আজ অরো সকাল থেকে খুব ব্যস্ত। রূপ আজ কতদিন পরে দেশে ফিরবে। সেটা ভেবে অরোর খুব আনন্দ হচ্ছে, তাই সে সব আয়োজন নিজেই করছে। মিনুদি থাকলে মিনুদিই করত। কিন্তু তা তো আর হওয়ার নয়। তাই অরো নিজে হাতেই সব করছে।

***

অরো অথবা অরিজিৎ এই রায়বাড়ির সঙ্গে খুবই অদ্ভুত ভাবে জড়িয়ে আছে। এই বাড়ির কর্তা তার গিন্নির মৃত্যুর পর কাশী ও বেনারস বেরাতে যান। সেই সময় তিনি মুগ্ধ হন এক নারীর অপরূপ কণ্ঠস্বরে। সেই মুগ্ধতা সম্পর্কে পরিণত হয়। কিন্তু এই নারী তথাকথিত ভদ্রসমাজে বিরাজমান ছিলেন না, তাই রায় বাড়ির কর্তা তাকে কলকাতা নিয়ে আসতে পারেন নি।  চন্দননগরে বাড়ী ভাড়া করে রেখেছিলেন তাকে। না, একটু ভুল হল বাড়ী ভাড়া থেকে শুরু করে নিজের খাওয়া দাওয়ার সব দায়িত্ব এই মহিলা নিজেই নেন। এই মহিলার জন্য রায়বাড়ির কর্তাকে একটি পয়সাও খরচ করতে হয়ে নি। উল্টে কর্তা-বাবুর বড় ছেলের ব্যবসার জন্য তিনি তাঁকে টাকা দিয়ে সাহায্যও করেন এই মহিলা। কিন্তু এই মহিলা চন্দননগরে বেশী সুখের দিন কাটাতে পারেন নি। খুব শীঘ্রই তার মৃত্যু ঘটে।

অরিজিৎ এই মহিলা আর কর্তা-বাবুরই সন্তান। তার মার মৃত্যুর পর বাবা তাকে অনাথা আশ্রমে রাখতে পারে নি। কিন্তু কলকাতার বাড়ীতে অরিজিৎ কে মিনুদি ছাড়া কেউই ভালভাবে গ্রহণ করে নি। মিনুদি বা মৃণাল এই বাড়ীর কর্তা মশায়ের ছোট ছেলের বউ। না ভুল হল কর্তা মশায়ে ছোট ছেলে তো অরিজিৎ বা অরো। কিন্তু এই ভুলটা এই বাড়ীর লোকেরা ইচ্ছে করেই যেন করে। বিশেষ করে বাড়ী বড় ছেলে, ছেলের বউ এবং তাদের সন্তান, বাপ্পা ও চিনি।

মৃণালের স্বামী, সুবিমল, একটা সময় বেশ ভাল চাকরি করত। কিন্তু চিরকালই সে তার বড় দাদা সুব্রতর উপর বেশীই নির্ভর করে, তাই মৃণাল কে সে পুরোপুরি সুখী কোন দিনই করতে পারে নি। যখন সে চাকরি করত তার পুরো মাইনেটা দিয়ে দিত দাদা-বৌদি কে, বউ পেত ছিটেফোঁটা। অনেক সময় তাও নয়, দাদা-বৌদির অন্যায় আবদার ও মেনে নিত। অনেক সময় বুঝত তার মিনুর সঙ্গে দাদা-বৌদি ঠিক ব্যবহার করে না, কিন্তু তাও কিছু বলত না। কারণ সে জানত যে সে কখনই দাদা-বৌদির বিরুদ্ধে যেতে পারবে না। মৃণাল কখনও যদিও বা জানতে চাইত তার এই রকম ব্যবহারের কারণ কি সুবিমল উত্তর দিত, “দাদার চাকরিটা নেই জানই তো, এখন যদি আমরা দাদার পাশে না থাকি, কে থাকবে বল তো?”

দাদার চাকরি যায় অবশ্য কোম্পানি থেকে লুকিয়ে টাকা সরানোর জন্য। সেই কাজের জন্য অবশ্য তিনি কোনদিনই অনুতপ্ত নয়, ছিলেনও না। অফিসের লোকেরা ভাল ছিল বলে, পুলিসে আর বলে নি ব্যপারটা, কিন্তু চাকরিটা খোয়া গিয়েছিল। তারপর বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে একটা ব্যবসা করার চেষ্টা করেছে তাতেও অবশ্য খুব বেশী সাফল্য এসেছে তা বলা যায় না। ছেলে ও মেয়েও খুবই সাধারণ, ছেলে বাপ্পা, দুবারের চেষ্টায় উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর আর পড়াশোনা করে নি। ঠাকুরদার থেকে টাকা নিয়ে একটা রোলের দোকান খোলে, ব্যবসা মোটামুটি চলে, খুব ভাল বলা চলে না। বাবার মুদিখানার দোকানটা এখন দেখে বউ কুমুদিনী, চুপচাপ এবং খুব কাজের মেয়ে কুমুদিনী। পড়াশোনায়ও খুব ভাল ছিল, কিন্তু তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে যাওয়ায় পড়াশোনাটা পুরো করতে পারে নি কুমুদিনী। লোকেরা ভাবে বাপ্পার মত ছেলে কি করে কুমুর মত একটা বউ পেল। আর কুমু ভাবে, মেয়েটা যদি আর একটু পরে আসত তাহলে সে এই সম্পর্কটা কে শেষ করে দিতে পারত।

