সেবার গেছিলাম দেওঘর বেড়াতে। দেওঘর এর যা যা দর্শনীয় সবই দেখলাম। এবং অবশ্যই বৈদ্যনাথ ধাম। কিন্তু একটি জায়গা তে না গেলে দেওঘর দেখা অসম্পুর্ণ থেকে যেত। সেটা হল ধূম্র ধুসর বিরাট ত্রিকূট পাহাড়। হিমালয় এর কাছে এর গড় উচ্চতা কিছুই নয়। কিন্তু বিরাট বলছি এই কারণেই যে জখন পাহাড়ের সামনে দাঁড়ালাম, তখন নিজেকে কত ক্ষুদ্র মনে হল। অবশ্য ২৫০০ ফুট কম নয়। দেওঘর শহর ছেড়ে দুমকা রোড ধরে কিছুটা যাওয়ার পরই দুর প্রান্তরে কালো ত্রিকূট পাহাড় চোখে পড়ল। দেখে মনে হল কোনও প্রাচীন বৃদ্ধ ঋষি দীর্ঘকাল ধরে তাঁর ধুনির আগুন আগলে বসে আছেন। আর তাঁর ওপারেই যেন অচেনা রাজ্য।
ত্রিকূট দর্শন (প্রথম পর্ব)

দুমকা রোড ছেড়ে রাস্তা বাঁ দিকে ঘুরে গেলো। সেই রাস্তা একদম পাহাড়ের সানুদেশ অবধি পৌঁছেছে। তারপরেই সেই রাস্তার গতি রোধ করেছে জঙ্গলে ঢাকা ত্রিকূট পাহাড়। ডানদিকে একটি সিঁড়ী উঠে গেছে কিছুটা, তারপরেই একটি সমতল জায়গা। সেখানে বাবা ত্রিকূটেশ্বর এর মন্দির। আশ্চর্য্য পরিবেশ। শান্ত প্রাচীন সব গাছপালা আগলে রয়েছে চাতাল টাকে। সেখানে দুর্গা মন্দির, গণেশ মন্দির ও আছে। বাবা ত্রিকূটেশ্বর এর মন্দির এর পাশে একটি নল দিয়ে অণর্গল স্বচ্ছ জল নির্গত হয়ে চলেছে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে। সেই রকম সুস্বাদু জল খাইনি আগে। সেই সঙ্গে উপকারিও বটে। ঝাড়খণ্ডের জল-হাওয়া নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। সেই জল  পাহাড়ের কোথা থেকে আসছে কে জানে? এই পাহাড় থেকেই কিন্তু ময়ূরাক্ষীর উৎপত্তি।
ত্রিকূট দর্শন (প্রথম পর্ব)

আমরা পাহাড়ের কাছে আসতেই একজন গাইড এগিয়ে এলেন। ভদ্রলোক পরিচয় দিলেন লোকনাথ গাইড নামে। ঝাড়খণ্ডের ত্রিকূটের পাদদেশে স্থানীয় গ্রাম্য লোকের মুখে ঝরঝরে বাংলা শুনে অবাক হলাম। অবশ্য এইসবই বাঙ্গালি পর্যটক দের সৌজন্যে। তার দাবী বেশি না, মাত্র ১০০ টাকা। লোকনাথ গাইড আমাদের ত্রিকূট দর্শনের জন্য নিযুক্ত হয়ে গেলেন।

 

… to be continued

~ ত্রিকূট দর্শন (প্রথম পর্ব) ~

Print Friendly, PDF & Email
Previous articleshoishob
Next articleটাকার ভাঙানি
Debkumar Roy
আমি শ্রী দেবকুমার রায়। নিবাস- মানকুন্ডু, হুগলী, আদি নিবাস- বোড়াগোড়ী, বৈচি, হুগলী। আমি বর্তমানে optometry-এর ছাত্র। বই পড়া ও লেখা টা আমার শখ। প্রিয় লেখক হলেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু মুখ্যোপাধ্যায় প্রমুখ লেখকের সৃষ্টি ভালো লাগে। সময় পেলেই নিজের মনের কথা লেখার খাতা তে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি। সেই ফুটিয়ে তোলা লেখা কত টা সার্থক সেটা আপনাদের বিচার্য্য।
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments