সমকালীন দৃশ্যপট – আগুন জ্বলছে চারিদিকে। নাহ্! এ আগুনে হাত সেঁকা যায় না, বরং সব পুড়ে ছারখার হয় অনায়াসেই। দেশ জুড়ে হাহাকার … তীব্র যন্ত্রনার চিৎকারে কান পাতা দায়। মানুষ আজকাল হাসতে ভুলে গেছে, তারা আর দু-দণ্ড কোথাও বসে না … শুধু দৌড় আর দৌড় … কোনো সম্পর্ক নেই, ভালবাসা নেই, আবেগ নেই। আছে লোভ-পাপ-মৃত্যু।
সমাজ … শব্দটির মধ্যমণি ‘মা’ । আর সেই মা’র প্রতিই তীব্র অবহেলা। বৃদ্ধাশ্রমে বাড়ছে আবাসিকের সংখ্যা, বাবা-মায়ের লোভ-লালসার শিকার কিশোরী, বোনের প্রতি ভাইয়ের অবিচার, আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে চলা হাজার হাজার নারীর অসন্মান, যারা প্রতি মুহূর্তে ধর্ষিত হচ্ছে পরিচিত- অপরিচিতদের হাতে … ।
কি চাই আমরা??? সারাজীবনের সুখ-শান্তি! না কয়েক মুহূর্তের আনন্দ! আমরাই এর উত্তর জানি না। নাকি জানি? এ প্রশ্নের উত্তর দেবে কে? সাত্যি কথা বলতে কি সমাজে একটা কঠিন রোগ বাসা বেঁধেছে, সমূলে এর উৎখাত না করলে আর রেহাই নেই। আমাদের ভেতরটা আজ ফাঁপা বড্ড! ইলিয়ট কি সাধে বলেছিলেন … “we are the hollow men” … আমাদের-ই লোভ-লালসা-প্রতিহিংসা পরায়ণতা আমাদের কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। আর আমরা একটু একটু করে শেষ হতে হতে সেই শূণ্যেই মিলিয়ে যেতে বসেছি। কি অদ্ভুত পরিস্থিতি না? নিজেরাই এক আত্মঘাতী খেলায় মেতে উঠেছি। উল্লাস, নিজের আত্মহুতির! ধর্ষন, খুন বা ইভটিজিং-এর মতো ঘটনা আজ প্রতি মুহূর্তে অহরহ ঘটছে … যার পরিসংখ্যান দেখলে তাজ্জব হয়ে যেতে হয়। আর সেই অপরাধের অপরাধী আমাদের-ই চোখের সামনে মাথা উঁচু করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অবশ্য কিছু ক্ষেত্রে যে তারা শাস্তি পায় না তা বললে ভুল হবে। কিন্তু সেই প্রসেসটা এতই বড়, যে তাতে ধৈর্য্যহারা হওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না। শুধু মেয়েরাই যে এর শিকার তাও নয় কিন্তু। টাকার লোভে বন্ধুকে কিডন্যাপ করে হত্যা, বান্ধবি-প্রেমিকাকে ফুসলিয়ে জঘন্য এম.এম.এস কাণ্ড, এমনকি রাগে বিবেককে হারিয়ে নিজের সন্তান হত্যা… সব কিছু চলছে প্রতিদিন, অহরহ। আর আমরা ক’জন সকালে খবরের কাগজ পড়ছি, ভাত খেয়ে অফিস যাচ্ছি, লেকচারে দেশ উদ্ধার করছি তারপর বাড়ি ফিরে নাক ডাকিয়ে ঘুমাচ্ছি। মাঝে মাঝে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদও করছি। ভালই তো আছি।
আসুন একটু ভাবি, এই অসুখ সারানোর জন্য কোন ডাক্তার-বদ্যির প্রয়োজন আছে কি? নিজেদের কাছেই এর ওষুধ আছে। একটা সুন্দর সকালের আশা কিন্তু এখনও করা যায়, তাই নয় কি ???