বাপ্পার বোন চিনি চিরটাকাল নিজেরটুকু নিয়েই খুশী থাকতে ভালবাসে। পড়াশোনায় কোনদিনই সে খুব মেধাবি ছিল না। Honors টা পাশ করেছিল ভাল পাত্র পাওয়ার আসায়। পেয়েওছিল সে, খুব ধুমধাম করে বিয়ে হয়েছিল তার, কত লোক, বাজনা, গয়না, শাড়ী কিছু বাদ যায় নি। কে দেখে বলবে যে এই রায়বাড়ীর বড় ছেলে চাকরি খুয়িয়ে টিমটিম করে চলতে থাকা মুদিখানার উপর নির্ভরশীল, আর ছোট ছেলের factory প্রায় ৭ বছর হল লক আউট। পরের প্রজন্মের মধ্যে এক ছেলে, চালায় রোলের দোকান, তাও সে ব্যবসা পড়তির দিকে, মেয়ে কোন চাকরি করে না, এবং আর একজন তখনো পড়ছে।

অরূপ বা রূপ, সুবিমল আর মৃণালের একমাত্র সন্তান। এই বাড়ীতে অরোর একমাত্র বন্ধু। অরোর থেকে মোটে দু বছরের ছোট রূপ, কিন্তু দু জনের মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। অরো নিজের অধিকারের জন্য লড়তে পারে, নিজের অধিকার ছিনিয়ে নিতে পারে, জোড় গলায় নিজের কথা বলতে পারে, কিন্তু রূপ এইসব কিছুই পারে না। কিন্তু মিনু কোনদিনই দু জনের মধ্যে কোন তফাৎ করে নি। তাও রূপ আর অরো এতটা আলাদা। তাই বোধহয় দু জনের মধ্যে টানটা এত বেশী। রূপের বাবার factory টা বন্ধ হওয়ার পর থেকে রূপ যেন আরও বেশী চুপচাপ হয়ে গেল। বাবার মানসিক অবস্থার অবনতি হতে লাগল, factory লক আউট হওয়ার পর থেকে। আর এই ব্যপারটার জন্য রূপ নিজেকে আরও বেশী গুটিয়ে নিল।

***

রূপ তখন B.Com করছে, 2nd year-এর ছাত্র, আর চিনি তখন প্রথম বর্ষে বাংলা নিয়ে পড়ছে। সেই সময়, থেকে চিনির জন্য পাত্র দেখা শুরু করে দিয়েছিল তার মা-বাবা। কিন্তু শুধু পাত্র দেখলে তো আর হবে না, বিয়ের জন্য তৈরীও তো থাকতে হবে। পুরো পরিবার যখন এই বিষয়ে চিন্তিত তখনই হঠাৎ করে খবরটা আসে। এক মাড়োয়াড়ি পরিবারে এক বৃদ্ধ কে দেখার জন্য সব সময়ের লোক চাই। তবে কাজটা কলকাতা শহরে বসে করা যাবে না, করতে হবে, দুবাই গিয়ে। প্রত্যেক মাসে পাবে AED 3000, ভারতীয় মূদ্রায় প্রায় ৫২,৬৬৯.৮৯-এর কাছাকাছি, সঙ্গে থাকা, খাওয়া। এটা ঠিক যে দুবায়ের মতো জায়গায়, এই রকম দেখাশোনা করার লোক বা care giver –এর অভাব নেই, এবং তারা বেশীর ভাগই প্রশিক্ষিত।

কিন্তু এই প্রশিক্ষিত লোকেদের নেওয়ার কিছু সমস্যা আছে। প্রথমত, এদের মাইনের দেওয়ার একটা নিয়ম আছে। Care giver-দের মাইনের অনেকটাই নির্ভর করে তারা কোথায় কাজ করছে। যদি তারা শহর অঞ্চলে কাজ করে তাহলে তাদের দিতে হবে, ধরা যাক AED ৭০০০, গ্রাম অঞ্চলে, ৩০০০, আর আধা-শহর অঞ্চল হলে ধরা যাক ৫০০০। তার উপর তাদের কোনভাবে অসম্মান করা হলে, মারা হলে বা অভাব্য আচরণ করা হলে, তারা পুলিস বা আদালতেরও সাহায্য নিতে পারে। সেই জন্য অনেকেই প্রশিক্ষিত লোকেদের চায় না। অপ্রশিক্ষিত হলে এই সবের বালাই নেই, তারপর যদি একবার passport রেখে দেওয়া যায় তাহলে তো কথাই নেই। এই মাড়োয়াড়ি পরিবারও তাই কোন প্রশিক্ষিত লোক চায় নি।

