সূয্যিমামার শীত লেগেছে
গরম জামা গায়ে,
তাইতো রোদের পাই না দেখা
ডাইনে কিম্বা বাঁয়ে।
বিছানাতে আছেন শুয়ে
লেপকম্বল ঢাকা,
দিদু অদিতি বলেন–ওরে
বাইরে বেরো খোকা।
রেগে আগুন তেলে বেগুন
কাশ্যপ দাদাভাই,
বলেন–ব্যাটা,এক্ষুণি তোর
বাইরে আসা চাই।
তোর জন্যে দেখছি এবার
বাইরে ঘোরা দায়,
আমার কাছে তোর খবর
জানতে সবাই চায়।
‘কি হয়েছে মামার, দাদু !
কোভিড হল নাকি !
দু সপ্তা কাটতে আর
কদিন আছে বাকী !
চিকিৎসাটি কে করছেন !
কবিরাজ অশ্বিনী !
কত প্রশ্ন করছে সবাই
বলব কি আর গিন্নী।
সর্দিটা কি বসে গেছে !
হচ্ছে কি শ্বাসকষ্ট !
জ্বর কি খুব বেশীর দিকে !
করুন দাদু স্পষ্ট ।
যত বলি ওসব কিছুই
হয়নি তোদের মামার,
বিশ্বাসটা করবে কেন !
কলার ধরে জামার।
মারবে বুঝি আজ বুড়োকে,
কি সে লম্ফঝম্ফ,
অনেক কষ্টে বাঁচল প্রাণ,
এখনও হৃদকম্প।
তোমার ঐ লায়েক ছেলে
দেখছি এবার শেষে,
যমের দোরে বাপটাকে তার
দেবেই বুঝি ঠেসে।’
ও কি কথা বলো মিনসে !
এ সব শোনাও পাপ,
সোনার চাঁদ খোকা আমার
দিচ্ছ তাকে শাপ !
তারে নিয়ে আবার যদি
শুনি খারাপ কথা,
সবকটা চুল দেব তুলে
হবেই টেকো মাথা।
দিদার কথা শুনে দাদুর
চক্ষু ছানা বড়া,
বাইরে কাটে ভেতরে কাটে,
বাঁচাও হে শঙ্করা।
বাপ মায়ের ঝগড়াঝাঁটি
শুনে সূয্যিমামা,
বিছানা থেকে ওঠেন শেষে
ছাড়েন গরমজামা।
ঘরের মধ্যে আছি কদিন
সয় না কারো মোটে,
এবার আমি পুড়িয়ে দেব
গেছেন ভারী চটে।
এমন রোদে ভরিয়ে দেব
বুঝবে তখন ঠ্যালা,
মালুম পাবে লাগলে ছ্যাঁকা
মনুর যত পোলা।
ওদের জন্য আমার ঘরে
লাগছে লাঠালাঠি,
কদিন একটু জিরোব তায়
করলো সবাই মাটি !
অতএব আর নয়কো দেরী,
এবার অবশেষে,
মামার দেখা মিলবে ওই
সুদূর নীলাকাশে।
কেমন করে এসব খবর
পেলেম তোমরা জান !
দেবর্ষির পেট পাতলা
নিশ্চয় সব মানো ।
আজ যখন প্রাতর্ভ্রমণ
করছিলেম ছাতে,
দেখা হল ঠিক তখনই
নারদ মুনির সাথে।
তাঁর কাছেই খবর পেলাম
সূয্যিমামার পণ,
ঘুরিয়ে দেবেন সবার মাথা
রোদ্দুরে বনবন।
তবে একটা কথা বলি শোনো
একটু সাবধান,
নিজের কাছেই রেখো কথা
কোরো না পাঁচকান।
নারদ মুনির কথা এটা
বলে দিলেম সার,
পরনিন্দা পরচর্চায়
আগ্রহ নেই তাঁর।
তাঁর কথাই মেনে চলি,
তিনিই গুরু বটে,
একে ওকে উস্কে দেব !
অভ্যাস নয় মোটে।
————————————-
স্বপন চক্রবর্তী।