“ধূর প্রচন্ড বিরক্তিকর”, বেশ মনে মনে বিরক্ত হয়েই কথাটা বললেন চিরন্তন বাবু। চিরন্তন বাবুর বিরক্ত হবার পিছনে যথেষ্ট কারণও ছিল। কারণ যে ট্রেনটি করে তিনি জলপাইগুড়ি যাচ্ছেন তা প্রায় দুঘন্টা হলো একটি নাম না জানা স্টেশনে দাঁড়িয়ে আছে। এর কারণ যখন তিনি শুনলেন তখন তিনি আরও চোটে গেলেন। আসলে কি একটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে গোটা উওরবঙ্গ চত্ত্বরে বেশ কিছুদিন যাবত একটা মন মালিন্য চলছে। যার ফল স্বরূপ আজকের এই ট্রেন অবরোধ। যখন অবরোধ উঠে আবার ট্রেনটি তার গন্তব্যের দিকে চলা শুরু করলো তখন তিনি একটি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে একটু হেলান দিয়ে বসলেন।
চিরন্তন বসু হচ্ছেন পেশায় একজন ব্যাঙ্কের উচ্চ পদস্থ কর্মচারী। তবে তার পাশাপাশি তিনি একটু আধটু লেখালেখিও করেন। বেশ কয়েক মাস হলো তাঁর একটি বইও বেরিয়েছে। এছাড়া একটি অখ্যাত পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করেন। কিছুটা নিজের ইচ্ছে আর কিছুটা সেই অখ্যাত পত্রিকার সম্পাদকের জোরা জুরিতে তিনি ঠিক করলেন যে, এবার তিনি একটি ভূতের গল্প লিখবেন। কিন্তু সত্যি বলতে উওর কলকাতার বাবু বাগান স্ট্রিটে তাঁর বাড়িতে বসে চিরন্তন বাবুর পক্ষে ভূতের গল্পের প্লট খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়ছিল। তাই তিনি ঠিক করলেন যে, কলকাতার এই কোলাহল অধ্যুষিত এলাকা ছেড়ে একটু নিরিবিলিতে কোথাও একটা গিয়ে প্লট নিয়ে ভাববেন। যথারীতি তাঁরই এক বন্ধুর পরামর্শে এবং সেই বন্ধুরই বদান্যতায় শিলিগুড়ির একটি প্রত্যন্ত অখ্যাত জায়গায় একটি ছোট্ট কটেজে তাঁর থাকার ব্যবস্থা হলো, আর সেইজন্যই তিনি এখন ট্রেনে।
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে পৌঁছানোর পর তিনি একটি গাড়ি ভাড়া নিলেন এবং তাঁর জন্য বরাদ্দকৃত কটেজটির দিকে রওনা দিলেন। প্রায় ঘন্টা দুয়েক লাগলো সেই কটেজটিতে পৌঁছাতে। গাড়ি ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে যখন তিনি কটেজটির অভিমূখে তাকালেন তখন তাঁর সেটি দেখে বিশেষ পছন্দ হয়নি। কারণ কটেজটি দেখলেই বোঝা যায় সেটি ভীষণ পুরনো এবং তার কোনো যত্নই নেওয়া হয়না। মেরামতির অভাবেই কটেজটির রং এখন কালচে ধরনের হয়ে গেছে। সামনে আগাছার জঙ্গল। আগে একটা বাগান ছিল বটে তবে এখন সেটা প্রায় মিলিয়ে গেছে। প্রথম দর্শনেই বাড়িটি দেখে চিরন্তন বাবুর ভূতের বাড়ি বলেই মনে হয়েছিল। বেশ রাগও হয়েছিল তাঁর বন্ধুটির উপর। কিন্তু পরক্ষণেই তাঁর মনে হলো ভূতেরই গল্প যখন লিখবেন বলে ঠিক করেছেন তখন এরকম একটি বাড়িতে বসে লিখলে মন্দ হয়না। এইসব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে চিরন্তন বাবু সামনের পুরনো জং ধরা গেটটি ঠেলে ভিতরে ঢুকলেন। বোধহয় তাঁর গেট খোলার আওয়াজ পেয়েই কটেজটির ভিতর থেকে একটি লোক বেরিয়ে এলো। “আসুন সাবজী আসুন” বলে সম্বোধিত করলেন চিরন্তন বাবুকে। লোকটির চোখ মুখ দেখলে মনে হয় লোকটি জাতে গোর্খা। রোগা ছিপছিপে চেহারা, গায়ের রং ফর্সা। পরনে একটি লাল রঙের জামা ও নীল রঙের প্যান্ট। কোমরে একটা ভোজালি। চিরন্তন বাবু একটু ইতস্তত করেই বললেন, “তুমি…!” লোকটি ভাঙ্গা ভাঙ্গা বাংলায় বলল, “জী, সাবজী আমার নাম পখিয়া। এই কটেজটির দেখভাল করি”। চিরন্তন বাবু বেশ অবাক হয়েই বললেন, “তা তুমি বেশ ভালোই বাংলা বলো দেখছি”। লোকটি প্রত্যুত্তরে কিছুই বললোনা। শুধুমাত্র একটু মুচকি হেসে চিরন্তন বাবুর ব্যাগগুলো হাতে নিয়ে তাঁকে ভিতরে নিয়ে গেলো।
কটেজটির ভিতরে প্রবেশ করতেই চিরন্তন বাবুর মনটা বেশ ভালো হয়ে উঠলো। কারণ বাইরে থেকে দেখে কটেজটা যতটা জীর্ণ মনে হয়েছিল, ভেতরটা ঠিক ততটাই সুশ্রী, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও গোছালো। কটেজের নীচের অংশটা প্রায় পুরোটাই হল ঘর। ঘরটার একদম মাঝখানে একটি বড় আকারের সোফা ও তার বাঁ পাশে ও ডান পাশে দুটি ছোট আকারের সোফা রয়েছে, আর সোফাগুলির মাঝখানে একটি বেশ পুরনো টেবিল। তার উপর একটি ফুলের ভাস-ও রয়েছে। তবে তার মধ্যে কি ফুল আছে তা তিনি ঠিক চিনতে পারলেন না। এছাড়াও চারিদিকের দেওয়ালে ছড়িয়ে আছে অজস্র তৈলচিত্র এবং পশুদের কাটা মুন্ডু। হল ঘরটির একদম ডানদিকে একটি রান্নাঘর আর বাঁদিকে আরও দুটো দরজা চোখে পড়লো, আর তার পাশ দিয়েই সোজা উঠে গেছে একটি সিঁড়ি। পখিয়া বলল, ” সাবজী আইয়ে। আপনার জন্য উপরের কামরার ব্যবস্থা করেছি”। চিরন্তন বাবু যতটা সম্ভব নীচের ঘরটিকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে পখিয়াকে অনুসরণ করে উঠতে লাগলেন। কয়েকধাপ সিঁড়ি পেরোতেই একটি টানা বারান্দা চোখে পড়লো। তার ধারেই বেশ কতগুলো ঘর আছে। পখিয়া তার মধ্যে একটা ঘরের দরজা খুলে চিরন্তন বাবুকে ভিতরে আসতে বললো। ঘরটা বেশ সুবিশাল। ভেতরে একটা খাট, একটা টেবিল ও চেয়ার রয়েছে। চিরন্তন বাবু মনে মনে বেশ প্রসন্নই হলেন ঘরটি দেখে। পাশে দূর থেকে একটি পাখির সন্ধ্যার কোলাহল শোনা যাচ্ছে। পখিয়া ব্যাগগুলো ঘরের একটি কোনায় রেখে বললো, ” সাবজী, নীচে বাথরুম আছে। আপনি হাত মুখ ধুয়ে নিন আমি আপনার জন্য গরম কফি এনে দিচ্ছি।”  চিরন্তন বাবু বললেন, ” আচ্ছা ঠিকাছে।” পখিয়া নীচে চলে গেল। জামা কাপড় ছাড়ার আগে তিনি একবার বাইরের বারান্দাটায় এসে দাঁড়ালেন। একটা সিগারেট ধরিয়ে বাইরের গোধূলি লগ্নে ডুবে থাকা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যটাকে উপভোগ করতে লাগলেন। সিগারেটটাতে একটা শেষ টান দিয়ে যখন ফেলতে যাবেন তখনই তাঁর মনটা বেশ খচ্ খচ্ করে উঠলো। একটা চাপা অস্বস্তি চিরন্তন বাবুকে পেয়ে বসতে চাইল। বারবার তাঁর মনে হতে লাগলো কেউ বোধহয় তাঁকে লক্ষ্য করছে। তিনি একবার এপাশ ওপাশ ভালো করে তাকিয়ে দেখে নিলেন। না কোথাও কেউ নেই। কটেজটা শহর থেকে বেশ অনেকটা দূরে বলেই এখানে তেমন কোনো মানুষজন চোখে পড়েনা। আসার সময় গাড়ির ভেতর থেকে কয়েকজনকে দেখেছিলাম বটে তবে এখন অন্ধকার নামার সাথে সাথে চারিদিক একদম নিঃস্তব্ধ হয়ে গেছে। শুধু একদম নিঃস্তব্ধ বললে ভুল হবে। ঝিঁঝিঁর ডাকটা বেশ স্পষ্টই শোনা যাচ্ছে। চিরন্তন বাবু মনে মনে ভাবলেন এই জায়গাটা একদম সঠিক তাঁর ভূতের গল্পের জন্য। এই ভেবে তিনি সিগারেটটা বাইরে ফেলে ঘুরতে যাবেন এমন সময় তিনি আঁতকে উঠলেন। কারণ তাঁর অতর্কিতে কখন যে পখিয়া তাঁর পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে তা তিনি টেরও পাননি। পখিয়াকে দেখে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললেন, ” ও তুমি! আমি ভাবলাম কে না কে!” পখিয়া একগাল হাসি দিয়ে বললো, ” জী সাবজী, আমি। আপনার জন্য গরমা গরম কফি ও পকোড়া এনেছি। নিন সাবজী খেয়ে নিন।”  চিরন্তন বাবু একটু ইতস্তত করেই বললেন, ” আ… আচ্ছা ঠিক আছে যাও ঘরের ওই টেবিলটার উপর রেখে এসো। পরে খাচ্ছি।”  পখিয়া প্রত্যুত্তরে “জী সাবজী” বলে ভেতরে চলে গেল। নামবার সময় হঠাৎ পেছন ঘুরে চিরন্তন বাবুকে উদ্দেশ করেই বললো, ” সাবজী, কিছু কি দেখে ভয় পেয়েছিলেন?” চিরন্তন বাবু একটু ভ্রু কুঁচকে বললেন, ” কেন, ভয় পাব কেন?” একটু কৌতুক করেই বললেন, ” তা পখিয়া, এই বাড়িতে ভয় পাওয়ার মতো কিছু আছে নাকি? মানে ওই ভূত-টূত টাইপের!” বলেই বেশ অট্টহাসিতে ভেঙ্গে পড়লেন। এই মজাটা বোধহয় পখিয়ার একদম পছন্দ হলোনা। তাই সে ওই কথার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু না বলে শুধুমাত্র ” সাবজী যদি কিছু দরকার হয় আমাকে ডাক দেবেন” গম্ভীর ভাবে বলে নীচে চলে গেল। চিরন্তন বাবুর হাসিটা নিজের থেকেই থেমে গেল। মনে মনে ভাবতে লাগলেন পখিয়ার সাথে এইরকম ভাবে মজা করাটা বোধহয় উচিৎ হয়নি। তিনি মনে মনে একটু অনুতপ্ত হলেন বটে, কিন্তু সেই ব্যাপারটাকে বিশেষ আমোল না দিয়ে নিজের ঘরে চলে গেলেন।
রাতের খাবারটি সেরে তিনি ভাবলেন যে, শুয়ে কাজ নেই তারচেয়ে বরং গল্পের প্লটটা নিয়ে ভাবা যাক।যেমন ভাবনা তেমন কাজ। তখন রাত বারোটা। চিরন্তন বাবু টেবিলের উপর লেখার খাতাটা খুলে কিছু একটা ভাবার চেষ্টা করছেন। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার এই যে, প্রায় এক ঘন্টা হতে চললো তিনি তখনও পেনের একটি দাগও ফেলতে পারেননি। তিনি নিজেও বেশ অবাক হলেন, তাঁর তো এমন কখনো হয়না। তবে আজ কেন! শেষে একপ্রকার বিরক্ত হয়েই তিনি গায়ে চাদর মুড়ি দিয়ে বাইরের বারান্দায় এলেন একটা সিগারেট খাওয়ার উদ্দেশ্যে। ভাবলেন বুদ্ধির গোড়ায় ধোঁয়া দিলে যদি কিছু লাভ হয়। যথারীতি পাজামার পকেট থেকে সিগারেটের বাক্স ও দেশলাইটা বের করে তার থেকে একটা সিগারেট নিয়ে মুখে পুরে সবে দেশলাইটা জ্বালতে যাবেন এমন সময় একটা অজানা নারীর কন্ঠ স্বর, ” জানেননা যে, সিগারেট খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর!”
