।৭।

ফিরে যাওয়ার সময় এসে গেল গগাবাবুর। তাঁর মনটা একটু খারাপ। ভাবেন নি যে আমেরিকা এসে এত ভালো লেগে যাবে। বিশেষত গত তিনটে গ্রীষ্মের মাস খুবই ভাল কাটলো। এখানে এরা বলে সামার। সামার বলতে এরা অগ্যান। আমেরিকার স্কুল কলেজে শিক্ষকদের সামারে কাজ না করলেও চলে। লম্বা ছুটি থাকে যাতে সকলে সুন্দর আবহাওয়াটা পরিপূর্ণরূপে উপভোগ করতে পারে। অবশ্যি টিয়া’র কাছে জেনেছেন যে বেশির ভাগ শিক্ষকরাই ৯ মাসের মাইনে পায়। টিয়াও তাই পায়। বারো মাস ছড়িয়ে মাইনেটা দেয় বলে মনে হয়না যে তিন মাস মাইনে পেলাম না। এই ৯ মাসের বাইরে শিক্ষকরা কিছু কাজ করলে সেটা উপড়ি। “তা তুই কিছু করিস না?” জিগ্যেশ করেছিলেন টিয়াকে।

“হ্যাঁ করি। এই সামারে তুমি এসেছো বলে আমি আর এক্সট্রা কাজ নিই নি। অলসো, দ্যাট ওয়ে, আই ক্যান স্পেন্ড মোর টাইম উইথ জয়”। ওনার জন্য টিয়া ছুটি নিচ্ছে ভেবে গগাবাবু আপত্তি জানাতে যাচ্ছিলেন, কিন্ত যখন জয়এর ব্যাপারটা শুনলেন, তখন আর কিছু বললেন না। আর তাছাড়া মেয়েটা যে ওনার সাথে সময় কাটাতে চায় এই ব্যাপারটা একটা গভীর দাগ কেটে দিল তাঁর অন্তরে। আমাদের নিজেদের কালচারে বড় হওয়া মেয়েরাও আজকাল এসব করে না, আর একে দেখ? সামারে প্রায় রোজই কোথাও না কোথাও টিয়া’র সঙ্গে বেরোতেন। সেন্ট্রাল পার্কে হাঁটা তো ছিলই, তা ছাড়াও নিউ ইয়র্ক মেট্রপলিটান লাইব্রেরী, ব্যাটারী পার্ক, মেট্রপলিটান মিউসিয়াম অফ আর্ট, ইত্যাদি সব ঘুরে দেখেছেন। মোটামুটি জয় সমেত যে সমস্ত জায়গায় যাওয়া সম্ভব, টিয়া তাকে সেসব জায়গাতেই নিয়ে গেছে।

হাঁটার সমস্যা গগাবাবুর একবারেই গেছে। ফিট্‌বিটের হিসেব অনুসারে প্রয়োজনের অনেকটা বেশীই হাঁটছেন উনি। একদিন ইউনিভার্সিটি দেখাতে নিয়ে গেছিল টিয়া। নিজের ডিপার্টমেন্ট, নিজের অফিস, সব ঘুরে ঘুরে দেখালো। গর্বে গগাবাবুর বুকটা ভরে উঠেছিল সেদিন। পৃথিবীর সব নারী যদি আজ টিয়ার মত হোতো! ভেবেছিলেন তিনি। মাঝখানে নায়াগ্রা ফললস্‌ও ঘুরে এলেন। ওই একটা অভিযানেই সমর তাদের সঙ্গে ছিল। নায়াগ্রা ফললস্‌ গগাবাবু ছাত্রজীবনেও একবার দেখেছিলেন, তবে এত বছর পর দেখে একটা নতুন অনুভুতি হোলো তাঁর। সত্যি, প্রকৃতির অসীম ব্যাপ্তির সম্মুখে আমরা সবাই কত তুচ্ছ!

অনেকদিন ধরেই লক্ষ্য করেছেন গগাবাবু যে তাঁর ছেলে বৌমার ফ্ল্যাটে অনেক সুন্দর সুন্দর সব শিল্পকার্জ। গগাবাবু এসব ভালো বোঝেন না, তবে তাঁর দেখে মনে হয়েছে যে এগুলো আমেরিকা বা ভারতের নয়। খুব সম্ভবত মিশর বা ওই জাতীয় কোনো দেশের শিল্প। একদিন দেখলেন টিয়া তাদের মধ্যেই একটা ব্রঞ্জএর স্ট্যাচু ঘষামাজা করছে। “এগুলো কোথাকার?” জিগ্যেশ করলেন গগাবাবু। “সবই ইজীপ্টএর” উত্তর দিল টিয়া। গগাবাবু নিজের অনুমাণের ক্ষমতায় বেশ গর্ব বোধ করলেন। “তোরা কি মিশরে গিয়েছিলিস?” আবার প্রশ্ন করলেন। “হ্যাঁ, প্রায় তিন বছর হয়েছে। জয় জন্মানোর জাস্ট আগে”। টিয়ার উত্তরগুলো কেমন যেন উচ্ছ্বাশহীন। “ছোটবেলা থেকে ওই মিশরের পিড়ামিড আর চীনের প্রাচীরের কথা শুনে এসেছি। ওই দুটো আমারও খুব দেখার ইচ্ছা”। গগাবাবু দেখলেন যে তার বউমা আর কোনো উত্তর দিল না। অবশ্যি তিনি কোন প্রশ্ন তো করেন নি! যাইহোক, তিনি আর এনিয়ে বেশী ঘাঁটাঘাঁটি করলেন না। গিয়ে যোগদান করলেন নাতির খেলায়।

জয়এর এখন ডুডার সাথে খুব ভাব। হবে নাই বা কেন? ডুডার মত বাধ্য খেলার সাথী আর কজন হয়? ডুডাকে সে হর্সি হতে বলে। ডুডা চার হাত পায়ে নেমে ঘোড়া হয়। ডুডাকে এলিফ্যান্টএর মত চেঁচাতে বলে, ডুডা তাই করে। ডুডাকে মৃতদেহ হতে বলে, ডুডা তা পর্জন্ত্য হতে রাজী হয়। এখন ডুডা অন্ত তার প্রাণ। রোজ দুপুর বেলা লাঞ্চ খাওয়ার পর দাদু-নাতি মিলে কার্টুন দেখতে বসে। জয় ডুডার কোলে চড়ে বসে। টিয়া অনেকবার বলেছে ডুডার পাশে বোসো, ডুডার কষ্ট হবে, কিন্তু জয় তা শুনবে না। ডুডার কোলে চড়ে সে ঘন্টার পর ঘন্টা কার্টুন দেখতে থাকবে। তারপর ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পরবে। তখন গগাবাবুর রেহাই। একি কার্টুন রোজ দেখে জয়। গগাবাবুর এখন প্রতিটা কার্টুনের প্রতিটা অধ্যায় মুখস্ত। এখন উনি জানেন যে প্রথম দিন গাড়িতে দেখা সেই বেগুনী জন্তুটার নাম বার্নী। সে আসলে একটা ডাইনোসর। এছাড়াও আছে ক্লিফর্ড দ্যা বিগ রেড ডগ, কিউরিয়াস জর্জ নামক এক বানর, কায়ু ইত্যাদি। জয়কে কোলে নিয়ে কার্টুন দেখতে দেখতে গগাবাবুরও অনেক সময় ঢুলুনি এসে যায়। উনিও এন্তার ঢোলেন। অনেক সময়ই দেখা যায় যে বেলা তিনটে নাগাদ দাদু নাতি দুজনেই সোফার ওপর ঘুমে আচ্ছন্ন। গগাবাবু জানেন যে কলকাতায় ফিরে গিয়ে এই মুহূর্তগুলো উনি সব থেকে বেশী মিস্‌ করবেন। এখনই ভাবতে গেলে তাঁর দম বন্ধ হয়ে আসে। গলায় বাষ্প জমে যায়।

যাওয়ার দিন প্রায় চলেই এসেছে। গত কয়েকদিনে ধরে গগাবাবুর আর কিছু করতে ইচ্ছা করছে না। নিজের চিন্তা ভাবনা নিয়েই আছেন উনি। কি ভেবেছিলেন আর কি হোলো! ভেবেছিলেন এখানে এসে মাস খানেকের মধ্যেই হাঁপিয়ে উঠবেন, আর এখন যেতেই মন চাইছে না। মনে অনেক শান্তি, অনেক তৃপ্তি নিয়ে তিনি দেশে ফিরে যাবেন। একটা ব্যাপার বাদ দিয়ে। “হ্যাঁ রে, সমর কোনো এক্সারসাইজ করে না?” একদিন জিগ্যেশ করে বসলেন টিয়াকে। গগাবাবু দেখেছেন যে তাঁর ছেলে বৌমার ঘরে একটা হাঁটার যন্ত্র আছে। একদিন দরজার ফাঁক দিয়ে ওনার নজরে পরেছে যে টিয়া ওটার ওপর দৌড়চ্ছে। তাছাড়াও যন্ত্রটা চললেই উনি একটা শোঁ শোঁ শব্দ পান। অনেকদিন ধরে নজর রেখে উনি জেনে গেছেন যে একমাত্র টিয়াই ওটা ব্যাবহার করে। সমর করে না। তবে শুনেছেন যে আমেরিকায় আজকাল বড়বড় কম্পানির অফিসে ব্যাম করার, টেনিস খেলার, বা অন্যান্য শারীরিক চর্চার ব্যাবস্থা থাকে। এমনকি কলকাতাতেও আজকাল এসব চালু হচ্ছে। হয়ত সমর অফিসে থাকাকালিনই এক্সারসাইজ করে নেয়। বাড়ি ফিরে সময় হবে না বলে। বাড়িতে আর কতটুকু সময়ই বা থাকে!

কিন্তু টিয়ার উত্তরে তার আশাভঙ্গ হোলো। এক কখায় সে শুধু বলল “না”। ব্যাস্‌। কেন করে না, কি অসুবিধা, কোনোকিছুই আর সে আলোচনা করলো না। বিচিত্র ব্যাপার! অথচ এই ছেলেরই কি চেহারা ছিল। বাঁশের কঞ্ছির মত। এক ফোঁটা মেদ ছিল না। টিয়াই বা কিছু বলে না কেন? সমরের সাথে প্রেমে পরার একটা কারণ নিশ্চয়ই ও সুপুরূষ ছিল বলে। তা না হলে টিয়ার মত স্মার্ট সুন্দরী মেয়ে ওর প্রতি আকৃষ্ট হবেই বা কেন? স্বামীকে ঠিক পথে রাখা তো সব নারীরই ধর্ম! গগাবাবু তাঁর জন্মগত বিশ্বাসগুলোতে ঠায় নিলেন। হঠাৎ টিয়ার ওপর একটু বিরক্তও হলেন। মুখে বললেন “ওর ওজন শিজ্ঞিরি কমানো দরকার। চল্লিশও বয়েস হয়নি এখনো। পরে খুব পস্তাবে। তা তুই কিছু বলিস না কেন?” গগাবাবুর গলায় মৃদু ঝাঁঝ। টিয়া কোনো উত্তর দিলো না। শ্বশুরের দিকে অবাক হয়ে একবার তাকালো। তারপর যে কাজে ব্যাস্ত ছিল, তা আবার মনোযোগ দিয়ে করতে থাকলো। গগাবাবু তাতে আরো বিরক্ত হলেন।

রবিবার দুপুর তিন’টেয় গগাবাবুর ফিরে যাবার ফ্লাইট। এই শেষ কটা দিন গগাবাবুকে বেশ মণঃপীড়া দিচ্ছে। সেদিন টিয়াকে ওই ভাবে কথাটা বলাতে উনি কিছুটা অনুতপ্ত। তবে মুখে আর কিছু বলেন নি। ঠিক করেছেন ওই ব্যাপারে আর কোনো কথা বলবেন না। উনি বোঝেন যে সবসময় স্ত্রী চাইলে বা বললেই স্বামী সেটা মেনে নেয় না। তিনিই কি সবসময় মৃনালিণীর কথা শুনে চলেছেন? আর তাছাড়া এরা বর্তমান যুগের স্বামী-স্ত্রী। আমেরিকায় থাকে। উভয়েই আয় করে। এদের স্বনির্ভরতা বোধটা অনেক বেশি। সমর সঙ্ক্রান্ত চিন্তাটা নিয়েই তাকে দেশে ফিরতে হবে। কিছু করার নেই। তাও এ যাত্রায় তিনি অনেক কিছু পেলেন। এইসব নিজেকে বুঝিয়ে মনটা শান্ত করার চেষ্টা করলেন।

বাবা চলে যাবে বলে শনিবার রাতে সমর তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরলো। সন্ধ্যে সাড়ে ছটা নাগাদ তিনজনে ডিনার খেতে বসলো। আজ টিয়া নিজেই রান্না করেছে। বাঙালি রান্না সে পারে না, তবে অন্যান্য পাশ্চাত্য রান্না সে ভালোই করে। গগাবাবুর পছন্দসই কিছু পদ সে বানিয়েছে। গগাবাবু লক্ষ্য করলেন যে গুনগুন করে একটা গান ভাঁজতে ভাঁজতে সমরই আজ টেবিলে সব খাবার দাবার সাজালো, গ্লাসে জল ঢাললো। তিনজনে খাওয়া শুরু করলো। আগামীকাল কটায় বেরতে হবে, কি ভাবে যাওয়া হবে, এই সব আলোচনা চলছিল। গগাবাবুর বিন্দুমাত্র খাবার ইচ্ছা নেই। প্লেটে খাবারটা কেবল এপাশ থেকে ওপাশ নাড়ছিলেন।

