ঢাকা মেডিকেল কলেজ, বাংলাদেশ:
একদিন আগেই ডেলিভারী অপারেশন্ হয়েছে এক ত্রিশ-বত্রিশ বছর বয়সী মহিলার। অপারেশন্ এর লিড্ ডক্টর তাঁর বেড-র কাছে চেক্-আপের জন্য এলে মহিলাটি উদ্গ্রীব হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন – “ডক্টর, ইট্স বেবি গার্ল রাইট? ডক্টর, স্পিক্ আপ্ ! আই হ্যাভ্ পেইড্ ইউ সেভ্রেল ল্যাক্স ! সেই গতকাল থেকে আপনারা আমাকে অন্ধকারে রেখেছেন”! ডক্টর নম্র ও নীচু স্বরে বললেন – “মিস্ রয়, আপনার বেবি নরমাল হয়নি। আমি একদম নিশ্চিত নই তবে মনে হচ্ছে যে মেল্ এম্ব্রিয়োর উপর অ্যাপ্লাই করা ড্রাগে ইস্ট্রোডায়োলের হাই ডোসেজ্-ই বেবির সেক্স-কে অ্যাফেক্ট করেছে। বেবির জেনেটিক স্যাম্পেল বলছে যে ওর দুটো সেক্স ক্রোমোজোমই অপরিণত – না সম্পূর্ণরূপে এক্স, না ওয়াই”। মহিলাটি ভীষণ রেগে গিয়ে বললেন – “হোয়াট্ ডু ইউ মিন্ ? ঝেড়ে কাশুন…………..”।
একুশ-বাইশ বছর পর—————
কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত:
অদ্রী ও মৃত্তিকা খুবই হ্যাপি এক কাপল্। তাদের কমোন্ ফ্রেন্ড বৃষ্টি। সেদিন বৃষ্টি তার বাড়ির ড্রইং রুমের সোফায় বসে অদ্রী ও মৃত্তিকাকে ভীষণ টেন্স্ হয়ে বলছিল – “জানাজানি হলে কি হবে ? আমি সাগরকে মুখ দেখাব কিভাবে”! ঠিক সেই সময় সাগর ড্রইং রুমে এসে গম্ভীর গলায় বলল – “জানতে কিছু আর বাকি নেই বৃষ্টি। নদী আমায় সব বলেছে”। বৃষ্টি সাথে সাথে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল। সে দ্রুত সোফা ছেড়ে উঠে সগরের বুকে দুহাত রেখে বলল – “আই ক্যান এক্সপ্লেইন সাগর ! আই, আই ওয়াস্ ড্রাঙ্ক ! প্রোবাব্লি ওয়াইনে কিছু মেশানো ছিল। আমি নিজের মধ্যে ছিলাম না সাগর”। সাগর অত্যন্ত রুক্ষ গলায় বলল – “আই ডোন্ট রিকোয়্যার্ এক্সপ্ল্যানেশন্। আইম্ ব্রেকিং আপ উইথ্ ইউ। মেসেজ্ করেও বলতে পারতাম, তবে আমাদের এত বছরের সম্পর্ক, তাই মনে হলো যে এইটুকু ভদ্রতা তুই ডিসার্ভ করিস”। এই বলে সে নিজের হাতে তার বুক থেকে বৃষ্টির হাতদুটো এক ঝটকায় সরিয়ে দিয়ে গট্গট্ করে বৃষ্টির বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল। বৃষ্টি প্রলম্বিত কাঁদো কাঁদো স্বরে রিকোয়েস্ট করে উঠল – “সাগর, আমায় একটা সুযোগ……….”, বৃষ্টির মুখের কথা শেষ হওয়ার আগেই মৃত্তিকা গম্ভীর অথচ নীচু স্বরে বলল – “ওকে যেতে দে বৃষ্টি। এমনিতেও ও তোর কথায় থেমে যাবে না। নদীকে এখন ওর মনে ধরেছে”। বৃষ্টি একথা শুনে রেগে বলল – “হোয়াট্ দ্য হেল্ আর ইউ টকিং অ্যাবাউট !” এখন অদ্রী বৃষ্টিকে কিছুটা শান্ত করার ভঙ্গিতে বলে উঠল – “ওয়া ওয়ান মিনিট। ওয়ান মিনিট। বৃষ্টি, তোর সাথে নির্ঝরের গত রাতে পার্টির পরে যাই হয়ে থাক্, সেটা নদী জানল কিভাবে ? আমার কিন্তু নির্ঝর ছেলেটাকে প্রথম দিন থেকেই সুবিধের মনে হয় না”। মৃত্তিকা অদ্রীকে আড় চোখে একবার দেখে নিয়ে জিজ্ঞাসা করল – “আর নদী”? অদ্রী মৃত্তিকার প্রশ্নের কারণ না বুঝতে পেরে জিজ্ঞাসা করল – “মানে”? মৃত্তিকা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল – “আচ্ছা তোরা নির্ঝর আর নদীর ফেসিয়াল স্ট্রাক্চার, হাব-ভাবে কোন সাদৃশ্য দেখিসনি ? যদিও কলেজে খুব কমই আসে, কোনদিন নির্ঝর আর নদীকে কোথাত্ত একসাথে প্রেসেন্ট থাকতে দেখেছিস”? ড্রইং রুমে এক রহস্যময় নিস্তব্ধতা। সেই নিস্তব্ধতা ভেদ করে বৃষ্টি অত্যন্ত অনুসন্ধিৎসু স্বরে বলল –“তুই ঠিক কি বলতে চাইছিস পরিষ্কার করে বল্ তো”। মৃত্তিকা বৃষ্টির ল্যাপটপ-টা কোলে নিয়ে ইন্টারনেটে সার্চ করল – “অল্টারনেটিং হার্মাফ্রোডাইট্” ও যে তথ্য জানা গেল তা অদ্রী ও বৃষ্টিকে একেবারে চম্কে দিল – বাইশ বছর আগে বাংলাদেশে জন্মানো এক অস্বাভাবিক শিশু সব খবরের কাগজের কভার স্টোরি হয়ে ওঠে। শিশুটির শরীরে এক অজানা হরমোন পাওয়া যায় যা কিনা ডাক্তারদের মতে যৌন উত্তেজনার সময় কখনও টেস্টোস্টেরন এর মত ব্যবহার করে, আবার কখনও তার কার্যকারিতা অনেকটা ইস্ট্রোজেনের মত। প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় এই হরমোন যৌন উত্তেজনার সময় দেহের গঠনেও বিশেষ করে চেস্ট, ওয়েস্ট, থাই ও হিপ্-এর মধ্যে ফ্যাট ডিস্ট্রিবিউশন্-এ খুব দ্রুত পরিবর্তন আনার ক্ষমতা রাখে। বস্তুত দেহের ঐ অংশগুলির মধ্যে নির্দিষ্ট এক বা একাধিক অংশে সঞ্চিত ফ্যাট মলিকিউল-গুলো খুব তাড়াতাড়ি ভেঙে ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরি হতে থাকে ও সেই ফ্যাটি অ্যাসিড দ্রুত বাকি অংশগুলোতে ফ্যাট মলিকিউল হিসাবে সঞ্চিত হতে থাকে। শুধু তাই নয়; যখন দৈহিক গঠন দ্রুত বদলায়, স্কাল্প এবং গাল ও চিবুকের ত্বকে উপস্থিত বিশেষ প্রকার স্ট্রাক্চারাল প্রোটিন উৎপাদনকারী কোষগুলো খুব তাড়াতাড়ি স্কাল্প, গাল ও চিবুকে সঠিক অনুপাতে ছড়িয়ে পড়ে অবলীলাক্রমে লম্বা চুল অথবা ছোট চুল, দাড়ি-গোঁফ ইত্যাদি তৈরি করে দেয়। ফলে স্বাভাবিক অবস্থায় মানুষটির কোন লিঙ্গগত বৈশিষ্ট্য প্রকাশ না পেলেও যৌন উত্তেজিত অবস্থায় মানুষটি কখনও আদ্যন্ত পুরুষ আবার কখনও যৌন উত্তেজনায় সে নারী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে।