শীতের সকালে আজ কুয়াশার আকাল
সোনালী রোদটুকু আছে, ভাগ্যিস!
জানালার ধারে,আগাছার মধ্যেও নির্বিকারে বড় হয়েছে
একটা কুলগাছ, নির্লজ্জের মতো
ওর ছোট্ট পাতাগুলোয় কেউ যেন আদর করে তেল মাখিয়ে দিয়েছে,
তেল মাখানো গায়ে, ছোট্টবেলার ‘ আমি’র মতন
আজ রোদ পোহাচ্ছে এই কুলগাছটা।
কয়েকটা আবাদী জমি পেরিয়েই সামনে জাতীয় মহাসড়ক,
রাস্তা বড় হচ্ছে……
আশ্চর্য সকালেও,কিসের আশায় এই গাছটুকুর তলায়
এসে দাঁড়াল ওই কিশোরী ?
কুল পাকবার সময় আসেনি তো এখনো,
গাছটার গায়ে, আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে একটা বীরুৎ
একটাও ধুন্দল আসেনি ওতে, মৃতপ্রায় পরজীবী।
ধীরে ধীরে নিচে ঝুঁকে পড়ে কিশোরী
আগাছার ঝোপে লীন ওর শীর্ণ, তামাটে হাতটা এখন।
হাতে করে নিয়ে আসা ছোট্ট প্লাস্টিকের থলিতে
মুঠোভরে তুলে নেয় কিছু ঢেঁকিশাক,
আজ খাবারে সাদা ভাতের সাথে কিছু না হলেই যে নয়…..
কিছুটা পিছিয়ে আসে ও, হঠাৎ!
ভয়, না আতঙ্ক?
সামনের ঝোপগুলোর মধ্যে মড়্ মড়্ শব্দ,
এগিয়ে চলেছে একটা স্থূল, কালো লতা যেন।
মেয়েটা পালিয়ে যায়নি, দোহাই আওড়ায় শুধু ঠোঁটে।
জীবনের ভয় আজ খুবই কম ওর…..
নেহাতই সাপ তো,
রক্তমাংসের শরীরপিপাসু হিংস্র নেকড়ে তো নয়….
মানব মুখোশের পেছনে জন্তুটাকেও দেখেছে,
পরশু বাড়ির একচালা ঘরটাতে
কাকার রক্তে বিছানা ভিজিয়েছে।
সূর্যের সোনালী আভা…..
কুয়াশাহীন সকাল…..
জ্বলজ্বল করে ওঠে ওর সোঁদা চোখদুটো,
…….. আবেগমুক্ত।