তাঁর মতিগতি হঠাৎ লক্ষ্য করে সমর খাওয়া থামিয়ে বলল “বাবা, তুমি খাচ্ছো না? তোমার কি পাস্তা ভালো লাগছে না? একটু ভাত নেবে?” “না, খাচ্ছি” বলে খাওয়ার ভান করলেন গগাবাবু। খানিক্ষণ পর খাওয়া থামিয়ে ছেলের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন। ছেলের ছোটবেলার অনেক ঘটনা মনে পরে গেল। এক সময় বললেন “তুই এক্সারসাইজ করিস না কেন?” সমর কোনো উত্তর দিল না। চুপচাপ খেতে থাকলো। গগাবাবু তাতে চটে গিয়ে বললেন “আমি চুয়াত্তোর বছরের বুড়ো, আমি স্বাস্থের জন্য হেঁটে মড়ছি, আর তুই একটা সাঁইত্রিশ বছরের জোয়ান ছেলে, তুই কি করছিস?” ছোটবেলায় সমরকে যে ভাবে বকুনি দিতেন ঠিক সেই রকম তার গলার তেজ।

সমর এবারেও কোনো উত্তর দিল না, তবে তার খাওয়া ইতিমধ্যে থেমে গেছে। চুপচাপ প্লেটের ওপর মুখ নিচু করে বসে রইল সে। “তোর কিছু হোলে এদের কে দেখবে? তোর কোন গ্যানগম্মি নেই?” গগাবাবুর গলা ক্রমশ চড়ছে। টিয়াও খাওয়া থামিয়ে দিয়েছে। “প্লিস্‌ ড্যাড্‌!” বলে গগাবাবুকে থামানোর চেষ্টা করলো সে। গগাবাবু তাকে উপেক্ষা করলেন। “তুই চুপ কর। তোরও দোষ আছে”। আজ এর একটা মিমাংসা করেই ছাড়বেন তিনি। টেবিলে থাপ্পড় মেড়ে সমরের দিকে তাকিয়ে গর্জে উঠলেন “চুপ করে আছিস কেন? উত্তর দে। তোর লজ্জা করে না? গান্ডেপিন্ডে খাচ্ছিস আর ঘুমোচ্ছিস?” টিয়া হঠাৎ চেয়ার পেছনে ঠেলে উঠে দাঁড়ালো “স্টপ্‌ ইট ড্যাড!” তার গলা দৃঢ়।

কিন্তু গগাবাবুর তখন পাগলের মত অবস্থা। গাঁক গাঁক করে চেঁচিয়ে বললেন “না, আমি স্টপ করবো না। তুই আমাকে স্টপ করাবার কে?” তারপর সমরের দিকে তাকিয়ে “কেন তুই এক্সারসাইজ করিস না? কেন?” টিয়ার গলা হঠাৎ প্রচন্ড উঁচুতে উঠলো। “বিকজ হি ক্যাননট! হি ক্যাননট ড্যাড্‌!” গগাবাবু অবাক হয়ে টিয়ার দিকে ঘুরলেন। টিয়ার দুচোখ দিয়ে জল ফেটে পরছে। কান্নার দমকে তার সমস্ত শরীর কেঁপে কেঁপে উঠছে। আস্তে আস্তে টিয়া আবার নিজের চেয়ারে বসে পরলো। টেবিলে হাত গুটিয়ে রেখে বিধ্বস্ত মুখ লুকালো সেই হাতের মধ্যে। গগাবাবু হতভম্ব হয়ে কেবল চেয়ে রইলেন। জয় এতক্ষন বসার ঘরের মেঝেতে একটা ট্রাক নিয়ে খেলছিলো। এইসব চেঁচামেচিতে ভয় পেয়ে কাঁদতে শুরু করলো।

সমর নিজের চেয়ার পেছোনে ঠেলে আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়ালো। তার দৃষ্টি এখনো মাটির দিকে। বসার ঘরে গিয়ে জয়কে কোলে তুলে নিলো। নিয়ে নিজের শোবার ঘরে চলে গেল। পেছনে বন্ধ হয়ে গেল দরজা। গগাবাবু কি করবেন বুঝতে পারছেন না। বোকার মত দাঁড়িয়ে রইলেন। খানিক বাদে টিয়া চোখ মুছে মুখ তুলে চাইলো। “তুমি বোসো ড্যাড্‌। খেয়ে নাও” বলে নিজের খাবার প্লেট্‌টাও টেনে নিল। পরবর্তী কয়েক ঘন্টায় টিয়া যা বলল তা শুনে গগাবাবুর ইচ্ছা হোলো সেই মুহূর্তে মাটির সাথে মিশে যেতে। কেউ কোনোদিন তাঁকে যেন আর খুঁজে না পায়!

To be continued…

~ ফিট্‌বিট্‌ (সপ্তম পর্ব) ~

Print Friendly, PDF & Email
Previous articleইরোটোম্যানিক
Next articleফিট্‌বিট্‌ (অষ্টম পর্ব)
Sandip Mazumder
I can't write but I try. What else do you want to know? লিখতে পারি না কিন্তু চেষ্টা করি। আর কি জানতে চান? To contact me, please E-mail me at sandip23m [at] yahoo.com. Your feedback is what inspires me to write. So, please leave a comment.
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments