মা কে নিয়ে লিখতে সেই
বসেছিনু কাল রাতে,
ভাবতে ভাবতে কখন রবি
উদয় হলেন প্রাতে।
এক অক্ষরে একটি শব্দ
কি পবিত্র রব,
তাঁর থেকে মধুর নাম
সত্যই দুর্লভ।
পুরো অভিধান জুড়েই হেরি
মা কথাটির ব্যাপ্তি,
আঁকিবুঁকি কাটছি খাতায়
ভাবের ঘরে সুপ্তি।
মা কে নিয়ে লেখা কি আর
আমার আছে সাধ্য !
ছোট্ট একটা শব্দ কিন্তু
কি বিষম দুর্ভেদ্য !
তোমরা দেখি মাকে নিয়ে
লিখছো কতই লেখা,
অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি
মুগ্ধ চোখে দেখা।
কাব্য নয় সেসব বুঝি
ঝকঝকে জলছবি,
আমার লেখার মূল্য কি বা
আমি ত’ নয় কবি।
তবুও দেখি চেষ্টা কোরে
মা যে আমার প্রাণ,
একটি রবেই যতেক সুর
তিন ভুবনের গান।
তিনি ছিলেন মা আমার
আপনজন শ্রেষ্ঠ,
তাঁর বিয়োগে প্রতি পলেই
হিয়ায় বিষম কষ্ট।
কায়ায় নেই আজকে তিনি
কেবল এখন মায়া,
তবে অন্তরেতে আছেন তিনি
বিছায়ে স্নেহচ্ছায়া।
রোগশয্যায় শুয়ে যখন
যন্ত্রণাতে কাঁদি,
তখন মায়ের মধু নামেই
জুড়ায় আমার হৃদি।
ঘুমপাড়াতেন ছোট বেলায়
দোলনাটাকে ঠেলে,
ঠাণ্ডা হত বুকটা আমার
মায়ের স্পর্শ পেলে।
তাঁর হাতের পাখার বাতাস
দাবদাহেও শীতল,
সেসব কথায় আজকে আসে
কেবল নয়নজল।
এই পৃথিবী অনেক বড়,
কিন্তু মায়ের মন !
তার থেকেও বিশাল আরো,
একাই ত্রিভুবন।
সব কিছুরই পরাজয়
মা কথাটির কাছে,
মায়ের থেকে সেরা দান
কিই বা আর আছে !
স্বর্গের ওই পরীর দল,
রেখো আমার কথা,
মায়ের সঙ্গে দেখা হলে
বোলো আমার ব্যাথা।
মায়ের মুখের মিষ্টি হাসিই
চিনিয়ে দেবে তাঁরে,
ভাসবে আপন খুশীর দোলায়
মধুর কণ্ঠসুরে।
চুম্বনটা দিয়ো এঁকে
তাঁর ললাটপরে,
জড়িয়ে নিও আমার হয়ে
মায়ে সোহাগভরে।
এই দুনিয়ার সবকিছুরই
হতেই পারে বদল,
কিন্তু মায়ের ঐ ভালবাসা
সর্বদাই অটল।
মা যে হলেন কোহিনূর
সবার থেকে সেরা,
তাঁর স্নেহের বন্ধনেই
সন্তান যে ঘেরা।
ন্যায়ের মুকুট থাকে যেন
মাথার ‘পরে আজি,
অন্তরে মা থাকুন সদা
ঝরুক স্নেহরাজি।
মায়ের কথা লিখতে বসে
এমন শীতেও ঘামি,
হঠাৎ দেখি দিবাকর
আবার অস্তগামী।
দূর আকাশে মাকে দেখি
সন্ধ্যাতারাবেশী,
তাকিয়ে আছেন আমার পানে
দুচোখ ভরা হাসি।
একদিন ত’ যাব মাগো
ফিরে তোমার কোলে,
তোমার ছায়ায় রইবো শুয়ে
পারিজাতের তলে।
তাই ত’ ভাবি অনেক হল
এবার টানি ইতি,
মা আছেন মনের খাতায়
এখন কেবল স্মৃতি।