আসিনি আমি এই পৃথিবীতে কারো দাসত্ব করতে।
নিজের পরিচয়ে জন্ম নিয়েছিলাম আমি এই পৃথিবীতে।
কিন্তু সমাজ ব্যবস্হা আমায় স্বীকৃতি দেয়নি।
মেয়ে হয়েছে বলে মা কে শুনতে হয় অনেক অনেক গজ্ঞনা।
প্রথমে পিতার পরিঢয়ে
তারপর স্বামীর পরিচয়ে
আমার পরিচিতি
এই সমাজে।
শৈশব থেকে উচিত বক্তা ছিলাম বলে অনেক তিরস্কৃত হতে হয়েছে আমাকে।
মায়ের দেখেছি অনেক কষ্ট ও যন্ত্রনা।
সবকিছু মা মুখ বুজে সহ্য করেছিল শুধুমাত্র মমতার কাছে।
রুখে দাঁড়াতে গিয়ে বারংবার তাকে বাঁধা পেতে হয়েছিল পিতৃতান্তিৃক কঠিন নিয়মের কাছে।
জীবনের অনেক সপ্ন ছিল,
কিন্তু হায়রে জীবন…..
কি যে পেলাম তা এখনও জানিনা…….
অশান্তি, যন্রনা, কষ্ট , অপমান সব কিছু পেয়েছি কতগুলো হিংস্র প্রকৃতির মানুষদের কাছ থেকে
যারা কিনা কোনোভাবেই আমার সাথে যুক্ত ছিল না জন্ম সুত্র থেকে।
তাদের কাছে নারী মানে…..
প্রতিবাদ নয়, চরম সহ্যের আরেক নাম।
এই হিংস্র আত্মিয়তাগুলো তিলে তিলে আমার যন্ত্রণার ক্ষতগুলো আরও কঠিন করে তুললো আমার জীবনে ।
এত বছরের সেই কষ্টের পুরষ্কার হিসাবে কি পেলাম….
পেলাম জীবন যুদ্ধের সাথে নানান ধরনের শারীরিক ব্যাধি যা কোনোদিন সারবার নয়…..
এত বছর পরে আজও শুনতে হয় যে কোন কোন দিকে আমার ব্যর্থতা।
একটা প্রান উচ্ছল মেয়ে হারিয়ে গেছে
সমাজের ও সংসারের কঠিন জালে।
জানো, কেউ কখনও মুল্য দেয়নি
এই সুন্দর সতেজ হাসিখুসি মেয়েটাকে……
তার ভাবনা, চাওয়া পাওয়া কোনোকিছুকেই সন্মান করেনি, না পিতৃগৃহে না স্বামীগৃহে……
আকাশে ওড়া মুক্ত পাখিটার ডানাগুলো ছেঁটে দেওয়া হয়েছে চিরদিনের জন্য….
সব ইচ্ছা ও তার সমস্ত প্রতিভা সব কিছু যেন হারিয়ে গেছে…..
এখন শুধু নিয়ম করে সংসারের সব দায়িত্ব পালন করা।
তাই জীবনে আর কোনো অবকাশ নেই,
নেই কোনো ইচ্ছা ।
তবে ঈশ্বর, এখনো আমার প্রার্থনা তোমার কাছে , আমায় শক্তি দাও, যেন এই বয়সের পরন্ত বেলায়
আবার আমি যেন সেই আমি হয়ে উঠতে পারি…..
সার্থক হোক আমার জীবনের “ আমিত্ব “।