Home Literature Stories বন্ধু

বন্ধু

0

-“আমগাছের ডালে আটকে যাওয়া ঘুড়িটা যে পাড়তে পারবে তাকে আমি এই চকলেটটা দেব।”

রকির এই কথায় বিলু বলে, “আরে ঘুড়িটা তো ছিঁড়ে গেছে, মাঞ্জা কাটা। তাহলে ওই ঘুড়ি নিয়ে কি করবি?”“সে পরে দেখা যাবে? কে পারবি বল?”

মিতুল, অর্ণব, আর্য, পলি, সান্তা, সবাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকল। রাহা ঢিল ছুঁড়ে দু তিন বার চেষ্টা করল, পারল না। পাশ থেকে কানু কিছু না বলে বই রাখার ছেঁড়া ব্যাগটা মাটিতে ফেলে তরতর করে গাছে উঠে গেল। মগ ডালের দিকে গেল না। তবে সরু ডালটা ভেঙে ফেলল। নিচে পড়ে যাওয়া সেই ঘুড়ি বিলু রকিকে দিল।

রকি ঘুড়ি হাতে করে নিয়ে বলে, “এই নে কানু, দুটো চকলেট।”

অর্ণব জিজ্ঞেস করে, “দুটো কেন?”

একটু হেসে রকি বলে, “আমি দুটো দেব ঠিক করে ছিলাম। কিন্তু মুখে একটা বললাম।”

এর পর আর দাঁড়ায়নি রকি। সবাই যে যার মত টিফিন সেরে ক্লাসে চলে গেল।

তিন চারদিন পরে মাঞ্জাতে আটকে একটা শালিক। একেবারে নিচের ডালে। তাও সবাই চিৎকার করছে। রকি এবার কেকের বাজি রাখল। কোথা থেকে ঠিক কানু এসে শালিককে উদ্ধার করল।

টিফিন আওয়ারে সবাই খেলছে। এমন সময় রকি বলল, “একটা প্রতিযোগিতা হয়ে যাক। যে সামনের ঝাউ গাছ ছুঁয়ে আমাকে ছুঁতে পারবে সে এই ক্রিম বিস্কুটের প্যাকেট পাবে।”

দশ বারোজন দাঁড়িয়ে পড়ে। কিন্তু কানুকে দেখা যাচ্ছে না। রকি ভাবল, না এ খেলা বাতিল করবে। এমন সময় কানু হাজির, এবং যথারীতি কানু বিস্কুট জিতে নিল।

ক্লাসের পড়া কানু চেষ্টা করবেই করবে। রকি সেই চেষ্টাটুকু হাঁ করে দেখে। স্যার রকিকে জিজ্ঞেস করেন। কানুকে করেন না। তবু কেউ না পারলে ভুল হোক ঠিক হোক কানু দাঁড়িয়ে বলবেই। স্যার বকা দেন।

এসবই লক্ষ্য করে বিলু। একদিন বিলু বলেই ফেলল, “তোর ব্যাগে এক্সট্রা কেক চকলেট থাকে কেন? আর প্রায়ই প্রতিযোগিতা করিস কেন?”

হাসে রকি, বলে, “যাতে কানু এসব পায়। বড্ড অভিমানী, দিলে নেবে না। আর দেখ না কোনদিনই ও টিফিন আনে না। খিদে পেটে চুপচাপ বসে থাকে।”

বিলু তার বেস্ট ফ্রেন্ড রকিকে দেখে, কানুকেও।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
wpDiscuz
0
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
Exit mobile version