Home Literature মেঘমল্লার Part 1

মেঘমল্লার Part 1

0

‘এখন আপনাদের সামনে নৃত্য পরিবেশন করতে চলেছে ‘মেঘমল্লার’ গ্রুপ। ’
চিন্তার সুতোগুলো আরেকবার ছিঁড়ে গেল নবারুণের। নবারুণ সান্যাল,বিশ্বখ্যাত বহুজাতিক কোম্পানি ‘সান্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ্’-এর কর্ণধার,কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে অন্যতম বিশেষ অতিথি।
কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ বিজ্নেস মিটিং বাতিল করে সুদূর নিউইয়র্ক থেকে আজ দুপুরের ফ্লাইটে তিনি কলকাতা এসেছেন আলমাম্যাটারের টানে,বা হয়তো কালের গতিতে পিছনে ফেলে আসা কোনো অপূর্ণ ইচ্ছে নিয়ে।
দু সপ্তাহ আগে আকাশছোঁয়া স্কাইস্ক্র্যাপারের বাইশ তলায় কাচঘেরা শীততাপ-নিয়ন্ত্রিত অফিসে বসে যখন বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণস্বরূপ পাঠানো ইমেলটা পড়ছিলেন,পঞ্চাশটা বসন্ত পেরোনো নবারুণের ব্যবসায়ী ব্রেন ফিরে যেতে চাইছিল ইউনিভার্সিটির দুরন্ত দিনগুলোতে। মেদিনীপুরের অখ্যাত গ্রাম থেকে শুধু মায়ের আশীর্বাদ আর দুচোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে কলকাতায় পড়তে আসা ‘নবু’ থেকে আজকের কোটিপতি ‘নবারুণ সান্যাল’ হয়ে ওঠার মাঝে নায়াগ্রা বেয়ে বহু জল গড়ালেও নবারুণ কখনো ভুলতে পারেননি দাঁতে দাঁত চেপে ভাঙাচোরা ভাগ্যের সাথে লড়াইয়ের সময়টাকে।এতো বছর পর নিজেকে ফিরে দেখার এমন অপ্রত্যাশিত সুযোগ আসায় খুশি হয়ে তাড়াতাড়ি ছুটি নেওয়ার কথা ভাবতেই মনে পড়ল ১৫ই ফেব্রুয়ারি,অর্থাৎ অনুষ্ঠানের দিনই কোম্পানির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সংক্রান্ত একটা মিটিংয়ে তাঁর উপস্থিত থাকার কথা। মিটিংটা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ,আবার ইউনিভার্সিটির আমন্ত্রণ উপেক্ষা করাটাও অশোভনতার পরিচয়। এসব সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতেই সময়ের নৌকো চেপে মধ্যবয়স্ক হিসেবী মনে এসে হঠাৎ উঁকি মারল তিরিশ বছর আগের এরকমই এক শীতের দুপুরের স্মৃতি।
(ক্রমশ)

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
wpDiscuz
0
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
Exit mobile version