Home Literature Poetry চা বাগানের দিনলিপি

চা বাগানের দিনলিপি

0
চা বাগানের দিনলিপি

#১ চা বাগানের দিনলিপি

ভাবলেই কিছু আদিম ছায়া ভাসে

অকৃএিম বনজ সোঁদা বাসে-

মন ভার করে আসে।

উষ্ণ পেয়ালায়, রক্তিম ঠোঁটে

বিলাতি মৌতাতে

মজেছিলো-

মুষ্টিমেয়ের শাসনে

এক অবিরল নিষ্পেষন।

সুহাসিনির ডহরে

সাহেবের জুতাছাপ পিঠে এঁকে

লখুয়ার অনাবিল দন্ত প্রকাশন।

বিগত অতীতে

এক শ্রেনীসংগ্রামের জনক

নিদারুন এক হাভাগা কুটিরে

কোটরাগত উজ্জ্বল চাহনিতে

সর্বহারার সবপেয়েছির কোনো এক রাজ্যের

সন্ধানে আত্মমগ্নতায় আসীন।

আর সর্বদলীয় নেত্রবৃন্দ

শ্রেণী- জাতি- দেশ ভুলে

স্ববিকাশে আহ্লাদিত।

উন্মাদ সেই আদিম যুগ

কেবলই আফ্রিকাব্যপী ছিলো না-

জানি আজও আছে আষ্টেপিষ্টে।

অজগরে জরিয়ে মরিয়ে

লেপ্টে রয়েছে-

আমাদের চাবাগানগুলিকে।

 

****

#২ সব ভালোবাসি আজ

সব ভালোবাসি আমি আজ

হোক না সে চাচার মিস্টিপানের ঘ্রাণ,

নতুবা দুদন্ড বসেই কথা

শতব্যস্ততায়!

আজ চাই না যে

প্রেয়সীর নম্রতা,

বরং বন্ধুর পথে

পড়ুক তাতে তরবারির শান।

 

সব যে ভালোবাসি আজ-

কালো কেলো গরিবগুর্বোর সঙ্গ,

চাই না যে তাতে আজ কোনো

বিলিতি অভিমান।

সবই ভালোবাসি আজ-

পোস্টারে পোস্টারে সাঁটা অমলিন

দেওয়াল,

কিংবা অধিকারের কথা

ভীষন দলন, খুবই নিপীড়ন

দুঃসহ লড়াই-

বা নবজাগরণের স্বভিমান!

 

সব ভালোবাসি আমি আজ

অপটু, নিপটু পথে মনুর উত্তর পুরুষের

অক্লান্ত অভিযান।

নাই বা রইলো তাতে সুমহান কারিগরী অভিঞ্জান?

নবীনে হাত রেখেছে প্রবীন-

শঙ্কা কিসের আর আজ?

সহশ্রাব্দপ্রাচীন অচলায়তন হবেই-

ভেঙ্গে খান খান্!

***

#৩ নবজন্ম

ঢেউগুলি ভেসে আসে-

ঢেউগুলি ভেসে যায়।

ক্ষণিকেই মিলে যায়-

বালুতটে দিনলিপি।

অলস চাহনিতে

আবছায়ার প্রশান্তি যেনো-

ভেসে থাকে অল্পসল্প

মন্ত্রমুগ্মময়।

উত্থালী পাত্থালী সুনামী

কদাচিৎ ঘটে বটে,

আছারি পিছারি করে ছুটে-

আদিম মৈথুণ শেষে

অন্তরীক্ষের আর মহাসাগরীয় ফেনায়।

বালুতটে ছেটানো উচ্ছিটে-

তখন ধুকপুক করে ওঠে প্রাণ।

উচ্ছিট কেন হে?

এযে এক নবনবীন গান-

নবজন্মের সাদর আহ্বান।

নতুন ভাবে বাঁচতে-

পূর্ণজনম্ যে চাই।

নিজেকে নতুন করে চিনতে

আর জানতে

পুরানোর ধ্বংস দেখি তাই।

***

#৪ কেন এমন হয়?

কেন এমন হয়?

না চাইলেও

হঠাৎ জ্বলে ওঠে আগুন।

তবে জ্ঞানীজনে বলে

সর্তক থাকলে-

আগুনে নাকি ঝলসায় না।

কি জানি?

কখনো এমনই হয়

পরীক্ষাপত্রে জিজ্ঞাসায়

অবয়বহীন পাঠ্য়ক্রম থেকে।

কখনো এমন কেন হয়?

অগ্নিদগ্ধ হতে হতে

বোধী স্থির-

পঙ্কিলতা হইতে বৌধিক উত্থান।

কিছুটা প্রচেষ্টা, কিছুটা আর্শীবাদ

এই হয়তো জীবন।

আর আমি অভাগা

শর্বরিতে আছি

বোধীহীন রূপে।

***

#৫ হিমেল

এসেছে শীতের পবন

ঝরেছে পাতা

ঐ খোলা তুষারদ্বারে

তোমারি পথ চাওয়া।

নব শীর্তাত আহ্লাদে

রঙ বেরঙ্গের পোষাকী ওমে

উষ্ণ থাক সবাই।

আমি উদ্বেগে থাকি

ঝরা পাতার প্রশ্বাসে

আকুতিতে বুকে ভারে

বাকিটুকু সুবাতাস।

~ চা বাগানের দিনলিপি ~

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
wpDiscuz
0
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
Exit mobile version