নারী রূপে জন্ম তোমার, লক্ষ্যে সুখী গৃহ কোণ,
পিতা, ভ্রাতা, স্বামি,পুত্রেই, তোমার পরিচয় হয় গঠন ।
ইচ্ছে, স্বপ্নের বদল হবে, বদলে যাবে ঠিকানা,
স্ত্রী, মা, বোন হয়েই,
হবেনা তোমার নিজের পরিচয় জানা।
একদিন বসে ভাববে তুমি, একটা নিজের নাম ছিল,
সম্পর্কের মায়াজালে কোথায় হারিয়ে গেল !
এই সম্পর্কের ভিড়েও তখন নিজেকে একলা মনে হবে,
অনেক লুকিয়ে থাকা প্রশ্ন এসে তোমায় ধরবে ঘিরে।
এতদিনের উপেক্ষিত প্রশ্নগুলো আজ বেরিয়ে আসতে চায়,
দেখবে তুমি অস্তিত্বটাই বিকিয়েছে হেলায়।
তখন জিজ্ঞেস কোরো ;
কে থাকবে তোমার পাশে, আজকের সত্যি যদিকাল মিথ্যে হয়ে আসে?
কে ধরবে হাতটা তোমার, অজানা ভিড়ে হারিয়ে গেলে?
সত্যি যদি হারিয়ে যাও অন্ধকারের মাঝে,
খুঁজবেকি কেউ তোমাকে, নাকি হারিয়ে যেতে দেবে ?
সম্পর্কের মাঝেই তোমার জীবন-যাপন,
সংসার তো রূপ আর গুণ চেনে,
সেকি করবে তোমার খুঁতগুলোকে আপন?
যখন চিতার শিখা উঠবে জ্বলে, সকল খেলা সাঙ্গ হবে,
তোমায় কিকেউ করবে মনে, নাকি চোখের জলে মিলিয়ে যাবে?
এই সকল প্রশ্নের মাঝে যখন স্তব্ধ হবে তুমি,
একটা আওয়াজ উঠবে বলে, “এই তো আছি আমি” ।
আমি আছি তোমার সাথে সত্যি মিথ্যের সাক্ষী হয়ে,
আমি আছি তোমার পাশে, অন্ধকারে সাহস হয়ে।
আমি আছি তোমার অন্তরে খুঁত-গুণ সব আপন করে,
আমি বাঁচি রণক্ষেত্রে, তোমার চোখে আগুন হয়ে।
কন্যা থেকে মাতৃরূপে, আমি তোমার প্রতিনিশ্বাসে,
ভবলীলা সাঙ্গ হলে উঠব চিতায় তোমার পাশে।
তখন যদি জানতে চাও পরিচয় কি আমার ?
যেন তুমি যুগান্তরের সাথে বদলেছে আমার নামের বাহার।
কখনও আমি ত্যাগী রূপে সীতা হয়ে বাঁচি,
প্রতিশোধের আগুন জ্বললে আবার দ্রৌপদী হয়ে উঠি।
অহল্যার ধৈর্য্য আমি, মন্দোদরীর নিষ্ঠা,
বুদ্ধিমতী তারা আমি, সূর্পণখা-মন্থরাদের শ্রষ্ঠা।
দূর্গারূপে পূজিত আমি, লক্ষীরূপেও আসি,
রুদ্ররূপে কালী হয়ে, বিদ্যায় সরস্বতী।
আমি থাকি নাড়িরটানে সবার জন্যে বাঁচি,
আমি তোমার অন্তরে থাকা পরিচয়হীন নারী।