সুব্রত যখন প্রথম কথাটা শোনে তার মনে হয় রূপের কথা। তার বাবার ফ্যাক্টরিটা অনেক কাল হল বন্ধ, তাই সে বাড়ীতে খুব একটা কিছু দিতেই পারে না। হ্যা তার মা, মিনু, একটা ছোট ব্যবসা চালায় ঠিকই কিন্তু তাতে তো আর মাসে মাসে প্রায় ৫০,০০০-এর মতো আসে না। সুব্রত ঠিক করে নিল, যে করেই হোক রূপকে রাজী করা তে হবে। মিনু কোন উপায় না দেখে, ছুটে যায় তার শ্বশুরের কাছে, কিন্তু তিনি উত্তর দেন, “দেখো মা, ছোটনের চাকরিটা নেই, তোমার ব্যবসাও সবে শুরু হয়েছে, এখনো তেমন ভাবে দাঁড়ায় নি সেটা। এখন যদি রূপ না দ্বায়িত্ব নেয় তাহলে কবে নেবে বল? বাপ্পা দেখ ঠিক কিন্তু একটা ছোট মত দোকান করে নিজেকে দাড় করানোর চেষ্টা করছে। মানছি মদের একটা বাজে নেশা আছে, কিন্তু তাও, সে তো একটা কাজ করছে, চেষ্টা করছে, এইটা বা কম কিসের। রূপ কেও এখন থেকে একটু একটু করে দ্বায়িত্ব নিতে হবে”।

মিনু আর কিছু বলল না, সে বুঝল কথা বলে কিছু আর হবে না। অরো যেন বিশ্বাসই করতে পারছিল না, রূপ এই রকম ভাবে সবাই কে ছেড়ে চলে যাবে। সেই রাতে রূপ আর অরো অনেকক্ষন ছাদে বসে ছিল। সবাই ভাবে যাদের কিছু হওয়ার নয় তারা B. Com পরে কিন্তু অরো জানে যে রূপ পড়াশোনায় সত্যিই ভাল, সব চেয়ে বড় কথা সে পড়তে চায়, পড়াশোনা ভালবাসে, তাকে যে এই ভাবে সেটা ছেড়ে দিতে হবে, সেটা অরো ভাবে নি। পুরো দুনিয়াটার উপর অরোর ঘেন্না ধরে গেছে। রূপ কে সে কথা বলাতে সে শুধু হেসেছিল। তারপর বলেছিল, “কেন রে এই দুনিয়াতে মা আর তোর মতন লোকেরাও তো আছে”।

***

চিনির বিয়ে ঠিক হয়েছিল এক NRI পাত্রের সঙ্গে। পাকা দেখার দিন সব রান্না-বান্না মিনু করেছিল, কারণ তার বড় যায়ের বাতের রোগ বেশীক্ষন এক ভাবে বসে বা দাড়িয়ে কাজ করতে পারে না। মিনুর দোকান সেই দিন, অরো সামলেছিল।

মিনুর একটা ছোট বইয়ের দোকান ছিল। রূপ যখন স্কুলে পড়ত তখন মিনু দেখেছিল যে বইয়ের দোকান থেকে অযাচিত ভাবে কিছু জিনিস দিয়ে দেয়, যেমন, ড্রয়িং খাতা, hard bound খাতা, scrap book এই রকম আরও অনেক কিছু। এই সবের কিছুই দরকার পড়ত না, তাও কিনতে হত। স্কুল গুলোর সঙ্গে এই সব দোকানের একটা contract থাকে, তাই স্কুলও কিছু অযাচিত বই কেনার জন্য ছেলে-মেয়েদের উপর চাপ দিত, যে গুলো শুধু মাত্র সেই সব দোকানেই পাওয়া যেত। কিন্তু বইয়ের দোকানে গিয়ে কেউ একটা বই কিনতে পারত না, পুরো সেট কিনতে হত। এই ব্যপারটা মিনুকে বেশ ভাবিয়ে ছিল, তাই সে সব স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে, তাদের পুরনো বই গুলো একটু কম দামে কিনে সে গুলো বিক্রি করে, এই চিরকাল ধরে চলে আসা এই ব্যবস্থাটার উলটো পথে হাটার চেষ্টা করে। প্রথম কয়েক বছর খুব একটা লাভের মুখ দেখে নি, কিন্তু আসতে আসতে তার ও অরোর চেষ্টায় দোকানটা দাড়িয়েছিল।

পাকা দেখার দিন মিনু অনেক রান্না করেছিল, ইলিশ ভাপা সরষে দিয়ে, চিংরি মাছ বাটা, তেল কই, পাঠার মাংস, শুক্তো, মৌরলা মাছের টক, পায়েস, আর দেরাদুন চালের ভাত। সব ঠিক ছিল, হঠাৎ চিনি এসে একটা অদ্ভূত আবদার করল। সকাল থেকে সে সাজগোজ নিয়েই ব্যস্ত ছিল, ছোট কাকীর দিকে খুব একটা খেয়াল তার ছিল না তার। হঠাৎ করে তার রান্নাঘরে আগমন দেখে মিনুও চমকে ছিল। চিনি এসে আবদারের সুরে বলল, “ও ছোট কাকী, তুমি আজকে তোমার special হলদে পোলাও টা কর না? ঐ যেটা তুমি কর গো, কাজু-কিসমিস আর মটরশুটি দিয়ে। দারুন লাগে গো খেতে”। মিনু কিছুক্ষন তাকিয়ে রইল চিনির দিকে, তারপর বলল, “বেশ ঠিক আছে”। আজ আর সে অবাক হয় না, শুধু আঘাত পায়, কখনও কখনও তাও পায় না।

অরোর দোকান থেকে ফিরতে একটু দেরী হয়ে গিয়েছিল, অতক্ষন আর কেউ অপেক্ষা করে নি তার জন্য। সবাই খেয়ে নিয়েছিল। অরোর কাছে এইসব নতুন কিছু নয়, সে এর চেয়ে ঢের বেশী অপমান ও অসম্মান সহ্য করেছে। তাই এই সব এখন আর গায়ে লাগে না। মিনুদি না থাকলে সে এতদিন এই বাড়ীতে থাকত না, কোন একটা কাজ খুজে ঠিক বেরিয়ে পরত। কিন্তু এখন সে এখানে থাকে তার একমাত্র কারণ এই বাড়ীতে মিনুদির আপন বলতে আর কেউ নেই। সুবিমলদা ফ্যাক্টরিটা বন্ধ হওয়া, রোজ ঘড়ি ধরে অফিস যাওয়া, পুজোয় বোনাস পাওয়া, অফিসের পিকনিক, অনুষ্ঠান, কাজ এই সব ছেড়ে দিতে পারে নি। তার ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে গেছে, কিন্তু তিনি একটা জায়গায় থেমে আছেন। মাঝে মাঝে পাগলামিটা বাড়াবাড়ি রকমের হয়ে যায় তখন সামলানো যায় না তাকে। তাই মিনুদি এত লোকের মাঝে থেকেও একা।

সে দিন বাড়ী ফিরে দেখল, মিনুদি নীচে খাওয়ার জায়গায় নেই। সে একটু অবাক হল, এমনটা তো হওয়ার কথা নয়। তাহলে? সে কি ভেবে উপরে গেল, দেখল মিনুদি নিজের খাটে শুয়ে আছে। কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে না যে সে ঘুমচ্ছে। অরো কি ভেবে তার পাশে গিয়ে বসল। এক হাত দিয়ে চোখ ঢাকা ছিল তার, চুল গুলো সব খোলা, রুক্ষ হয়ে আছে, দেখে বোঝা যায় যে অনেকদিন কোন যত্ন নেওয়া হয় নি। অরো মিনুদির হাতে হাত রাখল, সঙ্গে সঙ্গে সে চোখ থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে বলল, “কি রে কখন এলি?” অরো বলল, “এই তো এক্ষুনি”, মিনু বিছানা থেকে উঠতে উঠতে বলল, “দাড়া আমি তোর খাওয়ারটা বাড়ছি। খুব খিদে পেয়েছে না? তুই হাত-মুখ ধুয়ে আয়”।

অরো মিনুকে বিছানা থেকে নামতে দিল না, তার হাত চেপে ধরে জিজ্ঞেস করল, “কি হয়েছে গো তোমার, এমনি করে শুয়ে আছ কেন? আমায় বলবে না মিনুদি, রূপ ফোন করেছিল বুঝি? কি হয়েছে বল না? ওখানে সব ঠিক আছে তো? ওর কিছু হয় নি তো? বল না মিনুদি কি হয়েছে? আমার যে বড্ড ভয় করছে গো?” মিনু তার হাতটা অরোর মুখে বুলিয়ে বলল, “আজ জানিস চিনি বলল আমাকে ওর নাকি আমাত হাতের হলদে পোলাও খেতে খুব ভাল, দারুন লাগে। আবদার করল, আমি যেন করি, বাপ্পা বোধয় জানতই ‘না’ বলার মুরোদ আমাদের নেই তাই আগে থেকেই কাজু, কিসমিস, মটরশুটি, জাফরান, ঘি সব এনে রেখেছিল।

আমি সব দিয়ে যত্ন করে রেধেছি, কেউ খেয়ে অবশ্য কিছু বলে নি। তুই খাবি তো অরো?” শেষ কথা গুলো বলতে গিয়ে তার গলা বুজে এল, সে ফুপিয়ে কেঁদে উঠল, “হ্যা রে এদের একবারও মনে হল না, রূপ এই পোলাওটা খেতে কত ভালবাসত। প্রতেয়কবার যখন এই পোলাওটা করতাম কি খুশিই না হত। বার বার বলত, ‘মা তুমি না সত্যিই গ্রেট। এই স্বাদ আমি দোকানেও পাই না”।

অরোর মনে পড়ল সেই কথা। সত্যিই রূপ এই পোলাওটা খুব ভালবাসত, তার সব চেয়ে ভাল লাগত হলুদ পোলাওয়ের উপর সবুজ মটরশুটির ছড়িয়ে থাকা দেখতে। যে মিনুদি পোলাওটা করত সেই দিন রূপ সব খাওয়ার কম করে খেত, যাতে অনেকটা পোলাও খেতে পারে। এই নিয়ে কত ক্ষেপাত অরো তাকে। আচ্ছা এই পদটা কি না করলেই হচ্ছিল না, আর সবই তো হয়েছিল, এটা না হয় নাই হত। কি ক্ষতি হত। অরো দেখল, মিনুদি তখনও কথা বলে যাচ্ছে, “প্রথম প্রথম যখন ছেলেটা ফোন করত, আমাকে বলত, “মা আমি ঠিক আছি, কিন্তু তোমার রান্না খুব মিস করি। এদের রান্না ভাল তবে একটু ঝাল এই যা”, বুঝতাম অভিযোগ করাটা ওর স্বভাবে নেই বলে বলতে পারছে না, যে ঝাল রান্না খেতে ওর কষ্ট হচ্ছে। আমার ছেলেটা যে খেতে ভালবাসত অরো, খুব খেতে ভালবাসত। ভেবেছিলাম আর যে কষ্টই পাক, ছেলে কে আমি খাওয়ার কষ্ট দেব না”, এই বলে মিনুদি অরোকে জড়িয়ে ডুকরে কেঁদে উঠল।

অরো বুঝতে পারল তারও চোখ কটকট করা শুরু করে দিয়েছে। হয়ত আর কিছুক্ষন পর বৃষ্টি শুরু হবে। মিনুদি তখনো কথা বলে যাচ্ছে, “আজ সকাল থেকে আমি সব নিজে হাতে জোগাড় করে রান্না করেছি। কিন্তু একটা দলাও খেতে পারি নি, সব কটা দলা মনে হচ্ছিল যেন এক একটা পাথর, গলা দিয়ে নামতেই চাইছে না”।

চিনির বিয়েতে রূপ আসতে পারে নি, কিন্তু বিয়ের জন্য খরচবাবদ টাকা পাঠিয়ে দিয়েছিল। বাড়ীর লোকে আসার জন্য জোরও করে নি। তারা ভয়ে পেয়েছিল, আসলে পরে যদি কাজটা চলে যায়। কিন্তু চিনির বিয়ের গয়না, শাড়ী, বরে আংটি, furniture, এবং বিয়ের হল ঘরের ভাড়া সব রূপের পাঠানো টাকা দিয়ে হয়েছিল। বিয়েতে মিনুদি ছিল, সব করেছিল, চুপচাপ ভাবে। অষ্টমঙ্গলার পরের দিন, চিনিরা চলে গিয়েছে তখন, রাতে খেয়েদেয়ে অরো মিনুদির সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল, এই কয়দিন মিনুদিকে একা ছাড়ে নি সে, বার বার তার মনে হচ্ছিল কোথাও যেন কি একটা ঠিক নেই। মিনুদি যেন সব কিছু জোর করে করছে। তাই রোজ রাতে শোওয়ার আগে একবার দেখে যেত সে মিনুদিকে। সেই দিন ঘরে ঢুকে দেখল মিনুদির নিথর দেহটা বিছানায় পরে রয়েছে।

