একেলা ঘরের কোণে
বসে আছি আনমনে,
বাতায়নখানি দোলে অশান্ত সমীরে,
মরাল মরালী খেলে দূরে দীঘি নীরে।
মাছরাঙা দেয় হানা দীঘিটির বুকে,
নিমেষেই মাছ লয়ে উড়ে যায় সুখে।
রসাল শাখেতে বাজে পাখীর কাকলি,
ভেসে চলে হেথা হোথা তরু পাতাগুলি।
স্বচ্ছ দীঘির জলে সাদা বক দুটি,
খেলা ছলে মাঝেমাঝে করে লুটোপুটি।
শালিক,ছাতারে,শ্যামা,ফিঙে দলে দলে
ঘোরে সব মায়াময় তরু ছায়াতলে।
এঁকেবেঁকে চলে গেছে রাজপথখানি,
শূন্য হৃদয় তার নাই কোন প্রাণী।
দূর হতে কানে যবে ‘মাগো’ ডাক আসে,
আপন মায়ের মুখ মনোপটে ভাসে।
বাঁধা আছে ধেনুখানি কোন্ প্রান্তরে,
অশান্ত স্বরে সে ডাকে বারে বারে ।
রবিকরে ক্লান্ত কাকপাখী দুটি,
স্নান করে দীঘি নীরে ডানা ঝটপটি।
নীরব দ্বিপ্রহরে গেহকোণে একা,
হেরি মেঘ বৈশাখী এঁকে চলে রেখা।
চাতকের ডাকে শুনি খুশীর আভাস,
তৃষ্ণা মিটবে তার তাই বুঝি রাস।
বসে আছি আনমনে অলস দুপুরে,
আঁখি দুটি মুদে আসে যেন ঘুমঘোরে।
অতীতের কথা ফেরে স্বপনের সাজে,
কত ব্যাথা ঘোরে আজি হৃদয়ের মাঝে।
দূর দিগন্ত মোরে দেয় হাতছানি,
বলে কেন তোর মনে হাহাকার শুনি !
কি জবাব দেই আমি অসহায় মূক,
অন্তর অতৃপ্ত যেথা কোথা পাই সুখ !
একা একা বসে ভাবি মানুষের সাথে,
ফের কবে হবে দেখা বাহির জগতে !
ধরণীর বুকে আজ গভীর যাতনা,
ধীরে ধীরে বুঝি মম লুপ্ত চেতনা।
স্নিগ্ধ ছায়ার মাঝে শান্তির রাশি,
আমি আর নেই বুঝি কোন পরবাসী।
ভাবি যেন মিলে গেছি সকলের সাথে,
দেখা হবে কোন এক নবীন প্রভাতে।