এক চিলতে হওয়ায় উড়ে এলো একটা এরোপ্লেন ,কাগজের এরোপ্লেন । একনিমেষে পেছনদিকে ছুটটে গেলাম কুড়িটি বছর । ফ্ল্যাশব্যাক আমি আর আমার শৈশব ।
ঘাসফুল , লজ্জাবতী , বৃষ্টিতে উঠোনে ভাসান নৌকো ,গাছের ডালের চড়ুই , আমার পাওয়া ঘুড়ি ,আমার হারিয়ে যাওয়া বন্ধুরা,হলদেটে হয়ে পড়া ডাকটিকিটের খাতা ,লাটিম আর আমার প্রিয় কৃষ্ণচূড়ার গাছটা । কেউ দাড়িয়ে আছে সারি সারি ,কেউ পড়ে আছে আগোছালো , কেউ আড়ালে ,কেউ বা প্রাকাশ্যে ,কিন্ত সবাই উজ্জল , সবাই প্রাণচ্ছল। মনে হচ্ছে সবচেয়ে বেমানান যে বস্তুটি ,সেটি হল আমি ।
পৃথিবী তার যে অপার রূপ সৌন্দর্য্য দিয়ে ভরিয়ে রেখেছে এই পৃথিবীকে তার আসল রস গ্রহণ করবার মন এবং উপভোগ করবার নজর রয়েছে এই শৈশবেরই । প্রতিটি শিশুর নিষ্পাপ মনে তাই ধরা পরে লজ্জাবতীর ফুল ,কচুরিপানা , কচি ধান ক্ষেত ,ব্যাঙাচি ,শাপলা ফুল ,সাতরঙ্গা রামধনু ,আরও কত না জানি কত কিছু। একমুহুর্তেই আমার বয়স অনেকটা যেন কমে গেল ।
এক অপার্থিব আনন্দ যেন আমাকে সব পেয়েছির দেশে নিয়ে গেল । সুখ আর আনন্দের সেই চেতনা আরেকবার উপলব্ধি করলাম , যা ছোট বেলার থেকে শুনে আসছি “ সুখ হল প্রত্যহের অতীত আর আনন্দ নিত্য দিনের সামগ্রী । সুখ পাচ্ছে আঘাত পায় বলিয়া সর্বদাই সঙ্কোচে থাকে , আর আনন্দ ধুলায় গড়াগড়ি খাইয়া আরও আনন্দিত হইয়া ওঠে ।”
এক অদ্ভুত সুন্দর সময় কাটিয়ে যখন বর্তমানে ফিরলাম , তখন আমার হারানো শৈশবকে বলতে ইচ্ছে হল : দেখতে শেখো ,বুঝতে শেখো , ভাবতে শেখো ,অজানাকে জানা , অদেখাকে দেখবার চেষ্টা করো । যে সময়টাতে তুমি আছো তার মতো ভালো সময় আর আসবেনা ।
তাই এর সমস্ত আনন্দ গ্রহণ কর । এর একটি মুহূর্তও অব্যবহার বা অপব্যবহার কোরো না । উপভোগ কোরো ॥