মহাভারতের গল্প।
দুর্যোধনের জায়ার নামটি ভুলেই গেছ নাকি !
সেই যে রাণী বাসুদেবকে পরিয়েছিলেন রাখী।
তাঁকে নিয়ে আজকে এস একটা গল্প বলি,
খুলেই ফেলি সাতসকালে মহাকাব্যের ঝুলি।
নামটি তাঁর ভানুমতী–খুবই সুন্দরী,
সতের বছর বয়স–যেন রূপকথাটির পরী।
যুবরাণী কুরুরাজ্যের–দুর্যোধনের দার,
ভাবোই তবে সেই বয়সেও কেমন দাপট তাঁর।
হস্তিনাপুর প্রাসাদে ক্রুর কপট দুর্যোধন,
শ্রীকৃষ্ণে করেন রাতে আহারে নিমন্ত্রণ।
“বাসুদেবকে করবো আমি সোমরসেই মত্ত,
তাঁকে দিয়েই হবে আদায় ইন্দ্রপ্রস্থ সত্ব।”
ভোজসভায় সোমরসে সবাই নেশাগ্রস্ত,
ভানুমতী যুবরাণী–তিনিও বিধ্বস্ত।
পতিও তাঁর অবরুদ্ধ আপন পাতা জালে,
অন্তর্যামী হাসেন কেবল দুর্যোধনের ছলে।
সোমরসে নয়কো বশ বাসুদেবের প্রাণ,
সভার মাঝে তাঁর দ্যুতি ছিলই অম্লান।
এদিকে হায় ভানুমতী হারায়ে নিয়ন্ত্রণ,
বাসুদেবে করেন শেষে প্রেমের আলিঙ্গন।
কৃষ্ণ কিন্তু সবল চিত্ত–জড়ায়ে তাঁরে বক্ষে,
রেখে আসেন সন্তর্পণে গান্ধারীর কক্ষে।
যুবরাণীর নামে যদি কলঙ্কটি রটে,
প্রাণরক্ষাই তখন তাঁর দায় হবেই বটে।
পরপ্রাতে ভানুমতীর অপার ক্ষমা ভিক্ষা,
কৃষ্ণসনে গ্রহণ করেন সহিষ্ণুতার শিক্ষা।
সেদিন হতেই যুবরাণী কৃষ্ণ ভগিনী,
বাসুদেবের করে বাঁধেন পুষ্প বন্ধনী।
মহাকাব্য এমন কতই আছে নানান গল্প,
কারো মতে সত্য সবই–কারো মতে কল্প।
জন্মাষ্টমী পুণ্য তিথি–তারই প্রাক্কালে,
কৃষ্ণ কথায় ভেসে গেলেম আজকে সকালে।
—————————————————————
স্বপন চক্রবর্তী।