে বললো,
– তুই তো অনেক বড়ো বড়ো কথা বলিস, একটা কাজ দেব করতে পারবি?
– হা বল না, এই ইন্দ্রনীল ব্যানার্জী কাউকে ভয় পায় না সব কিছু করতে পারে, বুকের পাটা আছে আমার.
– ঠিক আছে এক কাজ কর, it ডিপার্টমেন্ট এ গিয়ে মৌসুমী কে প্রপোজ কর বুঝবো তোর কেমন দম আছে.
– এই কথা ঠিক আছে দেখ.
ইন্দ্র নীল এর একটাই খুব বাজে ব্যাপার ও বড্ডো একরোখা, ওকে বলেছে মানে ও সেটা করবেই, বন্ধুদের কোনো কথা ও শুনলো না, সটান ঢুকে গেলো IT ডিপার্টমেন্ট এ গিয়ে বললো মৌসুমী কে আছে?
একটি ছোট করে হাইট এর দেখতে মিষ্টি মেয়ে, ৪থ বেঞ্চ থেকে উঠে বললো এই তো আমি , কেন?
– বাইরে এস খুব আর্জেন্ট কথা আছে.
– যা কথা বলার এখানেই বোলো, বাইরে যেতে পারবো না.
– সে আমি এখানেই বলছি, তাতে আমার কোনো অসুবিধা নেই, তোমার না হলেই হলো……….
– কোনো প্রবলেম নেই বোলো এখানেই বোলো.
– আছে মৌসুমী, আই লাভ ইউ, ডু ইউ লাভ মি?
ব্যাপার তা আচমকা ঘটে গেলো, মৌসুমী বেঞ্চ থেকে বেরিয়ে এসে সপাটে এক চড় কষালো ইন্দ্র র গাল এ, ফর্সা টুকটুকে গাল তা লাল হয়ে গেলো, মুহূর্তের মধ্যে………….
ইন্দ্র কেমন একটা হতবাক হয়ে গেছে, আজ অব্দি এমন কোনো ঘটনা ঘটে নি ওর সাথে, একটা অপরিচিত মেয়ে ওরকম ভাবে একটা চড় কষালো, দু চোখ এ জল ভরে গেছে এন্ড মাথায় উঠেছে রাগ……………….
(৩)
– ওই কি রে চল, এটা কি ঘুমানোর জায়গা, তাড়াতাড়ি চল তন্ময় দা ডাকছে.
একটু বেশি ভাবতে শুরু করেছিল ইন্দ্র, পুরোনো স্মৃতি রা আজ ও অনেক উঁকি দেয়, জীবন এ অনেক কাহিনী আছে ইন্দ্র র, সব কথা আর খুলে বলবে কাকে, কিন্তু যাই হোক, এখন তো কাজ এর সময় তাই না? সৌম্য ডাকতে এসেছে মুখ টা কেমন করে, আজ ঝেড়েছে হয়তো বর্ষা কালকের জন্য.
তন্ময় দা র কেবিন এ গেলো সৌম্য কে নিয়ে…তন্ময় দা চেয়ার এ বয়সেই ছিল , ইন্দ্র কে দেখেই বললো,
– আসুন HR স্যার আপনার তো খোঁজ ই পাওয়া যাই না, ইন্টারভিউ না নিলে তো ের চাকরি পাবে না, এদের জীবন তো এখন আপনার হাত এ.
– কি বলছো তন্ময় দা, আমি আর কে জীবন দেওয়ার, নিজেই কত কষ্ট করে এই জায়গা তে এসেছি, এর পিছনে তোমার যা অবদান সেটা আর বলে বোঝানো যাবে না, বলো কি করবো?
– বুঝলাম,যাই হোক সকালে খেয়ে এসেছিস তো, আজ হয়তো ৩ তে স্লট এ ইন্টারভিউ আছে.
– হা দাদা খেয়ে এসেছি, তাও তুমি তো আছো খেতে অসুবিধা হলে KFC তো আছেই…
– ছেলে চালাক হয়ে গেছে রে সৌম্য?, এই না লিস্ট টা ধর, এতে ৭ জন এর নাম আছে, এরা ১১.৩০ থেকে ইন্টারভিউ টা দেবে, সেমিনার রুম এই নিয়ে নিস্, এখানে আজকে খুব লোড.
লিস্ট টা নিয়ে নিলো ইন্দ্র, থ্যাংক ইউ বলে ফিরে এলো নিজের কেবিন এ, আবার একটু বসলো, ভাবলো একটা কাজ করি, নাম গুলো এন্ট্রি করিয়ে নি, এক্সেল এ এরপর মার্ক্স্ অনুযায়ীই ওদের কে সাজাবো, দেন ইন্টারভিউ টা নিয়ে নেবো, কি এমন ব্যাপার, এমন কোয়েস্টিং করবো যদি পারে তো ভালো না পারলে, দেখবো কি করা যায়…
লিস্ট এ চোখ ঘোরাতে ঘোরাতে একটা নাম এ চোখ টা আটকে গেলো, ৩ নম্বর এ যে নাম তার নাম মৌসুমী চ্যাটার্জী, বয়স ২৭, সফটওয়্যার প্রফেশনাল, এক্সপেরিয়েন্স ২ যার.
এই কি সেই মৌসুমী যার সাথে ইন্দ্র র কিছু কথা বাকি আছে, অনেক দিন ধরে একটা প্রশ্ন মনের মধ্যে ঘুরছে, কিন্তু তার উত্তর সে খুঁজে পাচ্ছে না, প্রায় ৩ বছর ধরে…………… হয়তো না, কত মৌসুমী আছে, এই অবাক পৃথিবী তে, যার সাথে হয়তো ইন্দ্র চাই কথা বলতে সেই তার কাছে নেই, লিস্ট টা আবার রেখে দিলো একপাশে মনে পরে যাচ্ছে ফ্রেশার্স এর দিন টা……….
(৪)
ফ্রেশার্স টা নিয়ে খুব ই চিন্তায় রয়েছে ইন্দ্র, মানব কে বলে দিয়েছে অর্গানাইজে কর তুই, আমি দেখছি কতটা কি করা যায়, আমার তো বাড়ির কন্ডিশন খারাপ তুই জানিস, তও যতটা আমরা করার করবো, এবার এর ফ্রেশার্স আবার IT এন্ড CSE ডিপার্টমেন্ট একসাথে, তাই একটু টাকা পয়সা র প্রেসার কম আছে, পার হেড ৩০০ এর বেশি লাগছে না, টাকা কালেক্ট করার দায়িত্ব পড়েছে ইন্দ্র এন্ড বিকাশ এর উপর…..
ইন্দ্র IT তে গিয়ে বললো,
– এই যে তোমার সবাই রোল নম্বর অনুযায়ীই ৩০০ টাকা করে দিয়ে দাও ভাই বোন এরা, আর প্রত্যেকে আবার sign করে নিও, পরে বোলো না টাকা দিয়েও প্যাকেট পাই নি.
সবাই টাকা দিয়েছে, শুধু ২ জন দেয় নি, একজন রোল নম্বর ৩৮ এন্ড আরেকজন ৫১, রোল নম্বর ৩৮ হলেন মৌসুমী, তার কাছে গিয়ে ইন্দ্র বললো,
– এই যে ম্যাডাম আপনি কি টাকা দেবেন না?
– না তোমাকে দেব না, তুমি খুব বাজে ব্যবহার করেছিলে আমার সাথে.
– বিশ্বাস করো দিদিমনি, আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছিল সৌরভ, তার জন্য এমন করেছিলাম আমি ছেলে টা এমন কিছু খারাপ নই কিন্তু, বেশ ভালো ব্যাকগ্রাউন্ড কিন্তু.
– তাতে আমার কি? সেই তো এমন ভাবে বলছে যেন আমি ওর সাথে প্রেম করতে চলেছি.
– বলা যায় না কোনদিন আমার সাথে তোমার প্রেম হয়ে যেতে পারে দেখো.
– সেটা আর এ লাইফ এ হবে না, তার গাররান্টী আমি দিলাম .
– সে তুমি যা ইচ্ছা দাও, আগে টাকা টা তো দাও, এটা তো ফ্রেশার্স এর জন্য, এই টাকা নিয়ে আমি তোমার জন্য তো গোলাপ কিনতে যাবো না.
– বলা যায় না বাবা, যেভাবে ক্লাস এ বলেছিলে হয়তো এটাও করতেও পারো.
– আরে না না , দাও এখন টাকা টা.
টাকা টা দিয়ে দিলো, টাকা দিতে গিয়ে হাত এ হাত টা লেগে গেলো, কি নরম হাত টা ছিল ওর, তখন কি আর জানতো ইন্দ্র হয়তো ওর সাথেই ওর ভালোবাসা টা এতো গভীর হয়ে যাবে.
ফ্রেশার্স এ প্রোগ্রাম এর যখন হাফ টাইম, তখন টিচার্স রা বললো মেয়েদের এবার ধীরে ধীরে হোস্টেল পাঠিয়ে দাও, কারণ ৭ টা হয়ে গেছে আর না এরপর রাত হলে প্রবলেম. শুধু যেসব মেয়েদের দায়িত্ব ছেলেরা নেবে তারাই শুধু থাকবে তও ৯ টা অব্দি এর বেশি নয়…….
এবার এ শুরু হলো সব মেয়েদের সরানো, কিছু মেয়ে যেতে চাইলো না, কিছু মেয়ে গেলো, কিন্তু একটা মেয়ের যাওয়ার ইচ্ছা ছিল না, সে এসে ইন্দ্র কে বললো,
– এই যে স্যার বাংলার বাঘ, একটু আমি থাকতে চাই, কোনোভাবেই কি পসিবলে না?
– না দিদিমনি, শুনলে না তারাই থাকতে পারবে যারা কোনো ছেলের দায়িত্বে থাকবে, এবার সেটা তো তোমার ক্ষেত্রে পসিবলে না.
– না না একটু দেখো না যদি কিছু হয়….
– না গো এটা রুল, এখন একটা জিনিস হতে পারে. যদি এখন তুমি তোমার দায়িত্ব টা আমার হাত এ তুলে দাও তবেই কিছু হতে পারে.
– আছে তাহলে উল্টিমেটালি তুমি এটাই চাও তাই তো? চ্যালেঞ্জ টা জিততে.
– ওটা তো প্রপোজ করার চ্যালেঞ্জ ছিল, এটা তো আমার চ্যালেঞ্জ, তোমার সাথে থাকা.
– উফফফ পারা গেলো না তোমাকে নিয়ে, যাও আমি তোমার সাথেই থাকবো বলে দাও ম্যাম কে.
– আছে দিদিমনি, বলে দিচ্ছি.
খুব খুশি হয়ে গেলো ইন্দ্র , এটাই তো ও চেয়েছিলো, এমন মেয়ে যার কোনো ভয় নেই, যে কিছু তাই পিছু হবে না, এন্ড সবচেয়ে বড়ো সবার থাকে হাসি খুশি হয়ে থাকবে,তাই তো চড় খেয়েও ইন্দ্র ভুলতে পারেনি ওকে, টাকা তুলতে ইচ্ছা করে ও গেছিলো IT ডিপার্টমেন্ট এ, কারণ বিকাশ ও যেতে চেয়েছিলো ওকে যেতে দেয় নি, কারণ ও চেয়েছিলো মৌসুমী আর একটু দেখতে, তাই ৭ টা বাজার পর নিজেই ম্যাম কে বলেছিলো বলতে যে অনলি যারা দায়িত্ব নেবে তারাই শুধু একজন মেয়ে কে রাখতে পারবে…
এতো কিছু করার পরে ও সফল, মৌসুমী তো এখন ওর দায়িত্বেই রয়েছে…
(৫)
ইন্টারভিউ দিতে এসেছে অনেকেই কিন্তু কাউকেই দেখতে মৌসুমী র মতো না, তাহলে হয়তো ও ভুল লোক ই ভেবেছে, মৌসুমী নাম এর তো অনেকেই থাকতে পারে এটা আবার কি বড়ো কথা, যাই হোক , এখন তো অনেক কিছু মনে রাখতে হবে, ঐসব দিকে মন দিয়ে লাভ নেই…
এক্সেল টা ফিল আপ করে দেখা গেলো প্রথম মেয়েটির নাম সহেলি দাস এন্ড ২ন্ড মেয়েটি মৌসুমী চ্যাটার্জী, এই ফার্স্ট সেকেন্ড নিয়ে কি ঝামেলা হতো ওদের মধ্যে, কিন্তু শেষ ঝামেলা টা ওদের কেই দূর করে দিলো একে অপরের থেকে ………..
সেদিন ছিল কলেজ এ ফাইনাল যার এর ক্যাম্পাসিং, সিন্টেলেক্ট বলে একটি কোম্পানি এসেছে বেঙ্গালুরু থেকে, ইন্দ্র বসতে চাইনি, কিন্তু মৌসুমী ওকে জোর করে বসিয়েছে, মৌসুমী এখনো অব্দি ৩টে জব পেয়ে গেছে, কিন্তু ইন্দ্র এখনো একটা ও পাই নি, তাই ওর মন খারাপ, মৌসুমী বললো,
– কি হলো? মন খারাপ করছো কেন এটাই হয়ে যাবে.
– ধুর আর বোলো না আমার আর কিছুই হবে না আমি এতো গুলো ইন্টারভিউ দিলাম একটাও হলো না, কলেজ থেকেই হলো না আর বাইরে থেকে কি হবে.
– দেখো চাকরি না পেলে তো আমাদের রিলেসন টা আর চালানো যাবে না.
অবাক হয়ে তাকালো ইন্দ্র, মানে টা ও বুঝলো না, বললো,
– মানে চাকরি র সাথে রিলেসন এর কি সম্পর্ক?
– না তুমি বুঝছো না, চাকরি না পেলে তুমি ফ্রুস্ট্রেট হয়ে যাবে, কিন্তু আমি তো হাই এম্বিশন এর মেয়ে আমার তো লাইফ এ অনেক দূর যেতে হবে, আমি এইভাবে তোমাকে ঠিক করতে করতে তো নিজেই কেমন যেন হয়ে যাবো… তখনা আর আমার জীবন এর এইম বলে কিছুই থাকবে না.
– মানে তুমি কি শুধু চাকরি , আরাম এন্ড টাকা কে প্রেফারেন্স বেশি দাও একটা সাধারণ ভালোবাসার থেকে?
– দেখো আজকাল কার যা লাইফ টাকা না থাকলে ভালোবাসা জানালা দিয়ে পালাবে, তখন ভালোবাসি ভালোবাসি বলেও কোনো লাভ হবে না.
– বুঝে গেছি মৌসুমী, আমি কিছুতেই এই ইন্টারভিউ টা দেব না, আমার আর কিছুই ভালো লাগছে না, তুমিও এরকম হয়ে গেলে.
– ধুৎ না না তুমি বুঝছো না, আমি বাবা মা কে কথা টা কি বলবো, আমি যাকে ভালোবাসি সেই ছেলেটি বেকার.
“বেকার ” কথাটা বিধলো ইন্দ্র কে, সবে তো ৫ টা ইন্টারভিউ হয়েছে, তার মধ্যেই মৌসুমী ভেবে নিয়েছে ও বেকার, যদি ও এখন ই এমন করে আগে গিয়ে কি করবে, বললো,
– থ্যাংক ইউ মৌসুমী, আমি তোমাকে এতদিন পর আজ চিনতে পারলাম, এই ২ বছর তাহলে আমরা একসাথে ছিলাম সব মিথ্যা?
– না না সেটা নয়, ইন্দ্র তুমি বুঝছো না আমি কি চাইছি.
– আমি সত্যিই বুঝবো না, সত্যিই বুঝবো না গো, একদিন এমন হবে যেদিন তুমি ও ভাববে এই ছেলে টা কে ছেড়ে আমি ভুল করেছি…
আজ ৪ বছর হয়ে গেছে মৌসুমী এর কোনো খবর নেই, শুনেছিলো ও বেঙ্গালুরু এ চলে গেছে, কোনো সম্পর্ক্য রাখেনি ইন্দ্র র সাথে ও, বাস এটুকু ই মনে আছে ইন্দ্র র, তারপর থেকে ও আর কাউকে ভালোবাসতে পারে না, কারণ ভালোবাসা তো এক বার ই হয়……….
প্রথম ইন্টারভিউ টা হয়ে গেলো সহেলি কে অনেক কোয়েস্টিং করেছে ইন্দ্র, খুব ভালো আনসার দিয়েছে ইন্দ্র খুব খুশি, বাহ এরকম মেয়ে পেলে কাজ এর সুবিধা হয়, যাই হোক বিনোদ দা কে বললো পরের জন কে ডেকে দাও….. মৌসুমী চ্যাটার্জী…..
অনেক্ষন ডাকার পর যে মেয়েটি দরজা খুলে ঢুকলো, তাকে দেখে ইন্দ্র হা হয়ে গেছে,মেয়েটি ছোট হাইট, ৪ ফট ১১ ইঞ্চি , এতো সেই মৌসুমী, হ্যাঁ সেই মৌসুমী, যে তাকে হাই এম্বিশন এর নাম করে বেঙ্গালুরু চলে গেছিলো, আজ সে ফিরেছে কিন্তু হাত এ ফাইল নিয়ে ইন্টারভিউ এর দরজায়, তাকে বোঝাতে নয়, তার কাছ থেকে চাকরি নিতে, আজ ইন্দ্র খুশি নয়, কিন্তু একটা কথা ইন্দ্র মনে মনে ভেবেই নিয়েছে আজ অনেক প্রশ্নের সামনে পড়তে হবে মৌসুমী কে…
কারণ সে আজ তার ৩ বছর আগের হারিয়ে যাওয়া এক প্রশ্নের উত্তর চায়………………