রসগোল্লার’ খুড়তুতো ভাই-‘রসমালায়ের’ মেসো,
‘জলভরা’ বলেন – আমার মেয়েকে ভালোবেসো।
‘ক্ষীরতোয়া’ ছোট্ট মাসী –ত্রিপুরাসুন্দরী,
তাঁর খুনসুটির কথা ভুলতে কি আর পারি !
জনাইতে মোর শ্বশুরবাড়ী–স্ত্রীটি ‘মনোহরা’,
আমার শ্যালক ‘চন্দ্রপুলি’-ছোটটি ‘রসকরা’।
শ্যালিকাটি ‘প্রাণহরা’ নয়নভোলা রূপে,
বসে আছেন ‘সরপুরিয়ার’ কোমল ঘাড়ে চেপে।
শাশুড়ীমার দাপট খুবই–তিনি যে ‘লেডিকেনী’,
‘রসকদম্ব’ হল মোর প্রিয়ার ননদিনী।
আমার পিসীর নামটি হল ‘রসমন্জরী’,
‘ছানামুখী’ মা টি আমার–তাঁকে প্রণাম করি।
বাবা আমার ‘ছানার গজা’-বড় রসিক প্রাণ,
‘দরবেশ’ খুড়োমশাই–কিসেই বা কম যান !
‘ল্যাংচা’ আমার মামাশ্বশুর–লেডিকেনীর দাদা,
আমি অতি সোজাসাপটা–সাদা মনে নেই কাদা।
‘আবার খাবো’, ‘দিলখুশ’ সবাই আমার মিত্র,
তবে ‘অমৃতির’ প্যাঁচের কাছে আজো আমি ছাত্র।
‘ক্ষীরকদম্ব’ হলেন আমার বাবার ছোট বোন,
‘দধিরাম’ আর ‘কাঁচাগোল্লা’ মাতুল–কংস নন।
‘ক্ষীরতোয়া’ আর ‘ক্ষীরকদম্বের’ হয়নি পরিণয়,
‘রসকদম্ব’ তার মনও কেউ করে নি জয়।
‘ম্যাচা’, ‘খাজা’, ‘কালাকাঁদ’ করছে লড়ালড়ি,
‘বাবরশাও’ কম যায় না–দিচ্ছে হামাগুড়ি।
‘রাবড়ি’, ‘প্যাঁড়া’ প্রতিবেশী-‘লবঙ্গলতিকা’ কাকী,
‘খাস্তাগজা’ পিসেমশাই মন্জরীতেই সুখী।
আছেন আরো মামাশ্বশুর–অতি কালোবরণ,
‘ছানাবড়া’ আর ‘কালোজাম’-একটু কড়া ধরণ।
‘দানাদার’ আমার জেঠু–পিতার সহোদর,
রসগোল্লার বাবা তিনি-‘বরফি’ জেঠীর বর।
আরও আছেন ‘নিকুতি’-দিদিশাশুড়ী মোর,
বয়স তাঁর অনেক হল–নাইকো দেহে জোর।
‘সীতাভোগ’ আর ‘মিহিদানার’ বাড়ী বর্ধমানে,
বারেবারে যাই সেথা ভাগনে দুটির টানে।
আমার সাথে সবাকারই ভাবটা কম বেশী,
ভালবাসার কাঙাল আমি–অল্পেতেই খুশী।
আমার দেহের ছানার ফাঁকে মিষ্টি মধুর রসে,
বেঁচে আছি দুশো বছর সবারে ভালোবেসে।
টাঙ্গাইল মোর জনমভূমি–গ্রামটি পোড়ামাটি,
কেউ বা আবার বলেন আমার জন্ম গৌহাটি।
অসমীয়া যশোরথই এই অধমের গুরু,
যাঁর হাত ধরেই আমার চলার পথের শুরু।
দুধ,চিনি আর ধলেশ্বরীর জলেই আমার সৃষ্টি,
গড করি হে গুরুদেব–আমি পোড়ামাটির কৃষ্টি।
তোমার আশীর্বাদেই প্রভু ছুটছে বিজয়রথ,
আমি হলেম শ্রী ‘চমচম’-একশভাগই সৎ।