***

আজ সাত বছর পর রূপ দেশে ফিরছে। এই সাত বছরে অনেক কিছু বদলে গেছে এই বাড়ীতে। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় বদলটা হল এখন এই বাড়ীর কর্তা অরিজিৎ রায়। এক সময় যে কি না এই বাড়ীর “Bastard child” ছিল, সে এখন, এই বাড়ীর কর্তা। অবশ্য এটা না হলে এই রায় পরিবার ভেসে যেত। মিনুদির মৃত্যুর কয়েক মাস পর অরোর বাবাও মারা যায়। নেহাতই স্বাভাবিক মৃত্যু যদিও, তবুও এই মৃত্যুটা এক বড় ধাক্কা হয়ে আসে রায় বাড়ীর সবার জীবনে। এরপর সুব্রতর দোকানটাও প্রায় যেতে বসেছিল। সুব্রত কোনদিনই খুব ভাল ব্যবহার করত না খদ্দেরদের সঙ্গে, তার উপর নিম্ন মানের জিনিস পাওয়া যেত তার দোকানে, লোকজন জিনিস নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল, দেনার দায়ে প্রায় সব কিছু যেতে বসেছিল তার, সেই সময় অরো ব্যঙ্ক থেকে ঋণ নেয় কিছু টাকা। সেই টাকা দিয়ে সুব্রতর দোকানটা কিনে নিয়ে সুব্রতকে ঋণের দায়ে থেকে মুক্ত করে।

তারপর সেই দোকানের ভার দেয় সুব্রতর বউমা, বাপ্পার বউ, কুমুকে। অরো জানে কুমু স্বভাবে খুব মিষ্টি এবং খাটতেও পারে সে। তাই দোকানটা দাড় করানো তার পক্ষে সহজ, মাঝে মাঝে অরোও সাহায্য করত তাকে। সুবিমলদার অবস্থার অবনতি হওয়াতে প্রথমে একটা হোমে রাখার কথা ভেবেছিল অরো, কিন্তু তারপর সেখানকার অবস্থা দেখে সে আর সাহস করে নি। বাড়ীতেই রেখেছে তার সুবিমলদাকে, একজন আয়া আছে, তবে তাকে অরো পুরোপুরি বিশ্বাস করে না, তাই ঔষুধ দেওয়া আর খাওয়ানোর দ্বায়িত্ব সে নিয়েছে। ঔষুধ দেওয়ার সময় সব সময় না থাকতে পারলেও সে চেষ্টা করে বেশীর ভাগ সময় থাকার। মাঝে মাঝে অরোর খুব হাসি পায় ইংরেজীতে স্নাতকত্তর করে সে কি করছে? কিন্তু তার আবার ভালও লাগে, কারণ সে কারো গোলামী করছে না। আর সবচেয়ে ভাল লাগে, এইটা ভেবে যে সে মিনুদির দোকান, তার স্বপ্ন সব বাচিয়ে রাখতে পেরেছে।

রূপের আসাটা হঠাৎ-ই ঠিক হল। যে ভদ্রলোককে দেখাশোনার জন্য রূপ দুবাই গিয়েছিল, তার হঠাৎ-ই মৃত্যু হয়। তারপর তার পরিবারও ঠিক করে যে তারা দিল্লি ফেরত চলে আসবে। তখনই রূপেরও দেশে ফেরা ঠিক হয়, এবং তারাও ঠিক করে যে তারা রূপকে এবার একেবারের মত ছুটি দেবে। রূপের বাড়ীতে ফেরার সেই রকমের কোন টান ছিল না, অরো ছাড়া। ও শুধু অরোর জন্য ফিরতে চাইছিল একবার তার কলকাতার বাড়ীটাতে, হয়ত বা বাবার জন্যও, কে জানে।

রূপের ফ্লাইট ছিল রাতের বেলায়, অরো দোকান বন্ধ রেখেছিল সেইদিন, বাপ্পা কে দিয়ে বাজার করিয়েছিল, তারপর নিজের হাতে সব রান্না করেছিল, কাউ কে হাত দিতে দেয় নি। কুমু একবার বলেছিল যে সাহায্য করবে, কিন্তু অরো করতে দেয় নি। তবে রান্না সে সবার জন্যই করেছিল, শুধু রূপের জন্য নয়, তবে রূপের পছন্দের সব খাওয়ার ছিল। রূপের পছন্দের খাওয়ার খুবই সাদামাটা, মুসুর ডাল, পাবদা মাছ, মুরগির ঝোল, আর অনেক গুলো মটরশুটি আর কাজু-কিসমিস দিয়ে হলুদ পোলাও। পোলাওটা বানাতে গিয়ে বার বার মিনুদির বলা, চিনির পাকা দেখার দিনের কথা গুলো মনে পড়ছিল।

চোখ গুলো যেন আপনা থেকেই ভিজে এল, কিন্তু হঠাৎ তার চিন্তায় খেদ পড়ল, বড় বউদি, মানে সুব্রতদার স্ত্রীর, কমলিনীর আগমনে। এই মহিলার সঙ্গে অরোর খুব একটা কথা হয় না, কিন্তু যখন ইনি এসেছেন, তখন নিশ্চয় কোন ব্যপার আছে। অরো জিঞ্জেস করল, “কি হল বড় বউদি কিছু বলবে?” কমলিনী বলল, “চিনি ফোন করেছিল। বলছিল আজ আসবে এখানে”, চিনিরা তিন বছর হল দেশে ফি্রেছে। চিনির বর এখানে একটা restaurant-এর ব্যবসা শুরু করেছে, চিনিরও নিজের একটা বুটিক আছে। এই পাড়ায় চিনির অনেক খদ্দেরও আছে। তাই মাঝে মাঝে এখানে সে আসে, এটা নতুন কিছু নয়। তাই অরো বলল, “আসুক। আমি কি করব?” কমলিনী বলল, “ওরা বলছিল ওরা রাতের খাওয়ারটা এইখানে খাবে, তাই জিঞ্জেস করছিলাম, কোন অসুবিধা হবে না তো?”

অরো হেসে বলল, “কি চাই সত্যি করে বল তো? আমার অসুবিধা নিয়ে তোমরা কবে এত ভাবতে শুরু করলে?” কমলিনী কিন্তু কিন্তু করে বলেই ফেলল, “না মানে বাপ্পা বলছিল, যে ওরা আজ আসবে, তাই আমরা যদি রাতে ওদের একটু বিরিয়ানি খাওয়াতে পারি তাহলে ভাল হয়। তাই, মানে, একটু যদি টাকাটা দিতে খুব ভাল হত”। কমলিনী থামল, অরো বলল, “কেন গো তোমার ছেলে তো খুব ছোট বয়স থেকে বাড়ীর দ্বায়িত্ব নিয়েছে তার কাছে টাকা নেই”, কমলিনীর মৌনতা অরোকে বুঝিয়ে দিল, বাপ্পা আবার বাজে নেশায় টাকা উড়িয়েছে। মাথা গরম হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু ঠান্ডা করল, আজ রূপ আসছে, কিছু গন্ডগোল হতে দেবে না। তাই বলল, “এখন ব্যস্ত আছি পরে এসে নিয়ে যেও”। কমলিনী আর কিছু বলল না, বোঝা গেল, সে খুব একটা সন্তুষ্ট নয় অরোর ব্যবহারে। যাই হোক অরোর কিছু করার নেই অনেক দিন হল সে লোকেদের খুশি করা বন্ধ করে দিয়েছে।

দুপুরে পোলাওটা বাদ দিয়ে বাকি সব খাওয়ারই সবাইকে দিল। পোলাওটা অরো রেখে দিয়েছিল, রাতে গরম করে রূপকে দেবে বলে। কুমু একটা খুব ভাল air tight Tiffin box দিয়েছে। পোলাওটা ওখানে রেখেছে, নষ্ট হবে না। সন্ধ্যেবেলায় অরো তাড়াতাড়ি বেড়িয়ে গেল, শুনতে পেল বড় বউদি তাকে ডাকছে, কিন্তু অরো দাড়াতে পাড়ল না, আজ দেরী করা যাবে না।

অনেকদিন পর আজ রূপ আর অরো মুখোমুখি, অনেক কথা দুজনেরই বলার আছে, কিন্তু কেউই কিছু বলতে পারছে না। রূপ আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারল না, জড়িয়ে ধরল অরোকে। অরোও তার রোজকার কঠিন মুখোশটা খুলে ফেলল, সেও জড়িয়ে ধরেছে রূপকে, দুজনের কেউই একে-অপরকে ছারতে পারছে না। কিন্তু হঠাৎ-ই দুজনে খেয়াল করল লোকে তাদের লক্ষ্য করছে, তাই অরো রূপ কে তাড়াতাড়ি গাড়িতে নিয়ে গিয়ে উঠল। গাড়ি মানে calling cab অরো মোবাইলে ডেকেছে।

যেতে অরো বলতে লাগল, “তোর পাঠানো সব টাকা তোর নামেই fixed করা আছে। খুব দরকার না পরলে তোর পাঠানো টাকা আমি খরচ করতাম না। আমি তোর কলেজেও কথা বলে রেখেছি, তুই আবার করে পড়াশোনা শুরু করবি, তোর যা মন চাই তাই করবি”, রূপ বড্ড ক্লান্ত ছিল, সে অরোর কাধে মাথা রেখে শুয়ে পড়েছিল, অরো রূপের চুলের মধ্যে বিলি কেটে বলল, “জানিস আজ না আমি রান্না করেছি। মিনুদির রান্নার খাতা দেখে তোর জন্য, হলুদ পোলাও করেছি”, রূপ হঠাৎ-ই উঠে বসল, তার চোখ-মুখে এক অন্যরকমের দিপ্তী। অরো বুঝল সে রূপ খুব খুশী হয়েছে।

বাড়ী ফিরে অরো দেখল, কুমু বাদে সবাই শুয়ে পড়েছে। অনেকদিন পরে কুমু রূপ কে খুব খুশী হল। এই বাড়ীতে তার প্রথম বন্ধু ছিল রূপ, তাই রূপ কে এতদিন পরে দেখে সে সত্যিই খুব খুশী। কিন্তু রূপ কে দেখেই কুমু বুঝল যে সে খুব ক্লান্ত, তাই বেশি কথা বলল না, শুধু বলল, “অনেক কথা জমে আছে রূপ আজ তাড়াতাড়ি খেয়ে দেয়ে শুয়ে পর কাল সব শুনব”। অরো বুঝল কুমুর কিছু একটা বলার আছে তাই সেও রূপ কে বলল, “হ্যা সেই ভাল তুই বরং হাত-মুখ ধুয়ে আয়, আমি খাওয়ার বাড়ছি”।

রূপ চলে যাওয়ার পর অরো বলল, “কিছু হয়েছে?” কুমু জিঞ্জেস করল, “আজ যে চিনি আসবে তুমি জানতে? তুমি বলেছিলে বিরিয়ানি কেনার টাকা দেবে?” ইস্‌! একদম ভুলে গেছে অরো, সেই জন্যই বোধহয় বড় বউদি ডাকছিল বেরনোর সময়। অরো একটু লজ্জা পেয়ে বলল, “ইস্‌ দেখো একদম ভুলে গিয়েছি। আচ্ছা ও তো থাকবে এখন ক’দিন, আমি কাল নিজে গিয়ে ওর জন্য বিরিয়ানি নিয়ে আসব, চিন্তা কর না”, কুমু হেসে বলল, “তার আর দরকার হবে বলে মনে হয় না। বিরিয়ানি নেই তো কি হয়েছে, air tight Tiffin box-এ পোলাও তো ছিল, মা সেটাই মেয়ে-জামাই কে সুন্দরভাবে পরিবেশন করে দিয়েছে।

আমি বার বার বলছিলাম, আমি বিরিয়ানি না হলেও একটু খানিক পোলাও করে দিতে পারব। কিন্তু উনি শুনলেন না আমার কথা। আচ্ছা তুমি তো মাসের প্রথমে অনেকটা টাকা হাতখরচা হিসেবে দাও, এও তাড়াতাড়ি শেষ হল কি ভাবে বল তো?………” কুমু অনেক কিছুই বলে যাচ্ছিল, কিন্তু অরো আর তখন, কিছুই শুনছে না। কুমু সেটা বুঝতে পেরে আর বেশি কথা বলল না, শুধু জিঞ্জেস করল, “রাতে বাপ্পা রুটি খায় জান তো, আটা মাখা আছে, কটা রুটি করে দি আর চিকেন আছে, তাই দি, কি বল?” অরো শুধু বলল, “হুম, তাই দাও। ক্ষিদেটা তো মিটবে তাতে”, কুমু ঘর থেকে বেরিয়ে গেল, অরো বুঝতে পারল তার মধ্যে আর কোন শক্তি বাকি নেই, অনেক কাজ করেছে সে, এখন সে বড্ড ক্লান্ত।

সে একটা চেয়ার টেনে নিয়ে বসল। হঠাৎ কাঁধে একটা হাত এসে পড়ল, অরো ঘুরে দেখল, রূপ, অরো বুঝল কিছু ভাবে হোক রূপ ব্যপারটা জানতে পেরেছে। হয়ত কুমু কে দেখে আন্দাজ করেছিল, এখন, হয়ত তাকে এইভাবে বসে থাকতে দেখে নিশ্চিত হল। অরো কি বলবে বুঝতে পারছিল না, শুধু বলল, “মিনুদি থাকলে এমনটা হত না রে”|

রূপ আর একটা চেয়ার এনে ওর সামনে বসে বলল, “মা তো ছিল, কই আমার দুবাই যাওয়া তো আটকাতে পারে নি। আমরা, মানে আমি, তুই, মা, কুমুদি, আমরা সবাই বড্ড বেশি ভাবি সকলের জন্য। তাই হেলা-ফেলার মাল হয়ে গিয়েছি রে আমরা। আমরা যতই দি কেন এই পরিবের কে এদের খুশী করা যাবে না, কিন্তু আমরা একটা ছোট্ট ভুল করলে, এদের সহ্য হবে না। কখনও কখনও এটা prestige issue-ও হয়ে যেতে পারে। আজ জ্যেঠিমা চাইলে কুমুদিকে দিয়ে একটু খানিক পোলাও বানিয়ে নিতে পারত, কিন্তু বানাল না, কেন জানিস? তুই যে টাকাটা দিবি বলে দিস নি তার একটা শাস্তি তো তোকে পেতে হবে, তাই। নে ছাড় আজ যা আছে তাই খেয়ে নি, আমার আর হলদে পোলাও খেয়ে কাজ নেই”।

 

~ হলদে পোলাও ~

Print Friendly, PDF & Email
Previous articleতাজপুরের বালুকাবেলায়
Next articleঅতিবাহিত
0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments