Home Literature Poetry হ্রদয়ের ভাঙড়ীর দোকানে এসো একদিন

হ্রদয়ের ভাঙড়ীর দোকানে এসো একদিন

0

শিকড় সমেত সম্পর্কের লকলকে চারাগাছটি উপড়ে ফেলে মারতে
আমাকে তুমি তিন তালাক দিলে
চোখের সামনে ভাসে আজও সেই ভাঙনের দিনের কথা
আখেরি ছাড়াছাড়ি করিয়ে নিতে তুমি জরুরী খবর দিয়ে ডেকে এনেছিলে আমায়
ফুলার রোডে,
বেশি সময় নাওনি, আসি বলতে
অশান্তির এক ক্যাচাল বাঁধিয়ে দিয়ে পচিঁশ মিনিটের মধ্যেই
রাগের উপর রাগ সাজায়ে বিরাট একটা আটি বেঁধে
তুমি হাটা মারলে সোজা,
বার কয়েক পিছন ফিরে তাকালে যখন
সেই প্রথম দেখলাম জীবনে
চোখ দিয়েও গুলি ছোড়া যায় , মানুষকে মেরে লুটিয়ে ফেলা যায় ।
সত্যিই
তোমার ঘৃণার একে-৪৭ এর নির্দয় বুলেট বর্ষণে
সেদিন
আমার বুকের নরম পিঠটা একবারে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল।

তোমার জানার কথা না, আফরোজ!
কখনো জানাতে যাইও নি আমি
সেই ঝাঁঝরা বুকের এলোপাতাড়ি ছিদ্রগুলো এখনো দগদগে হয়ে আছে
আমাবশ্যার রাতে রাতে এখনো রক্ত চোয়ায়, কসানী ঝরে
সে কি তীব্র পঁচা, ভেবড়া গন্ধ একটা!
আামি পরনের লুঙ্গি, ঘাড়ের গামছা
হাতের কাছে যা পাই তা দিয়েই নিজের নাক, মুখ নিজে চেপে ধরি
নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে আমার
মনে হয়
আকাশ সেঁচে সেঁচে সমস্ত অক্সিজেন আর বাতাস
তোমার সিন্দুকে ভরে নিয়ে তুমি মেরে দিয়েছ
অক্্িরজেনের কালো বাজারী, কুখ্যাত মজুদদার হয়েছ এক তুমি,
কি দারুন!
কোমরে চাবি নিয়ে পাড়া বেড়াতে বেরিয়ে যাও তুমি নিশ্চিন্তে
দায়েদীর বাড়ি বাড়ি গিয়ে সুখের গল্প শুনিয়ে আসো,
তোমার গল্প
তোমার মানুষ ক্ষুণের গল্প, ভালবাসার একটা বোকাসোকা পক্ষী মারার গল্প
যে পক্ষীটি তোমার পটানোর দানা খেয়ে পোষ মেনেছিল
আর তোমার প্রেমের সারাব পান করে
একশ একদিন মাতাল হয়ে বাসায় ফিরেছিল।

তোমকে দোষ দিই না, আফরোজ
তোমারই বা কি দোষ!
আজকাল বিষয়-বৈভবের হেচকা টানের কাছে
একলা হ্রদয়ের জোর টেকে না
ভালবাসার এখন খিদে বেড়েছে, শুধু এক ঠোক হ্রদয় দিয়ে
তো ভালবাসার পেট ভরে না এখন
যুম করলে ভালবাসায় এখন পেটই বড় দেখায়, শরীরই প্রধান হয়ে যায়
তাই ভালবাসায় হ্রদয় দান সে তো শুধু একটা ছল মাত্র!
কিন্তু আমার আবার শরীর দিয়ে ভালবাসার কোৎ খাটানো বিশ্রি লাগতো, আজও লাগে
ভালবাসার চেয়ে ভাল খওয়ার, ভাল পরার পায়তারা যাদের বেশি
তাদেরকে শীতের পাখি বই আর কী বলা যায়!
থাকতে আসেনা এরা কোন কালে, ফিরে যাওয়াটাই এদের ঈশ্বরের কাছে
মানত করা থাকে।
তুমিও ফিরে গেলে অতিথী পাখিটির মত
আমার কেবল হলো এক যুগ ধরে কাঁকড়ার চাষ
ভালবাসার বচ্চারাই বড় হয়ে খেয়ে ফেলল
বেচারী মা কাঁকড়াটকে।

শুনেছি তোমাদের নাকি আজকাল খুব ঠোকাঠুকি হয়!
শরীররের ভালবাসা না কি খুব অসহ্য লাগছে তোমার!
বাড়ি, গাড়ি সব নাকি পানসে লাগছে!
কোন মাল মসল্লা, এলাস লবঙ্গতেই নাকি টেস্টি হচ্ছে না তোমার জীবন যাপন!
জ্যোতিষি নাকি তোমার হাত দেখে বলেছে
ধনের মানুষে আর তোমায় বাঁচাবে না!
শুনলাম জ্যোতিষির গণণায় এসেছে-
তোমার বাজার সদায়ের নাম লিস্টি নাকি বদলায় ফেলতে হবে!
বুদ্ধদেবের মত নাকি প্রাসাদ ছাড়তে হবে তোমায়
খুজতে হবে পাপ মুক্তির উপায় !

চলে এসো না একদিন, আফরোজ!
তোমার আগে পরের সব পাপ মোচনের গোবর চুনা নিয়ে বসে আছি
এই সেই পুরোনো যোগি, আমি
না না ঘর করতে হবে না আমার সাথে, তোমার শীররটাও দরকার নেই আমার
ও দরকার আমার আগেও ছিলনা
আমি প্রেমের জালালী কইতর, তুমি তো জান!
হ্রদয় খুটে খুটে খাওয়া আমার স্বভাব
হ্রদয়ের কারবার করতে আসতে পার, একদিন
যে কোন দিন
হ্রদয়ের ভাঙড়ীর দোকানে আমার
ভাঙা, ফাটা হ্রদয়ের বদলাই মাল কিনতে আসতে পার একদিন।
আশা করি ঠকবে না কোনভাবেই
এই আমার সাথে
তোমার সব
কেনায়
আর
বেঁচায়।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
wpDiscuz
0
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
Exit mobile version