” কে?” বলে চিরন্তন বাবু চমকে পিছন ফিরে তাকালেন, কিন্তু কাউকেই দেখতে পেলেন না। এদিক ওদিক ভালো করে দেখলেন। প্রায় অন্ধকার বারান্দাটায় যতটা চোখের দৃষ্টি তীক্ষ্ণ করা যায়, তিনি করলেন। কিন্তু কই, কোথাও তো কেউ নেই! চিরন্তন বাবু ভাবলেন হয়তো তাঁর মনের ভুল। আসলে এখানে আসার পর থেকেই তাঁর মনের মধ্যে শুধু ওই ভূতের গল্পের প্লটের কথাই ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাই হয়তো তাঁর এই মতিভ্রম। ছোটবেলা থেকে তিনি খুব একটা সাহসী না হলেও খুব একটা ভীতুও তিনি নন। কাজেই তাঁর এইরকম অকারণ ভয় পাওয়ার কথা ভেবে নিজের উপর একটু বিদ্রুপের হাসি হেসে আবার ধূমপানে মনোনিবেশ করলেন। তিনি মুখে সিগারেটটা পুরে আবারও দেশলাইটা জ্বালতে গেলেন কিন্তু পারলেন না। নিজের অজান্তেই সিগারেটটা মুখ থেকে খসে পড়ল।কারণ তিনি আবার সেই নারী কন্ঠটি শুনতে পেয়েছেন। এবার আগের তুলনায় আরো বেশী স্পষ্ট। তাঁর সারা শরীর বেয়ে যেন একটা শীতল বাতাস বয়ে গেলো। ভয়ে আতঙ্কে তাঁর হাত পাগুলো আড়ষ্ট হয়ে পড়ল। তিনি মুখ দিয়ে কিছু অস্ফুট স্বর বের করলেন বটে তবে সেগুলো কোনো বোধগম্য শব্দ নয়। তাঁর গলায় শব্দগুলো যেন জড়িয়ে পেঁচিয়ে যেতে লাগল। তিনি চেয়েও কিছু বলতে পারলেন না। বুকের ভিতর হৃৎপিণ্ডটা জোড়ে জোড়ে বাজতে শুরু করলো। মনে হতে লাগল যেন সেটা এক্ষুনি তাঁর বুক চিড়ে বেরিয়ে আসবে। ” ভয় পেয়ে গেলেন নাকি?” বলেই নারী কন্ঠটি প্রবল অট্টহাসিতে ভেঙ্গে পড়লো। তবুও চিরন্তন বাবু কিছুই বলতে পারলেন না। তিনি সেই একই রকম ভাবেই অসাড় হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন। নারী কন্ঠটি আবার বলল, ” এইতো সকালে পখিয়াকে বেশ ঠাট্টা করেই বলছিলেন ভূতের কথা। তা এখন সত্যিকারের ভূতের খপ্পরে পড়ে সব সাহস উবে গেল বুঝি!” আবার সেই নিঠুর অট্টহাসি, ” ওমন বীরত্ব রেখে কি লাভ, যে বীরত্ব কোনো কাজেই আসেনা”। কথাটা চিরন্তন বাবুর কাছে যথেষ্ট অপমানসূচক বটে। এই কথাটি যদি কোনো মানুষ বলতো তাহলে হয়তো তিনি এর যোগ্য জবাব দিয়ে দিতেন। কিন্তু এক্ষেত্রে তিনি একেবারেই নিরুপায়। তিনি কোনোরকমে সাহস এনে অনেক কষ্টে কাঁপা কাঁপা গলায় বললেন, ” আ… আমার ভুল হয়ে গেছে। আমায় দয়া করে মাফ করে দিন। আমি জানি আমার এই রকম ভাবে মজা করাটা উচিৎ হয়নি।”  কথাটা শুনে নারী কন্ঠটি আবার হাসিতে ফেটে পড়লো। বেশ একটু সুর করেই বললো, ” ভয় পেওনা, ভয় পেওনা তোমায় আমি মারবো না, সত্যি বলছি তোমার সঙ্গে কুস্তি করে পারবোনা।”  একজন ভূতের মুখ থেকে এইরকম ভাবে সুকুমার রায়ের কবিতা শুনে চিরন্তন বাবু বেশ অবাকই হলেন। তিনি একটু সাহস করেই বললেন, ” আপনি আবার কবিতাও পড়েন নাকি!”
– ” সে অনেক কাল আগের কথা। বেঁচে থাকতে অনেক পড়েছি। সে সব তো এখন আর তেমন ভাবে মনেও পড়েনা।”
এবার একটু অভিমানের সুরে বলল, আচ্ছা আপনিতো ভারী বেয়াক্কেলে লোক!” চিরন্তন বাবু একটু অপ্রস্তুত হয়ে প্রশ্ন করলেন, ” কেন বলুনতো?” নারী কন্ঠটি বলল, ” তখন থেকে আপনি আমার উল্টো দিকে মুখ করে কথা বলছেন। কি ব্যাপার বলুনতো! আমাকে কি আপনার পছন্দ হয়নি, নাকি এখনও আমাকে ভয় পাচ্ছেন?” নারী কন্ঠটির মুখে এইরূপ টিটকারি শুনে চিরন্তন বাবু তটস্থ হলেন। বললেন, ” না তেমন কিছুইনা। আসলে ভাবছি যে, আপনিতো ভূত কাজেই আপনাকে হয়তো দেখতে পাবোনা। তাই আর তাকাচ্ছিনা।”
-” কে বলল যে, দেখতে পাবেন না! পুরোটা নাহোক কিছুটাতো দেখতে পাবেন”
-” মানে?”
-” আরে একবার ঘুরেই দেখুন না। তাহলেই বুঝতে পারবেন।”
-” আচ্ছা ঠিকাছে”
এই বলে চিরন্তন বাবু আসতে আসতে করে তাঁর ডানদিকে ঘুরলেন। বারান্দার ওই আলো আঁধারি পরিবেশের মধ্যেও চিরন্তন বাবু স্পষ্ট দেখতে পেলেন তাঁর থেকে হাত দশেক দূরে একটি ঘন অন্ধকারাচ্ছন্ন ছায়ামূর্তি দাঁড়িয়ে আছে। তাঁর বুকের ভিতরটা ছ্যাঁত করে উঠলো বটে কিন্তু তিনি আগের মতো আর তেমন ভয় পেলেন না। কারণ নারী কন্ঠটির সাথে ক্রমাগত কথপোকথন করতে করতে চিরন্তন বাবুর মনে হতে লাগল যেন সেই নারী কন্ঠটির অধিকারিণী তাঁর দীর্ঘদিনের পরিচিতা। আবার রাতের নিঃস্তব্ধতা ভেঙ্গে নারী কন্ঠটির প্রশ্ন, ” কি, আমার কথার অর্থ কি বুঝতে পারলেন?” চিরন্তন বাবুর বুঝতে একটু সময় লাগলো। তারপর তিনি একটু হেসে বললেন, ” হ্যাঁ বুঝেছি। তবে আমার একটা কথা জানতে ইচ্ছা করছে।”
-” হ্যাঁ বলুন”
-” আচ্ছা আপনি কে? কি নাম আপনার?”
একটা চরম অট্টহাসি করে নারী কন্ঠটি বলল,” প্রেতাত্মাদের আবার নাম হয় নাকি! মৃত্যুর পরে তাদের একটাই পরিচয়, ভূত।” আবার সেই অট্টহাসি। চিরন্তন বাবু একটু ইতস্তত হয়েই বললেন, ” যদি কিছু মনে না করেন তাহলে একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি?” নারী কন্ঠটি হাসি থামিয়ে একটু গম্ভীর হয়ে বলল,” মনে করবো কিনা সেটা নির্ভর করছে আপনার প্রশ্নটির উপর”। “তাহলে থাক”, একটু হতাশ হয়েই বললেন চিরন্তন বাবু। ” আরে আমিতো মজা করছিলাম”, আবার গলায় রসিকতার সুর চড়িয়ে বলল নারী কন্ঠটি, ” বলুন কি জানতে চান?” চিরন্তন বাবু গলার সুরটা একটু নরম করেই বললেন, ” আপনি এখানে কি করে এলেন, মানে…”। কথাটা শেষ করতে পারলেননা। তার আগেই ” ও আচ্ছা এই ব্যাপার” বলেই আবার হাসিতে ফেটে পড়লো নারী কন্ঠটি। কিছুক্ষণ হাসার পর সেঁ বলল, ” এমন ইতস্তত করলেন যেন মনে হলো আপনি আমায় বিয়ের প্রস্তাব দেবেন।” কথাটা শুনে চিরন্তন বাবুর একটু লজ্জা বোধ করলেন। ” এখানে এসেছিলাম আমার স্বামীর সাথে বেড়াতে”, নারী কন্ঠটি বলা শুরু করলো, ” কিন্তু ও যে আমায় এইভাবে একলা ফেলে চলে যাবে তা আমি কখনই বুঝতে পারিনি”। চিরন্তন বাবু একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলার শব্দ পেলেন। তারপর তিনি খানিকটা উদগ্রীব হয়েই বললেন,” কেন? কি হয়েছিল?” নারী কন্ঠটি কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, ” আপনিতো বেশ আগ্রহ নিয়েই আমার কথাগুলো শুনছেন। কই নিজের ব্যাপারে তো কিছু বললেন না।” চিরন্তন বাবু বুঝতে পারলেন সেঁ প্রসঙ্গ ও পরিবেশ- দুই-ই পাল্টানোর চেষ্টা করছে। তাই তিনি নিজের কৌতুহলকে সংবরণ করে বললেন,” বলুন কি জানতে চান?”
-” এই আপনার নাম, কোথায় থাকেন… এইসব”
-” বেশ। আমার নাম চিরন্তন বসু। থাকি কলকাতায়”
-” তা আপনি কি একা থাকেন? বিয়ে করেননি?”
খানিকটা হেসে বললেন,” না তা নয়। বিয়ে করেছিলাম। তবে স্ত্রী গত হওয়ার পর আপাতত একাই আছি।”
-” আপনার স্ত্রীকে বুঝি খুব ভালবাসতেন!”
চিরন্তন বাবু একটু উদাস হয়েই বললেন, “ভীষণ।”
-” জানেন আমিও আমার স্বামীকে ভীষণ ভালোবাসতাম। কিন্তু একদিন কি যে হলো, সবকিছু কেমন যেন বদলে যেতে লাগল। ও কথায় কথায় ঝগড়া করতে শুরু করলো আমার সাথে। রাতে মদ খেয়ে বাড়ি ফিরে এসে ভীষণ অশান্তি করতো, এমনকি মারধরও করতো। তবুও আমি ওকে ছেড়ে যেতে পারিনি… বিয়ের এক বছর পর ও আমাকে নিয়ে ঠিক এখানেই বেড়াতে এসেছিল। আমি ভেবেছিলাম ও হয়তো পাল্টে গেছে। আবার সব আগের মতো হয়ে গেছে। কিন্তু সেদিনও আমি ভুল ছিলাম। কারণ তখনও ওর অভিসন্ধি বুঝতে পারিনি। সেদিনও ঠিক এরকমই একটা রাত ছিল। আমি বারান্দায় রেলিং-এর উপর হাত রেখে বাইরের প্রকৃতিকে দেখছিলাম। এমন সময় ও আমার পেছনে এসে আমায় দুহাত দিয়ে জাপটে ধরলো। আমার কানের কাছে মুখ নিয়ে এসে বলল, ” আমি তোমায় খুব কষ্ট দিই, তাইনা!” আমি কিছুই বললাম না। শুধু চুপ করে ওর কথাগুলো শুনতে লাগলাম। ও ডান হাত দিয়ে আমার ঘাড়ের কাছে পড়ে থাকা চুলগুলো সরিয়ে সেখানে মুখ রেখে বললো, ” আমি জানি তুমি আমাকে ভীষণ ভালোবাসো। তাই তুমি আমার এতো অত্যাচার সহ্য করেছো। তবে আর না। আজ তোমায় সকল কষ্ট থেকে মুক্তি দেবো।” আমি একটু জোরে শ্বাস টেনে বললাম, ” কি করে?” ও তৎক্ষণাৎ আমাকে ঘুরিয়ে আমার দুই গালে হাত রাখলো। আমি চোখ বন্ধ করে ওর স্পর্শ অনুভব করতে লাগলাম। তখন আমার ঠোঁট দুটো কাঁপছে। আমি কিছু বলতে পারছিলামনা। ও আস্তে আস্তে আমার কপালে, চোখে, গালে এবং সবশেষে ঠোটে চুম্বন করতে লাগলো। আমি ওকে আরও জোরে জড়িয়ে ধরলাম। আমার শরীরের সকল উত্তেজনা তখন ওর সমস্ত পাশবিক অত্যাচারকে নিমেষে ভুলিয়ে দিয়েছিল। আমি শুধু ওর ভালোবাসাটাই অনুভব করতে পারছিলাম। আমি বুঝতে পারলাম ওর হাত তখন আমার গাল থেকে নেমে আমার গলার কাছে এসে দাঁড়িয়েছে। আঙ্গুলগুলো গলায় আস্তে আস্তে সঞ্চারিত হচ্ছে। তারপর সেটা স্হির হয়ে গেল। হঠাৎ আমি চোখ দুটো খুলে ফেললাম। আমি একটা অস্বস্তি অনুভব করতে শুরু করলাম। কারণ ওর আঙ্গুলগুলো তখন আর আদর করছেনা, আর ভালবাসা দিচ্ছেনা। সেগুলো যেন লোহার মতো শক্ত হয়ে গিয়ে আমার গলার উপর চেপে বসেছে। আমার শ্বাস রুদ্ধ হয়ে আসছে। দু হাত দিয়ে ওকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছি কিন্তু ওর শক্তির কাছে আমি বারবার পরাস্ত হয়ে যাচ্ছি। ওর চোখে এতক্ষণ ধরে যে ভালোবাসা দেখেছিলাম সেটা যেন এক নিমেষে উধাও হয়ে গেছে। তার জায়গায় সেখানে এক নারকীয় দৃষ্টি। যে দৃষ্টি এর আগে আমি কখনও দেখিনি। আমি অস্ফুট স্বরে বলার চেষ্টা করলাম, ” ছাড়ো, আমায় ছাড়ো। কি করছো কি তুমি!” ও অত্যন্ত ক্রুর ভাবে আমাকে ধমক দিয়ে বলল, ” চুপ কর মাগী। আজ তোর জন্য আমি রিয়াকে বিয়ে করতে পারছিনা। তুই কি ভেবেছিলি আমি তোকে নিয়ে এখানে প্রেম মারাতে এসেছি!” ওর কথায় স্পষ্ট প্রতিহিংসার ছাপ ফুটে উঠলো। আমি তখনও প্রানপনে চেষ্টা করে যাচ্ছি ওর ওই পাশবিক আক্রোশ থেকে রেহাই পাওয়ার। কিন্তু আমি ক্রমাগত ব্যর্থ হচ্ছি। আমার দমও আস্তে আস্তে ফুরিয়ে আসতে শুরু করলো। সবকিছু কেমন জানি ঝাপসা হতে শুরু করলো। আমার গলা দিয়ে অস্ফুট আওয়াজ ছাড়া আর কিছুই বেরোলোনা। আমি শুধু শেষবারের মতো ওর কথার কয়েকটা শব্দই শুনতে পেলাম, ” মাগী আজ তোকে মেরে আবার নতুন করে…” চোখের ঝাপসা ভাবটা ধীরে ধীরে অন্ধকারের দিকে ঢলে পড়ল… ঘন দুর্ভেদ্য অন্ধকার। এরপর আর কিছু মনে নেই।” এই বলে নারী কন্ঠটি চুপ করলো। চিরন্তন বাবু কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলেন কিন্তু বলতে পারলেন না। কারণ দূর থেকে আরেকটা অস্পষ্ট গলার স্বর ভেসে আসছিল। তবে গলার স্বরটা এতটাই ক্ষীণ যে, তিনি প্রথমবারে কিছুই বুঝতে পারলেন না। ” একটা আওয়াজ শুনতে পাচ্ছেন?” প্রশ্ন করলেন চিরন্তন বাবু। নারী কন্ঠটি প্রত্যুত্তরে কিছু একটা বললো কিন্তু তিনি তা শুনতে পেলেন না। কারণ আওয়াজটি ততক্ষণে আগের চেয়ে আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। স্পষ্ট শুনতে পেলেন কেউ তাঁকে ডাকছে, ” দাদা, ও দাদা! আরে উঠবেন না…!” ক্রমাগত তাঁকে ডেকে যাচ্ছে। তারপর সবকিছু কাঁপতে শুরু করলো। কাঁপতে কাঁপতে চিরন্তন বাবুর আশপাশটা ঝাঁপসা হয়ে গেল। তারপর এক বিরাট ঝাঁকুনিতে চিরন্তন বাবু ধরমর করে উঠলেন। দেখলেন তিনি ট্রেনের কামরায় শুয়ে আছেন। তাঁর মুখের উপর ঝুঁকে পড়ে তাঁরই কামরার এক সহযাত্রী তাঁর দিকে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে আছেন। চিরন্তন বাবুকে চোখ মেলতে দেখে তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে বললেন, ” আরে মশাই, ট্রেনের কামরায় এইরকম ভাবে অঘোরে কেউ ঘুমায়! কখন থেকে আপনাকে ডাক দিচ্ছি! আপনিতো ওঠার নামই করছেন না। চিরন্তন বাবু একটু ব্যস্ত হয়ে বললেন,” কেন কি হয়েছে?” লোকটি হেসে বললেন,” কি আর হবে মশাই! নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনতো এসে গেছে। চিরন্তন বাবু নির্বিকার হয়ে বললেন,” এসে গেছে!”
-” নাহলে কি আর এতবার করে ডাকতুম আপনাকে! এবার চলুন, উঠে পড়ুন দেখি। আমি আসি, হ্যাঁ! আবার যদি সুযোগ হয় আপনার সাথে ফের দেখা হবে” বলে লোকটি ট্রেন থেকে নেমে গেলেন। চিরন্তন বাবু জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখলেন যে, সত্যিই প্ল্যাটফর্ম এসে পড়েছে। বাইরের মানুষজনের কোলাহল, ট্রেনের আওয়াজ তিনি শুনতে পাচ্ছিলেন। চিরন্তন বাবু তাঁর ব্যাগপত্র নিয়ে ট্রেনের কামরায় থেকে নেমে বাইরে এসে একটা গাড়ি ভাড়া করে তাঁর কটেজটির দিকে রওনা হলেন। গাড়িতে বসে বসেই তিনি কেবলমাত্র তাঁর স্বপ্নটির ব্যাপারেই চিন্তা করতে লাগলেন। তাঁর মনের ভিতরটাতে ভীষণ খটকা লাগছিলো। বারবার ভাবছিলেন যে, কাউর স্বপ্ন কি এতো স্পষ্ট হয়! ঠিক যেন স্বপ্ন নয়, বাস্তব কোনো ঘটনাকে তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন। যেন তিনি সেই স্থানেই উপস্থিত ছিলেন। তবুও একটা দিক থেকে চিরন্তন বাবুর বাচোঁয়া যে, ভূতের গল্পের প্লট নিয়ে তাঁকে আর বেশী পরিশ্রম করতে হবেনা। তিনি যা কিছু স্বপ্নে দেখেছেন সেটাকেই নিজের কল্পনার সাথে মিশিয়ে আরেকটু রং চড়িয়ে কিছু একটা খাড়া করে দেবেন। এইসব ভাবছিলেন হঠাৎ তাঁর অন্যমনস্কতা ভাঙ্গলো ব্রেক কষার ঝাঁকুনিতে। চেতনা ফিরে পেয়ে চিরন্তন বাবু ড্রাইভারকে বললেন,” ক্যায়া হুয়া ভাই! গাড়ি কিউ রোক দিয়া?” ড্রাইভার বললো,” সাবজী আপকা কটেজ আ গ্যায়া।” হ্যাঁ সত্যিই তো! তিনি এতক্ষণ ধরে নিজের চিন্তার মধ্যে এতটাই ডুবে ছিলেন যে, এতটা পথ কি করে যে কেটে গেল তা তিনি বুঝতেই পারেননি। তিনি গাড়ি ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে সমস্ত ব্যাগপত্র নিয়ে যখন কটেজটির দিকে তাকালেন তাঁর মেরুদণ্ড বেয়ে একটি শীতল স্রোত বয়ে গেল। তিনি তাঁর স্বপ্নে যে কটেজটি দেখেছিলেন হুবহু সেই কটেজটি যেন তাঁর চোখের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। যেন মনে হচ্ছে কেউ মন্ত্রবলে তাঁর স্বপ্নের ভিতর থেকে কটেজটাকে তাঁর সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এক অজানা আতঙ্কে চিরন্তন বাবুর সারা শরীরটা যেন কাঁটা দিয়ে উঠলো। তিনি নিজের মনকে স্বান্তনা দিতে লাগলেন। বোঝাতে লাগলেন যে, তাঁর এই ভাবনা সম্পূর্ণ মনের ভূল। পুরোটাই নিছক কাকতালীয়। বেশীরভাগ কটেজগুলির আকার, আকৃতি ও চেহারার ধরনের সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। আর মানুষ মনে মনে যাকিছু কল্পনা করে সেইগুলোই পরবর্তীকালে অবচেতন মনে স্বপ্ন আঁকারে দেখা দেয়। তাছাড়া তিনিও কয়েকদিন যাবৎ এখানে আসার কথা নিয়ে ভাবছিলেন। কাজেই তাঁর এই স্বপ্ন অবচেতন মনের ভেলকি মাত্র। চিরন্তন বাবু জং ধরা মেইন গেটটা খুলে সামনে নুড়ি বেছানো রাস্তাটা ধরে আস্তে আস্তে কটেজটির দিকে এগোতে লাগলেন। মেইন গেট খোলার আওয়াজ পেয়েই কটেজটির ভিতর থেকে একটি লোক বেরিয়ে এলো। কটেজটির ভিতরের দিকটাতে তেমন একটা আলো না থাকায় প্রথমটায় চিরন্তন বাবু লোকটার মুখটা ভালো করে বুঝতে পারলেন না। কিন্তু লোকটি যখন বাইরে আসলো তখন চিরন্তন বাবু থমকে দাঁড়িয়ে পড়লেন। কারণ এই ঘটনাটির জন্য তিনি একেবারেই প্রস্তুত ছিলেননা। তিনি বিস্ফারিত চোখে তাঁর দিকে এগিয়ে আসা লোকটির দিকে চেয়ে রইলেন। তাঁর মাথায় ভিতরটা ঝিম ঝিম করতে লাগলো। মনে হতে লাগলো তিনি বোধহয় এক্ষুনি মাথা ঘুরে পড়ে যাবেন। সেই একই মুখ, সেই একই চেহারা! লোকটিকে চিনতে চিরন্তন বাবুর এতটুকুও অসুবিধা হলোনা। কারণ তাকে তিনি আগেও দেখেছেন। এক অজানা ভয়ে তাঁর গা শিউরে উঠলো। নিজের অজান্তেই তাঁর মুখ থেকে একটা শব্দ বেড়িয়ে এলো, একটা নাম ” পখিয়া!”

(সমাপ্ত)

Print Friendly, PDF & Email
Previous articleএ কেমন খেলা?
Next articleআগমনবার্তা
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments