বাংলা ভাষায় পদ্য লেখা নয়কো আমার সাধ্য,
তবু যখন বলছ ভাই লিখতে আমি বাধ্য।
আসল কথা বলি শোনো জানিনা আজো তেমন,
বাংলা ভাষার হরফগুলি দেখতে হয় কেমন !
ছোট্ট থেকেই ইংরেজীতে আমার ওঠা বসা,
বাবা বলেন – “ ‘এ বি সি ডি’ আমার মাতৃভাষা।
বাংলা ভাষা শেখে যারা তারা চাষার ছেলে,
তাদের সংগে আমার কোন তুলনা কি চলে !
জীবনে যদি উঠতে হয় ইংরাজীতেই ওঠো,
বাংলা ভাষা শিখলে পরে থেকেই যাবে ছোটো।”
তখন থেকে ইংরেজীতেই মেলেছি ভাই ডানা,
মাতৃভাষায় কথা বলাও একেবারেই মানা।
আর তুমি কিনা লিখতে বল ঐ ভাষাতে পদ্য !
কারণ নাকি বিশ্বব্যাপী ভাষা দিবস অদ্য।
ভাষা দিবস–সে কি ভাই–আমার ত’ নেই শোনা,
আমার সঙ্গে অন্য ভাষার নেইকো বনিবনা।
তবে হতেই পারে এমন দিবস একুশ ফেব্রুয়ারি,
কিন্তু আমার সাথে বাংলা ভাষার চিরকালের আড়ি।
ভাবছ বুঝি–এসব কি লিখছি বাজে কথা !
না না ভাই–ঘাবড়িও না–সবটা রসিকতা।
আধুনিক বঙ্গসমাজ–তারই জলছবি,
একটু আধটু দিলেম এঁকে আমি অধম কবি।
মাতৃভাষাই মাতৃস্নেহ–মনিষীদের বাণী,
সে সব কথায় আর কোথাও হয় না কানাকানি।
বাংলা ভাষার রাক্ষসরা আজকে সবাই ব্রাত্য,
বিদেশী সব দত্যিদানব–তাই নিয়ে সব মত্ত।
ভাষা দিবসের ইতিহাস কজনা আজ জানি !
বাংলা ভাষার দুর্দশায় ক্লিষ্ট হৃদয়খানি।
আমার ভাষা বাংলা ভাষা নাইকো তুলনা,
যে ভাষা মোর হৃদয় মাঝে ছড়ায় দ্যোতনা।
মাতৃভাষায় হাতেখড়ি–আমার প্রথম লেখা,
বাংলাভাষা বিনা যেন জীবন কুজ্ঝটিকা ।
ঐ ভাষাতেই কাঁদি আমি ঐ ভাষাতেই হাসি,
মাতৃভাষা আনে হিয়ায় ছন্দ রাশি রাশি।
বাংলা ভাষাই আমার অহং যতেক ভালবাসা,
যার কোলেতে সাঙ্গ হবে প্রাণের কাঁদা হাসা।
মায়ের মত মধুর ডাক যে ভাষাতে শুনি,
সেই মাতৃভাষার কাছে আমি চিরকালের ঋণী।
আর ফ্রেবুয়ারী একুশ-তাকে যায় কি কভু ভোলা !
রক্ত দিয়ে আঁকা ছবি রক্তে লাগায় দোলা।